Logo
Logo
×

সারাদেশ

ট্যানারি মালিক সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা

Icon

বগুড়া ব্যুরো

প্রকাশ: ১৫ জুন ২০২৪, ১০:৩৭ পিএম

ট্যানারি মালিক সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা

বগুড়ার চামড়া ব্যবসায়ীরা ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে ৩২ কোটি টাকার বেশি পাওনা থাকলেও, এবারের ঈদে এক লাখ কাঁচা চামড়া কেনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ব্যবসায়ীরা লাভবান হলেও কুরবানিদাতারা চামড়ার মূল্য এবারও ৫০০ থেকে ৬০০ টাকার বেশি পাবেন না। এতে দরিদ্র মানুষ চামড়ার টাকা বঞ্চিত হবেন।

বগুড়া চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সূত্র জানায়, ২০২৩ সালে ঢাকার বাইরে গরুর চামড়ার দর বেধে দেওয়া হয়েছিল ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা বর্গফুট। খাসির চামড়া ২০-২৫ টাকা ও বকরির চামড়া ১৮-২০ টাকা বর্গফুট। কুরবানিদাতাদের স্বার্থে সরকার এবার প্রতি বর্গফুট চামড়ার মূল্য ৫-৭ টাকা বৃদ্ধি করেছে। সে হিসেবে ঢাকায় প্রতি পিস গরুর চামড়ার দাম হবে এক হাজার ২০০ টাকা ও জেলা পর্যায়ে এক হাজার টাকা। বগুড়ায় ব্যবসায়ীরা প্রতি গরুর চামড়া ২২ বর্গফুট হিসেবে কেনেন। কিন্তু ঢাকার ট্যানারি মালিকরা ২০ ফুট হিসেবে দাম দেন। 

ব্যবসায়ীরা জানান, একটা চামড়া প্রস্তুত করতে শ্রমিক মজুরি, লবণ, পরিবহন ও অন্যান্য খরচ বাবদ ৩০০ টাকা পড়ে। সরকার একটা চামড়ার দাম এক হাজার টাকা বেধে দিলেও, বড় গরু ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা এবং মাঝারি ৪০০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকায় কিনতে পারবেন। বাজারের এ অবস্থায় তারা এবার ছাগল বা বকরির চামড়ার মূল্য দিতে পারবেন কি-না, তাতে সন্দেহ রয়েছে। 

চামড়া ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রতি বছর কুরবানির ঈদের আগে পাড়া-মহল্লায় মৌসুমী ব্যবসায়ীদের তৎপরতা বাড়ে। তারা ব্যবসা না বুঝেই চামড়া কিনে থাকেন। তাদের কারণেই চামড়ার বাজারে ধস নামে। তারা অবশ্য চামড়া বাজার ধসের জন্য ট্যানারি মালিকদের বকেয়া পরিশোধ না করাকে বেশি দায়ী করেন।

বগুড়া জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি ফজলু প্রামাণিক জানান, ঢাকার কয়েকজন ট্যানারি মালিকের কাছে তাদের কয়েকজন ব্যবসায়ীর ৩১ কোটির বেশি টাকা বকেয়া রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তাগাদা দিলেও তারা ওই বকেয়া পরিশোধ করছেন না। শুধু তার নিজেরই তিন ট্যানারি মালিকের কাছে তিন কোটি ২৬ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে। অনেকের মত তিনিও ব্যাংক ঋণ নিয়ে চামড়া কিনে ট্যানারি মালিকদের কাছে সরবরাহ করেছেন। ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় তার জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার উপক্রম। বকেয়া টাকা পেতে এখন ঢাকায় পড়ে আছেন। 
 
এদিকে সরকার জেলা পর্যায়ে প্রতিটি চামড়ার মূল্য এক হাজার টাকা বেধে দেওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন কুরবানিদাতারা। তবে বগুড়ার চামড়া ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ মূল্য চামড়া প্রস্তুত হওয়ার পর। একটা চামড়া প্রস্তুতে লবণ, শ্রমিক মজুরি, পরিবহন ও অন্যান্য খচর কমপক্ষে ৩০০ টাকা পড়ে। তাই তারা কোনোভাবেই একটা চামড়া ৫০০ থেকে ৬০০ টাকার বেশি দাম দিতে পারবেন না।

বগুড়া জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, গত ২০২২ সাল পর্যন্ত ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে তাদের ২২ কোটি টাকা পাওনা ছিল। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েও কোনো লাভ হয়নি। বর্তমানে তাদের কাছে বগুড়ার চামড়া ব্যবসায়ীদের পাওনা ৩২ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। পুঁজি হারিয়ে অনেকে ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছেন। আবার অনেকে খেলাপী হওয়ায় ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন। 

তিনি তাদের বকেয়া টাকা পরিশোধ ও চামড়া ব্যবসার উন্নয়নে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম