Logo
Logo
×

সারাদেশ

ছাত্রীকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে, শিক্ষকের অপসারণ দাবি

Icon

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৪, ১০:৫০ পিএম

ছাত্রীকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে, শিক্ষকের অপসারণ দাবি

ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন ও পালিয়ে বিয়ে করার অভিযোগে শিক্ষকের অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গোপালপুর পঞ্চপল্লী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ  করেন।
 
এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় শিক্ষক সাগর বাড়ৈকে পাঠদান থেকে বিরত রাখা ও বিদ্যালয়ের বেতন ভাতা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
 
জান গেছে, টুঙ্গিপাড়ার গোপালপুর পঞ্চপল্লী উচ্চ বিদ্যালয়ের বাংলার সহকারী শিক্ষক সাগর বাড়ৈ তার এক ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। ঈদুল আজহার পরের দিন তিনি ওই ছাত্রীকে নিয়ে পালিয়ে যান। ২৩ জুন তিনি গোপনে ওই ছাত্রীকে বিয়ে করেন। এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়।

২৬ জুন বিদ্যালয় খোলার পর ওই শিক্ষক বিদ্যালয়ে এলে তার অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষক বরাবর একাধিক লিখিত অভিযোগ করেন। তারা এ সময় ক্লাস বর্জনের হুমকি দেন। বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষকের অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।

আন্দোলনকারী ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী দীপ্ত সেন ও সোহাগ বালা বলেন, আমরা যাদের পিতার আসনে বসিয়েছি তারা কিভাবে এ ধরনের কাজ করতে পারেন? আমরা যার কাছ থেকে শিক্ষা নেব, তিনি যদি দুশ্চরিত্র হয় তাহলে আমাদের বোনরা কোথায় নিরাপদ? আমরা ওই শিক্ষকের অপসারণ চাই।

নাম না প্রকাশের শর্তে কয়েকজন অভিভাবক বলেন, আমরা সন্তানদের বিদ্যালয়ে দিয়ে নিশ্চিন্তে থাকি কিন্তু শিক্ষকদের এ ধরনের কার্যকলাপে আমরা উদ্বিগ্ন। ওই শিক্ষকের কারণে বিদ্যালয় ও এলাকার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। তিনি বিদ্যালয়ে থাকলে আমরা আমাদের ছেলে-মেয়েদের বিদ্যালয় পাঠাব না।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাপস কুমার বাড়ৈ বলেন, এ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাগর বাড়ৈ এনটিআরসির মাধ্যমে ২০১৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি যোগদান করেন। তিনি বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে থাকতেন এবং সেখানে শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়াতেন। এক বছর আগে তার বিরুদ্ধে এধরনের একটি অভিযোগ ওঠে। এবার তিনি ছাত্রীকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করেছেন বলে শুনেছি। এরপর থেকে আমার সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ রাখেনি। গতকাল পাঁচটি শ্রেণি থেকে শিক্ষার্থীরা তার অপসারণ দাবিতে পৃথকভাবে আবেদন করেছে। ওই শিক্ষক বিদ্যালয়ে এলে তাকে ক্লাস করতে দেওয়া হয়নি। তিনি একটা ছুটির আবেদন দিয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন।

তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার আমরা বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের নিয়ে একটি সভা করেছি। সভায় সাগর বাড়ৈকে পাঠদান ও বিদ্যালয়ের বেতন ভাতা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সুশেন সেন বলেন, শিক্ষক সাগর বাড়ৈ একইসঙ্গে দুইটি অপরাধ করেছেন। একটি হলো ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন এবং অপরটি হলো বাল্যবিয়ে। আমরা নৈতিকভাবে এ দায় এড়াতে পারি না। আমি ব্যক্তিগতভাবে ওই শিক্ষকের শাস্তি দাবি করছি।

এ বিষয়ে জানতে শিক্ষক সাগর বাড়ৈকে তার মোবাইল ফোনে বারবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

টুঙ্গিপাড়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মঈনুল হক বলেন, ওই বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলব। কোনো শিক্ষকের বিরুদ্ধে নৈতিকস্খলনজনিত কোনো অভিযোগ উঠলে আমরা তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে জানাব।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম