ব্রিজ ভেঙে মাইক্রোবাস খালে: নিহতরা বর নয় কনেযাত্রী
যুগান্তর প্রতিবেদন, আমতলী (বরগুনা)
প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৪, ১০:৩৭ পিএম
ছবি: যুগান্তর
বরগুনার আমতলী উপজেলার চাওড়া ইউনিয়নের চাওড়া নদীতে নির্মিত হলদিয়া হাট ব্রিজ ভেঙে কনেযাত্রীবাহী মাইক্রোবাস খালে পড়ে গেছে। ওই মাইক্রোবাসের থাকা ৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে এক পরিবারের তিনজন। নিহতরা পরস্পর আত্মীয়স্বজন। শনিবার দুপুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
খবর পেয়ে বরগুনা-১ আসনের সাংসদ গোলাম সরোয়ার টুকু, জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম সরোয়ার ফোরকান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) তারেক হাসান, সহকারী পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে কাউনিয়া ইব্রাহিম একাডেমির সহকারী শিক্ষক উত্তর তক্তাবুনিয়া গ্রামের মাসুম বিল্লাহ মনিরের মেয়ে হুমায়রা আক্তারের সঙ্গে একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আমতলী পৌর শহরের খোন্তাকাটা এলাকার বাসিন্দা সেলিম মাহমুদের ছেলে ডা. সোহাগের বিয়ে হয়।
গত শুক্রবার ওই কনেকে বরের বাড়ি তুলে আনেন। শনিবার মেয়ের পক্ষের লোকজন বরের বাড়িতে মাইক্রো এবং অটো গাড়িতে যাচ্ছিল। পথে হলদিয়া ব্রিজ পাড় হওয়ার সময় ব্রিজের মাঝের অংশ ভেঙে যায়। এতে মাইক্রোবাস ও অটো গাড়ি নদীতে পড়ে যায়। অটোতে থাকা যাত্রীরা সবাই সাঁতরে কিনারে উঠতে পারলেও মাইক্রোবাসের যাত্রীরা নদীতে তলিয়ে যায়। তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা ওই মাইক্রোতে থাকা লোকজনকে উদ্ধারের চেষ্টা চালায় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শী নাশির উদ্দিন। খবর পেয়ে আমতলী ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিখোঁজ যাত্রীদের উদ্ধারের চেষ্টা চালায়। ততক্ষণে মাইক্রোবাসে থাকা কনে পক্ষের ৯ যাত্রী মারা যান।
নিহতরা হলেন- রুবিয়া (৪৫), রাইতি (২২), ফাতেমা (৫৫), জাকিয়া (৩৫), রুকাইয়াত ইসলাম (৪), তাহিয়া মেহজাবিন আজাদ (৭), তাসফিয়া (১৪), ঋধি (৪) ও রুবি বেগম (৩৫)। এদের মধ্যে রুকাইয়াত ইসলাম ও জাকিয়ার বাড়ি উপজেলার দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া গ্রামে। অপর নিহত ৭ জনের বাড়ি মাদারিপুর জেলার শিবচর উপজেলার কোকরার চর গ্রামের বাসিন্দা। এরা কনে হুমায়রার মামা বাড়ির আত্মীয়স্বজন। নিহতদের আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ব্রিজ ভেঙে নিহত ৯ জনই হাসপাতালে আনার আগেই মারা গেছেন।
মাইক্রোবাসে থাকা সোহেল মিয়া বলেন, মাইক্রোবাসে কনেপক্ষের ১৬ জন যাত্রী বরের বাড়িতে যাচ্ছিলাম। হলদিয়া হাট ব্রিজে উঠামাত্রই ব্রিজ মাঝখান দিয়ে ভেঙে মাইক্রোবাসটি নদীতে পড়ে যায়। আমিসহ ৩ জন সাঁতরে কিনারে উঠতে পেরেছি। পরে স্থানীয়, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ ৯ জনের লাশ উদ্ধার করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম স্বপন ও নাশির উদ্দিন বলেন, মাইক্রোবাস ও অটোগাড়িটি ব্রিজের মাঝখানে আসা মাত্রই ব্রিজ ভেঙে নদীতে পড়ে যায়। তাৎক্ষণিক আমরা স্থানীয়দের নিয়ে উদ্ধারের চেষ্টা চালাই। পরে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ এসে উদ্ধার কাজে অংশ নেয়।