আওয়ামী লীগের কর্মী ছাড়া অন্য কাউকে উচ্চ ফলনশীল বীজ ও সার না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান ইউসুফ পাটোয়ারী। 

অভিযোগ উঠেছে দুই কৃষককে ‘বিএনপি-জামায়াত’ কর্মী আখ্যা দিয়ে প্রণোদনা প্রাপ্তির কার্ড রেখে দেন ওই চেয়ারম্যান। কৃষকরা হলেন একই উপজেলার হাজীরপাড়া ইউনিয়নের চর মোহাম্মদপুর গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে মনির হোসেন এবং আবু তাহেরের ছেলে আবু ছিদ্দিক। 

জানা গেছে, সদর উপজেলার ৬ হাজার ৫৯ জন কৃষককের মধ্যে আমন চাষে প্রণোদনা দিচ্ছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। প্রত্যেক কৃষককে প্রতি বিঘা জমির জন্য ৫ কেজি উচ্চ ফলনশীল আমন বীজ, ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার বিনামূল্যে প্রদান করা হবে। 

প্রণোদনা বিতরণের কার্যক্রম শনিবার দুপুর ১২টায় উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ-সদস্য গোলাম ফারুক পিংকু। এরপর প্রণোদনা প্রাপ্ত কৃষকদের মাঝে সার ও বীজ বিতরণ করছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। 

তবে উদ্বোধনের পর ভাইস চেয়ারম্যান ইউসুফ পাটোয়ারী ও তার সহযোগী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মো. আলম আওয়ামী লীগ কর্মী ব্যতীত অন্যদের সার-বীজ না দেওয়ার ঘোষণা দেন। 

পাশাপাশি উল্লিখিত দুই কৃষকের প্রণোদনা প্রাপ্তির কার্ড রেখে দেন। বিষয়টি উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের সামনে ঘটলেও তারা কোনো প্রতিবাদ করেননি। 

তবে পরবর্তীতে ঘটনাস্থল উপজেলা চত্বর থেকে ওই ভাইস চেয়ারম্যান চলে গেলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির (মেম্বার) হস্তক্ষেপে প্রণোদনা উপকরণ পান কৃষকরা। 

ভুক্তভোগী কৃষক মনির হোসেন বলেন, আমি কৃষি কাজ করি। কৃষক হওয়ায় আমন চাষে প্রণোদনার কার্ড পেয়েছি। 

শনিবার উপজেলা পরিষদে সার-বীজ নিতে গেলে আমাদের কার্ডগুলো ভাইস চেয়ারম্যান ও তার সহযোগী রেখে দেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্যদের সরকারের দেওয়া প্রণোদনার সার-বীজ দেওয়া হবে না। 

অপর কৃষক আবু ছিদ্দিক বলেন, সার-বীজ নেওয়ার জন্য মেম্বারের দেওয়া কার্ড নিয়ে এসেছি। কিন্তু উপজেলা চেয়ারম্যান ও তার সহযোগী আমাদের কার্ড আটকে রেখেছেন। তারা বলছেন আমরা বিএনপি-জামায়াতের লোক। অথচ আমরাও আওয়ামী লীগ করি। সদর আসনের এমপির বাড়ির পাশে আমাদের বাড়ি। তিনি মেম্বারের মাধ্যমে আমাদের কার্ডগুলো দিয়েছেন।  

অভিযোগের বিষয়ে সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ইউসুফ পাটোয়ারী বলেন, ফেসবুকে দেখলাম একজন ব্যক্তি একাধিক কৃষকের স্বাক্ষর দিয়ে সার ও বীজ নিয়ে যাচ্ছেন। ঘটনা জানতে চেয়েছি ও সতর্ক করেছি কৃষি কর্মকর্তাদের। কারণ, প্রকৃত কৃষকের হাতে প্রণোদনা পৌঁছে দেওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের লক্ষ্য। আমরা সে বিষয়টি তদারকি করছিলাম। কেউ কেউ এটাকে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে সাংবাদিকদের বুঝিয়েছেন।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসান ইমাম বলেন, আমন চাষে সরকার প্রণোদনা দিয়েছেন প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের মাঝে বিতরণের জন্য। নির্দিষ্ট কোনো দল বা গোষ্ঠীর মধ্যে বণ্টনের জন্য নয়।