ফাইল ছবি
বগুড়ায় কুরবানির পশুর চামড়ার বাজারে এবারও ধস নামে। গরুর চামড়া ২০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ছাগল ও ভেড়ার চামড়া কিনছেন না কেউই। যার ফলে রাস্তার পাশে বা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে এসব চামড়া।
চামড়া ব্যবয়াসীরা বলছেন, ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে বগুড়ার চামড়া ব্যবসায়ীদের ৩২ কোটি টাকা বকেয়া থাকায় অনেকে এবার বিনিয়োগ করেননি। ফলে চামড়ার বাজারে ধস নেমেছে।
তারা বলছেন, সারাদিন কোনো ক্রেতা না আসায় সন্ধ্যা পর্যন্ত চামড়া বাড়ির সামনে পড়ে থাকে। পরে প্রতিবেশীর দুটিসহ তিনটি চামড়া নিয়ে শহরে এসে ২০০ টাকা করে ৬০০ টাকায় বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন। তবে ছাগল ও ভেড়ার চামড়া ৩০ টাকাতেও কেউ নেয়নি। ছাগলের চামড়া ১০ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ টাকা বলায় অনেকে বিক্রি না করে বাড়ির কাছে ডাস্টবিন বা নদীতে ফেলে দেন। এছাড়া রাস্তার দুইপাশে ছাগল ও ভেড়ার চামড়া স্তূপ হওয়ার ফলে বাধ্য হয়ে অনেকে চামড়া যমুনা নদীতে ফেলে দিয়েছেন।
সুলতানগঞ্জপাড়ার জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, তার ৯৫ হাজার টাকা মূল্যের গরুর চামড়ার দাম ৫০০ টাকা বলেছিল। বিকালে আর কোনো ক্রেতা না আসায় তার গরুর চামড়া বিক্রি হয়নি। বাধ্য হয়ে তিনি শহরের বাদুড়তলা এলাকায় গিয়ে মাত্র ৩৫০ টাকায় বিক্রি করেছেন। অনেক এলাকায় কুরবানিদাতারা বেশি দামের আশায় মৌসুমি ব্যবসায়ীদের চামড়া দেননি। পরে তাদের ২০০ থেকে ৩০০ টাকায় চামড়ার দোকানে গিয়ে বিক্রি করতে হয়েছে।
বগুড়া জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, গত ২০২২ সাল পর্যন্ত ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে তাদের ২২ কোটি টাকা পাওনা ছিল। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েও কোনো লাভ হয়নি। বর্তমানে তাদের কাছে বগুড়ার চামড়া ব্যবসায়ীদের পাওনা ৩২ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, পুঁজি হারিয়ে অনেকে ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছেন। আবার অনেকে খেলাপি হওয়ায় ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন। এবার অনেক ব্যবসায়ী বিনিয়োগ না করায় চামড়ার বাজার পড়ে যায়। তিনি তাদের বকেয়া টাকা পরিশোধ ও চামড়া ব্যবসার উন্নয়নে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।