Logo
Logo
×

সারাদেশ

রাসেলস ভাইপারের দংশনের পরও প্রাণে বেঁচে গেলেন কৃষক

Icon

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৪:১২ পিএম

রাসেলস ভাইপারের দংশনের পরও প্রাণে বেঁচে গেলেন কৃষক

শিবচরে পদ্মা নদীতে পাট জাগ দিতে গিয়ে এক কৃষক রাসেলস ভাইপার সাপের কামড় খেয়ে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে ডাক্তারের চিকিৎসায় অ্যান্টিভেনম গ্রহণ করে প্রাণে বেঁচে গেলেন। সাপে কাটা রোগী কৃষক সুলতান বেপারি এখন সুস্থ স্বাভাবিক। শুক্রবার তাকে হাটবাজার ও স্বাভাবিক কাজ করতে দেখা যায়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার ও এলাকাবাসী জানান, সোমবার দুপুরে শিবচরের পদ্মা নদীতে পাট জাগ দিতে গিয়ে উত্তর চরজানাজাত এলাকার কৃষক সুলতান বেপারিকে (৫২) রাসেলস ভাইপার সাপে কামড় দেয়। সঙ্গে সঙ্গে অন্য কৃষকরা সাপে কামড় খাওয়া সুলতান বেপারিকে দ্রুত শিবচর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তাররা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখে নিশ্চিত হন আহত সুলতান বেপারিকে প্রকৃতই রাসেলস ভাইবার সাপে কামড় দিয়েছে। এর পর ডাক্তারদের একটি মেডিকেল বোর্ড তাৎক্ষণিক অসুস্থ রোগী সুলতান বেপারিকে চিকিৎসা দেয়। 

সুলতান বেপারি উপজেলার জানাজাত ইউনিয়নের রশিদ মোল্লারকান্দি গ্রামের মৃত্যু কাশেম বেপারির ছেলে। 

সুলতান বেপারি জানান, পদ্মার চর এলাকায় পানিতে ও শুকনো স্থানে অনেক সাপের উপদ্রব বেড়েছে। বেশ কিছু দিন ধরেই এই এলাকায় রাসেলস ভাইপারের দেখা মিলেছে। ১০-১২ দিন আগে এলাকাবাসী একটি রাসেলস ভাইপার সাপ মেরেছে। সেই সাপের পেট থেকে ৩১টি সাপের বাচ্চা বের হয়েছে। ওইগুলো এলাকার মানুষ পুড়িয়ে মেরে ফেলে। সাপে কামড় দিলে আমি চিৎকার করি। পাশে থাকা অন্যান্য কৃষকের সহযোগিতা চাই। তারা আমার হাতে তিনটি বাঁধ দিয়ে আমাকে দ্রুত শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মো. ইব্রাহিম হোসেন জানান, সোমবার দুপুরে জানাজাত এলাকা থেকে রাসেলস ভাইপারের কামড়ে আক্রান্ত কৃষক সুলতান বেপারিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন এলাকাবাসী। হাসপাতালে আসার পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা যায় রোগী অনেক অসুস্থ ছিল। রোগী নিজেও দেখেছেন, সেই সাপটি ছিল রাসেলস ভাইবার সাপ। এরপর মেডিকেল বোর্ড গঠন করে তাৎক্ষণিক তাকে অ্যান্টিভেনম দেয়। অ্যান্টিভেনম দেওয়ার ৩-৪ ঘণ্টা পর রোগী ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন। আলহামদুলিল্লাহ রোগী এখন সুস্থ আছে। 

সাপে কাটা রোগীদের সচেতনতা করতে তিনি আরও জানান, সাপের কামড়ের পর ওঝার কাছে ঝাড়-ফুঁকের জন্য গিয়ে সময় নষ্ট করবেন না! যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ যে কোনো সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসবেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এর আগেও বেশ কয়েকজন সাপে কাটা রোগী এসেছেন চিকিৎসা দিয়েছি।


তিন দিন চিকিৎসাশেষে সুলতান বেপারিকে ছুটি দিয়েছেন ডাক্তার।  বৃহস্পতিবার সুলতান বেপারি সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় বাড়ি ফিরেছেন। 

সুলতান বেপারি জানান, রাসেলস ভাইপার কামড় দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিন্তু আমি অনেকটা অসুস্থ হয়েও গিয়েছিলাম। আমি নিজেই সাপটা চিনতে পেরেছিলাম। কারণ গত কয়েক দিন আগে আমরা পদ্মার পাড় এলাকায়  অনেক সাপ দেখতে পেয়েছি। এমনকি গত কয়েক দিন আগে পদ্মার পাড় থেকে একটি সাপ এলাকাবাসী মেরে ফেলেছে। সেই সাপের পেট থেকে ৩১টি বাচ্চা বের হয়েছিল। সেই সাপটিকে এলাকাবাসী পুড়িয়ে মেরে ফেলেছে। এ কারণেই আমি আমার পাশের কাজে থাকা লোকদের কাছে সাপে কামড়ের কথা বলি। আমাকে অবশ্যই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নেওয়ার কথা বলি। 

তিনি আরও বলেন, আমি এ ব্যাপারে ঝাঁড়ফুক কিংবা ওঝার কাছে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করিনি। এমনকি আমি তাদের কাছে (ওঝ) যেতে বারণ করেছি। তাই আমাকে লোকজন ৪০ থেকে ৫০ মিনিটের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। ডাক্তারের সঠিক চিকিৎসা পেয়ে আমি সুস্থ হয়েছি। এখন আমি অনেকটাই সুস্থ আছি ইনশাল্লাহ।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম