কুমিল্লায় ডাকাতের দৌরাত্ম্যে দিশাহারা এলাকাবাসী
সদর দক্ষিণ (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৪, ০৪:০৫ পিএম
ফাইল ছবি
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলায় একের পর এক ঘটছে ডাকাতির ঘটনা। এসব ঘটনায় প্রধান টার্গেট হচ্ছেন প্রবাসী ও বিত্তশালী পরিবার। ডাকাতের হাত থেকে বাঁচতে রাত জেগে পাহারাও দিচ্ছে গ্রামবাসী।
গত শুক্রবার গভীর রাতে উপজেলার চৌয়ারা ইউনিয়নের দুই বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে গত ২০-২৫ দিনের ব্যবধানে চৌয়ারা, বারপাড়া ও বিজয়পুর ইউনিয়নের ৭-৮টি বাড়িতে ডাকাতি হয়েছে। এ সময় ডাকাতদের হামলায় বেশ কয়েকজন আহতও হয়েছেন। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
উপজেলার চৌয়ারা ইউনিয়নের দীঘলগাঁও গ্রামের ব্যবসায়ী ফরিদ মিয়া জানান, শুক্রবার রাত আড়াইটার দিকে আমার ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে ৮-১০ জন ডাকাত দল। তারা আমাদের বেঁধে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ১২ হাজার টাকা এবং ৭ ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে যায়। দ্রুত ডাকাতদের গ্রেফতারের দাবি জানাই।
তিনি জানান, একই রাতে পার্শ্ববর্তী গ্রাম দক্ষিণ সিন্ধুয়ার প্রবাসী জহিরের বাড়িতেও ডাকাতরা দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে তাদের মারধর করে মোবাইল ফোন নিয়ে যায়।
জানা যায়, কয়েক দিন আগে উপজেলার বারপাড়া ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকশন অফিসার নাজিমের ঘরের ভেতরে ঢুকে পিস্তল ঠেকিয়ে জিম্মি করে ঘরের আসবাবপত্র তছনছ করে নগদ এক লাখ ২২ হাজার ৫০০ টাকা, দুটি মোবাইল ফোন ও প্রায় পাঁচ ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুটপাট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনার পর সদর দক্ষিণ মডেল থানায় একটি মামলাও করা হয়েছে।
এ ছাড়া মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে পার্শ্ববর্তী গ্রাম যাত্রাপুরের শফিকের বাড়িতে দিনদুপুরে চুরি এবং একই গ্রামের নোয়াব মিয়ার বাড়িতে গভীর রাতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় ডাকাতরা স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ অর্থ নিয়ে যায়। এরপর থেকে ডাকাতি রোধে পুরো গ্রামের মানুষ এক হয়ে রাতে পাহারা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে।
বিজয়পুর ইউনিয়নের হোসেনপুর দক্ষিণপাড়ার মনু মিয়ার বাড়িতে এবং মধ্যম বিজয়পুরের রিপনের গভীর রাতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় ডাকাতরা স্বণালঙ্কার ও নগদ অর্থ নিয়ে যায় এবং রিপনকে চুরিকাঘাত করে।
এদিকে গত ২ জুলাই রাতে চৌয়ারা ইউনিয়নের দীঘলগাঁও চৌমুহনী মোহনের দোকান, কিং টঙ্গীরপাড় রাসেলের দোকান, হেমজোড়ার একটি দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটে বলে জানান স্থানীয়রা। এ সময় দোকানের কসমেটিকসসহ মূল্যবান মালামাল ও নগদ অর্থ নিয়ে যায়। একের পর এক ডাকাতির ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
বিজয়পুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তানভীর হোসেন পারভেজ জানান, বিজয়পুর ও আশপাশের ইউনিয়নে ডাকাতির ঘটনা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ডাকাত আতঙ্কে রয়েছে সাধারণ মানুষ। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতির অবনতি দাবি করে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাবলু ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান।
এ বিষয়ে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আলমগীর ভূঁইয়া জানান, ডাকাতির ঘটনায় দুই ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ চক্রের অন্যদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।