ট্রেন দুর্ঘটনা এড়াতে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি উদ্ভাবন করে তাক লাগিয়ে দিল রাইয়ান
ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৩:২২ পিএম
মাত্র ৫ মাসের চেষ্টায় ট্রেন দুর্ঘটনায় স্বয়ংক্রিয় প্রতিরোধক পদ্ধতি উদ্ভাবন করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র রাইয়ান আজাদ অঙ্কুর নামের এক শিক্ষার্থী।
অঙ্কুর পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার ভাষা শহীদ বিদ্যানিকেতনের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। সে ঈশ্বরদী পৌর শহরের হাসিবুল আজাদের ছেলে।
জানা যায়, উদ্ভাবিত এই পদ্ধতি ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালকের কাছে বার্তা পৌঁছাবে এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে পানি ছিটিয়ে অগ্নি নির্বাপণের ব্যবস্থা করবে। এছাড়া এই পদ্ধতিতে কোনো স্থানে রেল সংযোগ বিচ্ছিন্ন হলে বা রেল লাইনের পাত বেঁকে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্টেশন মাস্টার ও ট্রেন চালকের কাছে সংকেত পাঠানো যাবে। ফলে আগে থেকেই সংকেত পাওয়ায় দুর্ঘটনা রোধ সম্ভব বলে মনে করছে রাইয়ান। মাত্র ৫ মাসের চেষ্টায় এই পদ্ধতি উদ্ভাবন করতে রাইয়ানের খরচ হয়েছে মাত্র ৩ হাজার টাকা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাইয়ান জানান, চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পাঁচজন নিহতসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে দেরি হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি হয়। এ ধরনের ঘটনায় কীভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমানো যায় সেই চিন্তা থেকেই এ প্রতিরোধক পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছি।
ভাষা শহীদ বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষক মুক্তার হোসেন বলেন, রাইয়ান পড়াশোনা ও খেলাধুলায় সব সময়ই মেধাবী। পড়াশোনার পাশাপাশি তার এই উদ্ভাবনে আমরা গর্বিত। বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তার এই কর্মকাণ্ডকে আমরা সব সময়ই সহযোগিতা করেছি।
ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুবীর কুমার দাস জানান, ঈশ্বরদীর মেধাবী ছাত্র রাইয়ান ট্রেন দুর্ঘটনায় স্বয়ংক্রিয় প্রতিরোধক পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে। তার উদ্ভাবিত পদ্ধতি নিয়ে সে গত ৪৫তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ প্রতিযোগিতায় উপজেলা ও জেলায় ১ম হয়ে জাতীয় পর্যায়েও অংশগ্রহণ করেছিল।
এছাড়া বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ ২০২৪ এ অংশগ্রহণ করে সে উপজেলায় প্রথম এবং জেলা পর্যায়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার এই উদ্ভাবন পদ্ধতি সম্পর্কে রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকতাদের অবগত করা হবে। তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবে এই পদ্ধতিকে কাজে লাগিয়ে রেলের দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব কিনা।
পাকশী রেলওয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) শাহ সুফি নূর মোহাম্মদ বলেন, সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়েছি। ঐ শিক্ষার্থীর উদ্ভাবিত পদ্ধতি প্রাথমিকভাবে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য তাকে পাকশী বিভাগীয় রেল কার্যালয়ে ডাকা হবে।