যোগাযোগ ব্যবস্থা ভঙ্গুর হওয়ার কারণে হাসপাতালে পৌঁছানো হলো না প্রসূতি বিলকিস খাতুনের। প্রসব বেদনায় অস্থির হয়ে ভাঙা সাঁকোতেই জন্ম দিলেন কন্যাসন্তান স্বপ্নাকে।
১৫ বছর আগে বন্যায় ভেঙে যায় সড়কের একাংশ। পরে স্থানীয়দের উদ্যোগে সেখানে নির্মাণ করা হয় বাঁশের সাঁকো। এরপর থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই সেই সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে ওই এলাকার হাজারো মানুষকে। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।
এমনই এক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন বিলকিস খাতুন নামের এক অন্তঃসত্ত্বা। ওই সাঁকোর ওপর দিয়ে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার উদ্দেশে যাচ্ছিলেন স্বজনরা। সাঁকোটি গাড়ি চলাচলের অযোগ্য হওয়ায় হেঁটেই পার হতে হচ্ছিল তাদের। এ সময়েই ঘটে যায় ঘটনাটি। ওই সাঁকোর ওপরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন অন্তঃসত্ত্বা বিলকিস খাতুন এবং সেখানেই এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তিনি। সন্তানটির নাম রাখা হয় স্বপ্না আক্তার।
আলোচিত ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার সকাল ১১টার দিকে উপজেলা সদর ইউনিয়নের মাঝিপাড়া-মন্ডলপাড়া-খাটিয়ামারী সড়কের সুতিরপার এলাকায়। ঘটনার শিকার প্রসূতি বিলকিস খাতুন সাইজুদ্দিনের স্ত্রী। তার বাবার বাড়ি রৌমারী সদর ইউনিয়নের সুতিরপার এলাকায়।
প্রসূতি বিলকিস খাতুনের ভাই শাফি আহমেদ আক্ষেপ করে বলেন, শুধু সেতু নির্মাণ না হওয়ার কারণেই আজ আমার বোন পথেই সন্তান জন্ম দিল। এটা বড় দুঃখের বিষয়। তিনি অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন থেকে এই ভাঙা সাঁকো নিয়েই দুর্ভোগে আছে স্থানীয়রা।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এখানে একটি সেতু নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। কিন্তু এর কোনো প্রতিকার মিলছে না। দ্রুত একটি টেকসই সেতু নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে শৌলমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, কিছু দিন আগে বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে যায়। এ কারণে আজ এক প্রসূতি মা সেখানে একটি সন্তান প্রসব করেছেন। বাঁশের সাঁকোটি চলাচলের জন্য মেরামত করা হচ্ছে।
রৌমারী উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মনছুরুল হক বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। ওই সড়কের বিষয়টি আমার জানা নেই।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে বন্যায় পাকা রাস্তাটি ভেঙে যায়। পরে চলাচলের জন্য একটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়। স্থানীয়রা একাধিকবার জনপ্রতিনিধিদের কাছে একটি ব্রীজ নির্মাণের দাবি জানান। কিন্ত সেখানে আজও কোনো স্থায়ী ব্রীজ নির্মাণ করা হয়নি।