পলাশবাড়িতে তুচ্ছ ঘটনায় প্রতিপক্ষের হামলায় আহত ১৫, বাড়িঘর ভাংচুর
গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৪, ০২:০৪ এএম
গুরুতর আহত রুবেল মিয়া ও বাড়িঘরে ভাংচুর
জেলার পলাশবাড়িতে মেয়ে-ঘটিত তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি এবং পরবর্তীতে প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর।
জানা যায়, পলাশবাড়ি উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নের বুজরুক বিষ্ণুপুর গ্রামের হাছান আলীর ছেলে ফিরোজ মিয়া একই গ্রামের একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করে। কিন্তু মেয়েটি একই এলাকার আব্দুল মতিনের (শিক্ষক) ছেলে জিসানের (২২) সঙ্গে প্রেম করতো। এ অবস্থায় মেয়েটির নামে মেসেঞ্জার আইডি খুলে ফিরোজের সঙ্গে প্রেমের অভিনয় করে জিসান।
এক পর্যায়ে সোমবার ঈদুল আজহার দিন সন্ধ্যায় স্থানীয় বোর্ডের বাজারে ফিরোজকে মারধর করে জিসান। এ সময় তার সঙ্গে ছিল রনি, আব্দুল মালেক ও অন্য বন্ধুরা।
এ সময় উপস্থিত লোকজন বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করে। এদিকে ফিরোজকে মারধরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় তার মামাত ভাই লিটন। এ সময় জিসান ও তার সঙ্গীরা মিলে তাকেও মারধর করে।
এরপর মঙ্গলবার সকালে লিটন, ফিরোজের ভাই রওশন, সুরুজ ও সুমন, জ্যাঠাত ভাই হাবিব, হারুন, মামা রুবেল মিয়া, খাজা মিয়া, রাজা মিয়া, বাদশা মিয়া, নবা মিয়া ও সাইফুল ইসলামসহ আরও কয়েজন মামাত ভাই মিলে বিষয়টি মীমাংসা করতে গেলে দুই পক্ষের লোকজনের সঙ্গে প্রথমে হাতাহাতি হয় এবং পরবর্তীতে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়।
এ সময় মৃত আইজার রহমানের ছেলে সাইদুর রহমান ভুলু ও শামসুল মিয়া, সাইদুর রহমান ভুলুর ছেলে রনি মিয়া, শামসুল মিয়ার ছেলে সাজ্জাদ মিয়া ও আবু সাহিদ মিয়া, দুদু মিয়ার ছেলে শইফ মিয়া, সোহেল মিয়া ও সোহাগ মিয়া, মধু মিয়ার ছেলে আব্দুল মালেক, আলম মিয়ার ছেলে পলাশ মিয়া, মৃত আবু হাজির ছেলে আতিয়ার মিয়া, আতিয়ারের ছেলে শামীম মিয়া, বছিরের ছেলে জনি, তারা মিয়ার ছেলে শাহাদাত, আফছার আলির ছেলে বাবু, ডালেস মিয়ার ছেলে মেহেদি, গোফ্ফার মিয়ার ছেলে রাসেল, আইয়ুব মিয়া ও তার ছেলে যোবায়েরসহ অন্যরা প্রতিপক্ষের লোকজনের ওপর হামলে পড়ে।
এ সময় ভুলুর ছেলে রনি মিয়া হত্যার উদ্দেশ্যে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে রুবেল মিয়ার মাথায় কোপ দেয়। এতে তিনি লুটিয়ে পড়েন। তাকে প্রথমে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে তার মাথায় প্রায় শতাধিক সেলাই ও প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় পাঠানো হয়।
এছাড়া শইফ মিয়া ধারাল অস্ত্র দিয়ে রাজা মিয়ার হাতে কোপ দিলে তিনি গুরুতর আহত হন। এ সময় প্রতিপক্ষের হামলায় রিপন, লিটন, চঞ্চল, সাইফুল ইসলাম, নাসিম রেজা বাবু, খাজা মিয়া, ফিরোজসহ আরও কয়েকজন আহত হয়। তাদের মধ্যে দুইজনকে রংপুর মেডিকেল এবং অন্যদের গাইবান্ধার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে আহতদের নিয়ে ভিকটিমদের লোকজন ব্যস্ত থাকার সুযোগে প্রতিপক্ষের উল্লিখিত লোকজন তাদের বাড়িঘরে এসে হামলা চালায় এবং বিভিন্ন সম্পদের ক্ষতি সাধন করে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
এ বিষয়ে মহদীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম জানান, ঈদের দিন বিকালে স্থানীয় এক তরুণীকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। সম্ভব্য সংঘর্ষ এড়াতে ওই গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে পলাশবাড়ি থানার ওসি আজমিরুজ্জামান বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। অনেকেই আহত হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে এখনো থানায় কোনো মামলা দেওয়া হয়নি।