চট্টগ্রামে নারীর তুলনায় অবিবাহিত পুরুষের সংখ্যা বেশি
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৪, ০৭:২৬ পিএম
ফাইল ছবি
সর্বশেষ ২০২২ সালের জনশুমারির তথ্য অনুযায়ী চট্টগ্রামে মোট জনসংখ্যা ছিল ৯১ লাখ ৬৯ হাজার ৪৬৫ জন; যা ২০১১ সালে ছিল ৭৬ লাখ ১৬ হাজার জন। ১০ বছরে জেলার জনসংখ্যা বেড়েছে ১৫ লাখের বেশি। এছাড়া এ জেলায় অবিবাহিত নারীর তুলনায় অবিবাহিত পুরুষের সংখ্যা বেশি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ সালের জেলা রিপোর্ট প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করেন জেলা পরিসংখ্যান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. ওয়াহিদুর রহমান। পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্মসচিব দেব দুলাল ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান ও বিশেষ অতিথি ছিলেন চন্দন কুমার পোদ্দার। এছাড়া সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পরিসংখ্যান ব্যুরো জানায়, ২০২২ সালের ১৪ জুন পর্যন্ত চট্টগ্রামে জনসংখ্যা ছিল ৯১ লাখ ৬৯ হাজার ৪৬৫ জন। এর মধ্যে গ্রামে জনসংখ্যা ৪২ লাখ ৮৪ হাজার ২৪৯ জন এবং শহর অঞ্চলে জনসংখ্যা ৪৮ লাখ ৮৫ হাজার ২১৬ জন। এছাড়া চট্টগ্রামে প্রতি বর্গকিলোমিটারে বসবাস করেন ১ হাজার ৭৩৬ জন। ২০১১ সালে বসবাস করত ১ হাজার ৪৪২ জন। জেলায় জনসংখ্যার বার্ষিক গড় বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৬৫ শতাংশ। ২০১১ সালে এ হার ছিল ১ দশমিক ৪০ শতাংশ। চট্টগ্রামে সাক্ষরতার হার ৮১.০৬ শতাংশ, এর মধ্যে নারী ৭৯.২৬ শতাংশ এবং পুরুষ ৮২.৮৮ শতাংশ। জেলায় ১৫-২৪ বছর বয়সি জনসংখ্যার প্রায় ৩০.৩৮ শতাংশ তরুণ-তরুণী পড়ালেখা, কাজ বা কোনো ট্রেনিং কার্যক্রমে যুক্ত নেই। যার মধ্যে নারীর সংখ্যা ৪৬.৬২ শতাংশ, পুরুষের সংখ্যা ১২.১৬ শতাংশ।
শুমারি অনুযায়ী, উপজেলায় সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা ফটিকছড়িতে ৬ লাখ ৪২ হাজার ৭৬ জন। আর সবচেয়ে কম লোক বসবাস করে কর্ণফুলীতে ২ লাখ ৩ হাজার ৬৯৭ জন। এছাড়া বাঁশখালীতে ৫ লাখ ৩৭ হাজার ৫৫৫ জন, সীতাকুন্ড ৪ লাখ ৫৭ হাজার ৩৬৮ জন, হাটহাজারীতে ৪ লাখ ৯৮ হাজার ১৭৯ জন, সাতকানিয়ায় ৪ লাখ ৫৪ হাজার ৫১ জন, মিরসরাইয়ে ৪ লাখ ৭২ হাজার ৭৭৭ জন, আনোয়ারায় ৩ লাখ ১৯ হাজার ৪৮২ জন, লোহাগাড়ায় ৩ লাখ ২৮ হাজার ২০৬ জন, পটিয়ায় ৩ লাখ ৯৭ হাজার ৬৭২ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ৩ লাখ ৯২ হাজার ৮৯৮ জন, রাউজানে ৩ লাখ ৯৬ হাজার ৩৫০ জন, সন্দ্বীপে ৩ লাখ ২৭ হাজার ৫৫৩ জন, বোয়ালখালীতে ২ লাখ ৫৮ হাজার ৬৭৫ জন ও চন্দনাইশে ২ লাখ ৫২ হাজার ২৩৮ জন।
চট্টগ্রামে মুসলিম জনসংখ্যা ৮৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ। হিন্দু জনসংখ্যা ১০ দশমিক ৭২ শতাংশ। বৌদ্ধ জনসংখ্যা ১ দশমিক ৬৩ শতাংশ। খ্রিস্টান জনসংখ্যা শূন্য দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। অন্যান্য ০.০৩ শতাংশ।
এছাড়া জেলায় অবিবাহিত নারীর চেয়ে পুরুষের সংখ্যা বেশি। নারী ২৬.৫২ শতাংশের বিপরীতে পুরুষের হার ৪২.৪৩ শতাংশ। পুরুষের চেয়ে বেশি নারীর সংখ্যা। প্রতি ১০০ জন নারীর অনুপাতে পুরুষের সংখ্যা ৯৯.৩৭ শতাংশ। বিবাহিত নারী ৬৩.৫৪ শতাংশ, বিবাহিত পুরুষ ৫৬.৫৭ শতাংশ, বিধবা ৮.৯৯ শতাংশ, বিপরীত দিকে ০.৭৯ শতাংশ, তালাকপ্রাপ্ত নারী ০.৪২ শতাংশ, পুরুষ ০.০৯ শতাংশ, দাম্পত্য বিচ্ছিন্ন নারী ০.৫২ শতাংশ, পুরুষ ০.১৩ শতাংশ।
জেলা পরিসংখ্যান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. ওয়াহিদুর রহমান জানান, জেলায় শুমারির তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য জেলাকে সাতটি শুমারি জেলায় ভাগ করা হয় এবং ৭ জন জেলা শুমারি সমন্বয়কারীকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। এছাড়াও এ জেলায় মোট ২৯ জন উপজেলা শুমারি সমন্বয়কারী, ১৮১ জন জোনাল অফিসার, ১৮১ জন আইসিটি সুপারভাইজার, ৩ হাজার ৩৩ জন সুপারভাইজার ও ১৭ হাজার ৪৭৪ জন গণনাকারী শুমারির তথ্যসংগ্রহ কার্যক্রমে নিয়োজিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, উন্নয়নসহ যেকোনো কাজের জন্য পরিসংখ্যান খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিশেষ করে স্যানিটেশন, জ্বালানিসহ বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। চট্টগ্রামে এখনো ১.৪৯ শতাংশ মানুষ কাঁচা বা খোলা টয়লেট ব্যবহার করেন। এটি কিভাবে শূন্যে নামিয়ে আনা যায় এ ব্যাপারে কাজ করতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগকে অনুরোধ জানান তিনি।