আলোচনা সভায় বক্তারা
নবীজির বিদায় হজের ভাষণে ছিল বিশ্ব মানবতার দিকনির্দেশনা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ০৮:২৩ পিএম
বিদায় হজে আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত জনসমুদ্রের উদ্দেশ্যে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এক যুগান্তকারী ভাষণ দেন। এ ভাষণে বিশ্ব মানবতার সব কিছুর দিকনির্দেশনা ছিল। মুসলমানরা যাতে তাদের দ্বীন থেকে বিচ্যুত না হয় সেজন্য ছিল বিশেষ দিক নির্দেশনা।
মহানবীর (সা.) বিদায় হজ ও গাদিরে খুম দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
শুক্রবার বিকালে রাজশাহীর নগর ভবনের পশ্চিমে গ্রেটার রোডে অবস্থিত শাহ ডাইন কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনার ইসলামী শিক্ষা কেন্দ্রের পরিচালক সৈয়দ ইব্রাহিম খলিল রাজাভি।
ইমামিয়া জনকল্যাণ ফাউন্ডেশনের রাজশাহী শাখার উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান আলোচক ছিলেন, ঢাকাস্থ রাসূল-এ-আকরাম ইসলামিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষা বিভাগের প্রধান মোহাম্মাদ আলী মোর্তজা।
বক্তারা বলেন, মহানবী (সা.) তার বিদায় হজের ভাষণে বলেন, তোমরা যতদিন পবিত্র কুরআন ও আমার আহলে বায়েতকে অনুসরণ করবে ততদিন পথভ্রষ্ট হবে না। এ দিন মহানবী (সা.) হজরত আলীকে (আ.) খিলাফতে অধিষ্ঠিত করেন এবং বলেন, আমি যার মওলা ও নেতা আলী তার মওলা ও নেতা ।
আলোচকরা বলেন, ওই ঐতিহাসিক ঘটনার ৮০ মতান্তরে ৮৪ দিন পর আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর সান্নিধ্যে চলে যান। বিদায় হজ শেষে তিনি মদিনা অভিমুখে যাত্রা করেছিলেন এহরাম পরা অবস্থায়। সঙ্গে ছিলেন সোয়া লাখ সাহাবি । ১৮ জিলহজ পথে মদিনার নিকটবর্তী গাদির-এ-খুম নামক স্থানে উপস্থিত হলে পবিত্র কুরআনের শেষ আয়াতের আগের আয়াত তথা সুরা মায়েদার ৬৭ নম্বর আয়াত নাজিল হয়।
সুরা মায়েদার ওই ৬৭ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ এরশাদ করেছেন, হে রাসুল, পৌঁছে দিন আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে। আর যদি আপনি এরূপ না করেন, তবে আপনি তার পয়গাম কিছুই পৌঁছালেন না। আল্লাহ আপনাকে মানুষের কাছ থেকে রক্ষা করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ কাফেরদেরকে পথ দেখান না। আল্লাহর পক্ষ থেকে এই নির্দেশ নাজিলের পর, প্রিয় নবী গাদির-এ-খুম নামক স্থানে অভিষেক উৎসবের আয়োজন করে আল্লাহর ওই ঘোষণাটি উম্মতদের জানিয়ে দেন ।
যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গাদির-এ-খুম নামক এলাকায় এসে থামলেন, তখন তিনি সবাইকে একত্রিত করলেন। একপর্যায়ে হজরত আলীর (আ.) হাত ধরে উপরে তুললেন এবং জনতার উদ্দেশে বললেন, তোমরা কি জানো, আমি মুমিনদের নিজেদের প্রাণের চেয়েও বেশি আওলা বা প্রিয়? লোকেরা বললেন, হ্যাঁ ইয়া রাসুলুল্লাহ (সা.)। অতঃপর তিনি বললেন, হে আল্লাহ, আমি যার মাওলা এই আলীও তার মাওলা। হে আল্লাহ যে তাকে বন্ধু বানায় তুমিও তাকে বন্ধুরূপে গ্রহণ কর, আর যে তার সঙ্গে শত্রুতা করে তুমিও তাকে শত্রু হিসেবে গ্রহণ কর।
ইমামিয়া ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মন্ডলের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. ওসমান গনী।
বক্তব্য রাখেন- বগুড়ার আল মাহদী শিক্ষাকেন্দ্রের পরিচালক হুজ্জাতুল ইসলাম মো. মোজাফফর হুসাইন, চাপাইনবাবগঞ্জের পবিত্র কুরআন ও আহলে বাইত শিক্ষাকেন্দ্রের পরিচালক ড. আবদুল্লাহ, রাজশাহী সুগার মিলসের কৃষি বিভাগের সাবেক মহা ব্যবস্থাপক মীর সিদ্দিকুর রহমান, রাজশাহী কলেজের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক আ.জ.ম. মনিরুল ইসলাম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে কুইজ পরিচালনা করেন রাজশাহীর মোহাম্মাদ আমীন (সা.) ফারসি শিক্ষাকেন্দ্রের সাংস্কৃতিক বিভাগের প্রধান হুজ্জাতুল ইসলাম মোহাম্মাদ মাজিদুল ইসলাম।