দ্রুতগতিতে বাড়ছে পদ্মার পানি, শঙ্কায় কৃষক
গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৪, ০৩:৫২ পিএম
পদ্মায় পানি বেড়ে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকায় এভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে। ছবি: যুগান্তর
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে পদ্মা নদীর পানি দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে করে ডুবে যাচ্ছে চরাঞ্চলের ফসলি জমি। কৃষকরা নিরুপায় হয়ে আধাকাঁচা ফসল কেটে ঘরে তুলছেন। এতে করে তাদের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এ ছাড়া নদীতে পানি বাড়ায় নদীতে স্রোত ও ঢেউয়ের সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে দৌলতদিয়া ফেরি ও লঞ্চঘাট এলাকায় ভাঙন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে ৬ ও ৭নং ফেরিঘাট এলাকার অনেকটা নদীতে বিলীন গেছে। নদীতে চলে গেছে কয়েকটি বসতবাড়ি ও দোকানপাট। বিআইডব্লিউটিএ প্রাথমিকভাবে কিছু বালুর বস্তা ফেললেও তা অপ্রতুল।
এ অবস্থায় শত শত বসতবাড়ি, ফসলি জমি ও দোকানপাট, ফেরিঘাটমুখী পাকা সড়ক ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে।
এদিকে রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী শনিবার সন্ধ্যার পর দৌলতদিয়ার ভাঙনকবলিত ফেরিঘাট এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় স্থানীয়রা ভাঙন প্রতিরোধে জরুরি ব্যবস্থা নিতে সংসদ সদস্যের নিকট দাবি জানান।
পরিদর্শন শেষে সংসদ সদস্য বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যানের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলে জরুরি ভিত্তিতে আগামী দুদিনের মধ্যে ফেরিঘাট এলাকার ভাঙন প্রতিরোধে জিওব্যাগ ফেলানোর অনুরোধ জানান। অন্যথায় মানববন্ধনসহ কঠোর কর্মসূচি নেওয়া হবে বলে তিনি চেয়ারম্যানকে আলটিমেটাম দেন।
এ সময় গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মোস্তফা মুন্সি, রাজবাড়ী জেলা পরিষদের সদস্য ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মো. ইউনুস হোসেন মোল্লাসহ দলীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, উজানে গত কয়েকদিন ধরে প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় পাহাড়ি ঢলে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে করে গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম, দৌলতদিয়া ও উজানচর ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ চর ও নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে।
শনিবার বিকালে সরেজমিন আলাপকালে দৌলতদিয়া ইউনিয়নের বেপারিপাড়ার কৃষক মতি সরদার, বাবু সরদার, তোফাজ্জল বেপারি, ওমর আলী মৃধা, হায়াত আলী মৃধাসহ কয়েকজন জানান, পদ্মায় হঠাৎ করে পানি বেড়ে যাওয়ায় চরাঞ্চলে তাদের উঠতি ফলসি জমি তলিয়ে গেছে। যে কারণে তারা বাধ্য হয়ে নৌকাযোগে আধাকাঁচা তিল,বাদাম তুলে আনতে হচ্ছে। এতে তাদের অনেক লোকসান হবে।
কৃষকরা শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, পদ্মার পানি যেভাবে বাড়ছে তাতে অল্প সময়ে বাড়িঘরে পানি উঠে যেতে পারে।
দৌলতদিয়া ক্যানালঘাট ও ফেরিঘাট এলাকায় দেখা যায়, অনেক নারী ও শিশু চর হতে নিয়ে আসা বাদামগাছ হতে বাদাম সংগ্রহ করছেন।
এ সময় শেফালী খাতুন, ছালমা বেগম, রুপালি বেগমসহ কয়েকজন বলেন, আর অন্তত এক সপ্তাহ পর তুললে বাদামগুলো আরও পরিপক্ব হতো।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের দৌলতদিয়া পয়েন্টের গেজ রিডার সালমা খাতুন জানান, রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মার এ পয়েন্টে ৬ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পায়। শনিবার বৃদ্ধি পেয়েছিল ৩০ সে.মি.। রোববার সকালে পদ্মায় পানির লেভেল ছিল ৬.৪৫ মিটার। এখানে পানির বিপৎসীমার স্তর ৭.৯০ মিটার।