রাজবাড়ীতে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ, টাকার বিনিময়ে রফাদফার চেষ্টা
গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৪, ০৮:৪৯ পিএম
প্রতীকী ছবি
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে (১৩) ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ১১ জুন মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে গোয়ালন্দ পৌরসভা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত পঞ্চাশোর্ধ ব্যক্তি গোয়ালন্দ বাজারের একজন ব্যবসায়ী। তিনি আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্থানীয় প্রভাবশালীদের মাধ্যমে চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে দাবি ভুক্তভোগী পরিবারের।
স্থানীয় ও ভিকটিমের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন বাড়ির পাশের পাটখেতের পাশ দিয়ে ওই ছাত্রী স্থানীয় একটি পুকুরে কাপড় ধোয়ার জন্য যায়। এ সময় সিরাজ খাঁ (৫৫) নামের এক ব্যক্তি সেখানে ঘাস কাটছিলেন। তখন সুযোগ বুঝে ভিকটিমের গলার ঘাস কাটার কাঁচি ঠেকিয়ে পাটখেতে নিয়ে ধর্ষণ করে।
ঘটনার তিন দিন পর ভিকটিমকে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান স্বজনরা। পরে এ বিষয়ে পুলিশকে অবগত করে অধিকতর পরীক্ষার জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ওই স্কুলছাত্রীকে।
তবে ভিকটিমের পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ তাদের থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে একটি অভিযোগ গ্রহণ করে; কিন্তু শেষপর্যন্ত মামলা রেকর্ড, আসামি গ্রেফতার এমনকি সদর হাসপাতালে নিয়ে ভুক্তভোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করা হয়নি।
বৃহস্পতিবার সরেজমিন আলাপকালে ভিকটিমের মা জানান, ঘটনার দিন অনেকটা এলোমেলো অবস্থায় বাড়ি ফিরে তার মেয়ে। পরে কী হয়েছে জানতে চান তিনি। ভয়ে প্রথমদিকে কিছু না বললেও পরে সে সব জানায়। এরপর বিষয়টি স্থানীয় কাউন্সিলর, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি ও তার ভাইকে জানান। তারা বিষয়টি দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেন।
তিনি আরও জানান, ওই দিন সন্ধ্যায় অভিযুক্ত সিরাজের সাথে তার দেখা হলে সে বিষয়টি চেপে গিয়ে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫০ হাজার টাকা দিতে চান। এরপর রাতে স্থানীয় কমিশনারসহ কয়েকজন মামলা করলে মেয়ের বিয়ে না হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে ক্ষতিপূরণ আদায় করে দেওয়ার কথা বলেন।
এদিকে ভুক্তভোগী অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ১৩ জুন সকালে তাকে গোয়ালন্দ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা করে সদর হাসপাতালে যাওয়ার কথা বলেন এবং পুলিশে খবর দেন।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রাণবন্ধু চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়ে আসামিকে গ্রেফতার করতে গিয়েছিলাম; কিন্তু ভিকটিমের পরিবার থেকে আমাদের বাধা দেওয়া হয়। তারা মামলা রুজু করায় আগ্রহী নয়।
পুলিশের ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, শুনেছি অভিযুক্তের কাছে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে। অভিযুক্ত ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে চেয়েছে। তবে ভিকটিমের পরিবার চাইলে আমরা মামলা রুজু ও আসামি গ্রেফতার করব বলে জানান তিনি।