Logo
Logo
×

সারাদেশ

বগুড়ায় এবারও ন্যায্য দাম পাবেন না কুরবানিদাতারা

Icon

বগুড়া ব্যুরো

প্রকাশ: ১৬ জুন ২০২৪, ০৩:৫৩ এএম

বগুড়ায় এবারও ন্যায্য দাম পাবেন না কুরবানিদাতারা

ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে বগুড়ার চামড়া ব্যবসায়ীদের ৩২ কোটি টাকার বেশি পাওনা থাকলেও এবার ঈদে এক লাখ কাঁচা চামড়া কেনার টার্গেট করা হয়েছে। 

তবে ব্যবসায়ীরা লাভবান হলেও কুরবানিদাতারা চামড়ার মূল্য এবারও ৫০০ থেকে ৬০০ টাকার বেশি পাবেন না। 

বগুড়া চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সূত্র জানায়, উত্তরাঞ্চলের অন্য জেলার চেয়ে এখানে বেশি কাঁচা চামড়া কেনাবেচা হয়ে থাকে। বিগত বছরগুলোতে গড়ে ৯০ হাজার গরু ও ৫০ হাজার খাসির চামড়া কেনাবেচা হয়েছে। 

তবে এবার কুরবানির সংখ্যা কম হওয়ায় চামড়া সংগ্রহের টার্গেট পূরণ হওয়ার সম্ভবনা কম। সরকারিভাবে এবার ঢাকায় লবণ দেওয়া গরুর চামড়া এক হাজার ২০০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে এক হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বগুড়া চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি ফজলু প্রামানিক জানান, ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে তাদের কয়েকজন ব্যবসায়ীর ৩১ কোটির বেশি টাকা বকেয়া আছে। দীর্ঘদিন তাগাদা দিলেও তারা ওই বকেয়া পরিশোধ করছেন না। শুধু তার তিন ট্যানারি মালিকের কাছে তিন কোটি ২৬ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে। 

অনেকের মতো তিনিও ব্যাংক ঋণ নিয়ে চামড়া কিনে ট্যানারি মালিকদের সরবরাহ করেছেন। ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় তার জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার উপক্রম হয়েছে। বকেয়া টাকা পেতে এখন তিনি ঢাকায় পড়ে রয়েছেন। 

কয়েকজন চামড়া ব্যবসায়ী জানান, ২০২৩ সালে ঢাকার বাইরে গরুর চামড়ার দর দেওয়া হয়েছিল ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা বর্গফুট। খাসির চামড়া ২০-২৫ টাকা ও বকরির চামড়া ১৮-২০ টাকা বর্গফুট। কুরবানিদাতাদের স্বার্থে সরকার এবার প্রতি বর্গফুট চামড়ার মূল্য ৫-৭ টাকা বৃদ্ধি করেছে। 

বগুড়ায় তারা প্রতি গরুর চামড়া ২২ বর্গফুট হিসাবে কেনেন। কিন্তু ঢাকার ট্যানারি মালিকরা ২০ বর্গফুট হিসাবে দাম দেন। একটা চামড়া প্রস্তুত করতে শ্রমিক মজুরি, লবণ, পরিবহণ ও অন্যান্য খরচ ৩০০ টাকা পড়ে। সরকার একটা চামড়ার দাম এক হাজার টাকা বেঁধে দিলেও তারা বড় গরু ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা এবং মাঝারি ৪০০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকায় কিনতে পারবেন। বাজারের এ অবস্থায় তারা এবার ছাগল বা বকরির চামড়ার মূল্য দিতে পারবেন কিনা তাতে সন্দেহ রয়েছে। 

চামড়া ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রতি বছর কুরবানির ঈদের আগে পাড়া-মহল্লায় মৌসুমি ব্যবসায়ীদের তৎপরতা বাড়ে। তারা ব্যবসা না বুঝেই চামড়া কিনে থাকেন। তাদের কারণেই চামড়ার বাজারে ধস নামে। তারা অবশ্য চামড়া বাজারে ধসের জন্য ট্যানারি মালিকদের বকেয়া পরিশোধ না করাকে বেশি দায়ী করেন। 

এদিকে সরকার জেলা পর্যায়ে প্রতিটি চামড়ার মূল্য এক হাজার টাকা বেঁধে দিলে কুরবানিদাতারা সন্তোষ প্রকাশ করেন। তবে বগুড়ার চামড়া ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ মূল্য চামড়া প্রস্তুত হওয়ার পর। 

বগুড়া জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. আসাদুজ্জামান জানান, ২০২২ সাল পর্যন্ত ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে তাদের ২২ কোটি টাকা পাওনা ছিল। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়ে কোনো লাভ হয়নি। বর্তমানে পুঁজি হারিয়ে অনেকে ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছেন। আবার অনেকে ঋণখেলাপি হওয়ায় ব্যবসা বন্ধ করার চিন্তা করছেন। 

তিনি তাদের বকেয়া টাকা পরিশোধ ও চামড়া ব্যবসার উন্নয়নে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম