নেপিয়ার জাতীয় ঘাস খেয়ে নেত্রকোনার পূর্বধলার একটি গরুর খামারে ষাঁড়, গাভি, বাছুরসহ ২৭টি গরুর মৃত্যু হয়েছে। পূর্বধলা সদর ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়া গ্রামের তাহাযিদ অ্যাগ্রো ফার্মে ষাঁড়, গাভি, বাছুরসহ ২৭টি গরু মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
রোববার থেকে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটে। এছাড়া খামারটির আরও বেশ কয়েকটি গরু অসুস্থ আছে।
খামারের মালিক জাহেরুল ইসলাম বলেন, তার খামারে দুই শতাধিক ছোট-বড় গরু আছে। এর মধ্যে ষাঁড় বেশি। কুরবানির ঈদ কেন্দ্র করে তিনি ষাঁড়গুলো বিক্রির প্রস্তুতিও নিয়েছিলেন। শনিবার সন্ধ্যায় তার নিজস্ব খেত থেকে নেপিয়ার জাতীয় কাঁচা ঘাস খাওয়ানোর পরই গরুগুলো অসুস্থ হতে শুরু করে। পরদিন রোববার দুপুর থেকে একের পর এক গরু মারা যেতে থাকে। সর্বশেষ মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে একটি ষাঁড় গরু মারা যায়। এ নিয়ে সব মিলিয়ে খামারের ২৭টি গরু মারা গেছে। এর মধ্যে দুটি দুধের গাভি ও দুটি বাছুর ছাড়া অন্য ২৩টি ষাঁড়।
খামারির দাবি, গরুগুলোর বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা।
জাহেরুল ইসলাম বুধবার বিকালে বলেন, আমি ওই দিন বাড়িতে না থাকায় খামার দেখাশোনা করার লোকজন খেত থেকে কচি ঘাস কেটে সঙ্গে সঙ্গে গরুগুলোকে খেতে দেওয়ায় এ সমস্যা হয়েছে। সাধারণত নেপিয়ার ঘাস আগের দিন কেটে রেখে পরদিন দেওয়া হতো। অথবা দুই ঘণ্টার মতো রোদে রেখে প্রাণীগুলোকে খেতে দেওয়া হতো। খামারের ২০৩টি গরুর মধ্যে অন্তত ৫০টি গরুকে এই ঘাস খেতে দেওয়া হয়েছিল। মারা যাওয়ার পর খামারে এখনো চারটি গরু অসুস্থ। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা এসে মৃত গরুগুলোর নমুনা ও ঘাসের নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গেছেন।
তিনি বলেন, বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে গেল আমার। কী করব, কিছুই বুঝতে পারছি না। ঋণ করে খামারটি করেছিলাম।
পূর্বধলা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এমএমএ আউয়াল তালুকদার বলেন, বৃষ্টির সময় কচি ঘাসে নাইট্রোজেনের মাত্রা বেশি থাকে। নাইট্রেট বিষক্রিয়ায় গরুগুলো মারা যেতে পারে। ঘাসের নমুনা ও মারা যাওয়া গরুর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষার পর আরও বিস্তারিত জানা যাবে। এ ব্যাপারে খামারির সঙ্গে অধিদপ্তরের মেডিকেল দল সার্বক্ষণিক চিকিৎসাসেবা প্রদানসহ খোঁজখবর রাখছে।
তিনি আরও বলেন, খামারিদের গরুকে শুধু কাঁচা ঘাস দেওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। এছাড়া নেপিয়ার ঘাস কাটার সঙ্গে সঙ্গে গরুকে খেতে দেওয়া উচিত নয়।