রংপুরে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে হাঁড়িভাঙ্গা আম, ক্ষুব্ধ ক্রেতারা
রংপুর ব্যুরো
প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৪, ১০:৫১ পিএম
রংপুরে স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় আঁশহীন সুমিষ্ট হাঁড়িভাঙ্গা আম বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। গত ২০ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে এ আম বিক্রি শুরু হয়েছে। এই আম ঘিরে চাষি ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে চড়া দামে বাজারে হাঁড়িভাঙ্গা আম বিক্রি হওয়াতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ক্রেতারা। তবে এবার এই আম দেড়শ কোটি টাকার ওপরে বিক্রির আশা করছেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা।
জানা গেছে, হাঁড়িভাঙ্গা আমের রাজধানী খ্যাত মিঠাপুকুর উপজেলার পদাগঞ্জে প্রতিবার বসে মৌসুমের আমের সবচেয়ে বড় হাট। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী পাইকারেরহাট, রানীপুকুর, পালিচড়া হাটে এ আম খুচরা ও পাইকারি বিক্রি হয়। এছাড়াও রংপুরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল সড়ক, সিটি বাজার, লালবাগ, মডার্ন মোড়, ধাপ বাজার, শাপলা চত্বরসহ নগরীর বিভিন্ন হাট-বাজারে এ আম বিক্রি হচ্ছে। হাট-বাজার ছাড়াও নগরীর বিভিন্ন অলিগলি ও মোড়ে মোড়ে ফেরি করে হাঁড়িভাঙা আম বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে প্রতিবারের মতো এবারো শুরুতেই আমের চড়া দাম চাইছেন বিক্রেতারা।
এদিকে আম পাড়া ও বাজারে সরবরাহকে ঘিরে ব্যস্ততা বেড়েছে আম চাষি, ব্যবসায়ী, পরিবহণ সংশ্লিষ্টদের। আমচাষি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বড় সাইজের আমের মণ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৭০০ টাকা থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকায়। মাঝারি সাইজের আমের মণ ২ হাজার ২০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা। আর ছোট সাইজের আম বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার টাকা থেকে ২ হাজার ১০০ টাকা মণে। তবে খুচরা বাজারে এর দাম আরও বেশি। কাঁচা আমের তুলনায় আবার পাকা আমের দাম কম। এক্ষেত্রে গাছপাকা আম হলে আবার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। চলতি বছর প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমির বাগানে হাঁড়িভাঙার ফলন হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে দেড়শ কোটি টাকার ওপরে হাঁড়িভাঙা আম বিক্রি হবে বলে জানিয়েছেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা।
জানা গেছে, রংপুর অঞ্চলে হাঁড়িভাঙা আমের ফলন বেশি হলেও ফজলি, সাদা ল্যাংড়া, কালা ল্যাংড়া, মিশ্রিভোগ, গোপালভোগ, আম্রপালিসহ নানা প্রজাতির আম উৎপাদন হয়ে আসছে। এসব আমের ভিড়ে এখন সবচেয়ে বেশি চাহিদা হাঁড়িভাঙার। সম্প্রতি হাঁড়িভাঙা আম জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
নগরীর সাইফুল ইসলাম ও নুর মোহাম্মদ রিজুসহ কয়েক ক্রেতা জানান, গত বছরের তুলনায় এবার আমের দাম একটু বেশি। বিক্রেতারা ইচ্ছামতো দামে বিক্রি করছেন। এছাড়াও আকারভেদে দামের পার্থক্য থাকায় কেউ কেউ স্বস্তির কথাও জানান।
পদাগঞ্জের মেহেদী হাসান সৌরভ ও আমজাদ হোসেন নামের দুই ব্যবসায়ী বলেন, হাঁড়িভাঙার ভালো ফলন হওয়ায় অল্প লাভেই বেশি বিক্রির আশা করছেন তারা। তবে এ বছর হাঁড়িভাঙা আমের ফলন ভালো হলেও অনাবৃষ্টি-অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে আমের আকার খুব বেশি বড় হয়নি।
এ বিষয়ে রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন জানান, চলতি বছর জেলায় ৩ হাজার ৩৫৯ হেক্টর জমিতে আমের চাষাবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে হাঁড়িভাঙার চাষাবাদ হয়েছে ১ হাজার ৯১০ হেক্টর জমিতে। তবে আমের আকার ও পরিস্থিতির অনেক সময় দামের কমবেশি হতে পারে।