কালীগঞ্জে আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি, এলাকাবাসীর সংবাদ সম্মেলন
গাজীপুর মহানগর ও কালীগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ জুন ২০২৪, ১২:১১ পিএম
এলাকাবাসীর সংবাদ সম্মেলন
গাজীপুরের কালীগঞ্জ থানার মধ্য খোলাপাড়া গ্রামে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতিতে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্থানীয়রা। সম্মেলনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন তারা।
বুধবার বিকালে কালীগঞ্জ থানার বাহাদুরশাদী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মধ্য খোলাপাড়া গ্রামের মোস্তফা কামালের বাড়িতে এ সংবাদ সম্মেলন করেন এলাকাবাসী।
তাদের অভিযোগ, ৯৯৯-এ ফোন করে আসামি ধরিয়ে দিলে পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয়। ফলে এলাকায় চুরি-ছিনতাই, ডাকাতি, মাদক বেচাকেনা ও মাদকসেবীদের অত্যাচারে নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে এলাকাবাসীর।
সংবাদ সম্মেলনে এলাকারবাসীর পক্ষে মোস্তফা কামালের স্ত্রী ও ভুক্তভোগী কামরুন্নাহার শুভা লিখিত বক্তব্যে বলেন, পাশের বাড়ির অটোচালক আমিনুল ইসলামের অটোরিকশা চুরি হলে তার সিসি ক্যামেরায় একই এলাকার সামাদের ছেলে শাওনকে শনাক্ত করা হয়। পরে অটোচালক আমিনুল থানায় অভিযোগ করলেও চোরের ছবি সঠিকভাবে চিহ্নিত না হওয়ার অজুহাতে মামলা নেয়নি কালীগঞ্জ থানা পুলিশ।
অন্যদিকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সরবরাহ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে কামরুন্নাহার শুভার পরিবারের ওপর নেমে আসে প্রতিশোধের খড়গ।
এই সূত্র ধরে গত শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে শাওনের নেতৃত্বে সাজ্জাদ হোসেন সজীব, হান্নানসহ একটি সংঘবদ্ধ দল শুভার বাড়ির সিসি ক্যামেরা, ইন্টারনেট ও বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করে ঘরের জানালা খুলে আমার গলার ২ ভরি সোনার নেকলেস ছিনিয়ে নেয়।
এ সময় আমি শাওনকে চিনে ফেলি। গ্রামবাসী সবাই মিলে শনিবার ভোরেই তার বাড়ির পেছনের ঝোপ থেকে আটক করে মামলা দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করি। ডাকাতির মামলা দিতে চাইলে পুলিশ চুরির মামলা নিয়ে শাওনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।
অপরদিকে শনিবার রাত দেড়টায় শাওনের সহযোগী সজীব ও হান্নান দেশীয় অস্ত্র রামদা নিয়ে আমার বাড়িতে আসে। শাওনকে ছাড়িয়ে আনতে এক লাখ টাকা দাবি করে আমার স্বামী মোস্তফাকে টেনেহিঁচড়ে বাড়ির বাইরে আনতে জোর-জবরদস্তি করতে থাকে।
এ অবস্থায় আমি ৯৯৯-এ ফোন করলে সাব-ইন্সপেক্টর ইব্রাহিম ফোর্সসহ আমার বাড়িতে আসে। পুলিশ চলে যাওয়ার পর রাতে সজীব এসে আমার শোবারঘরে ঢুকে হুমকি-ধমকি দিতে থাকে এবং পুনরায় ১ লাখ টাকা দাবি ও শাওনকে ছাড়িয়ে আনতে বলে। পরে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যায়। এলাকার কেউ-ই রাতে ঘুমাতে পারে না। চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি ও মাদকদ্রব্যের ছড়াছড়িতে আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটেছে। জীবনের নিরাপত্তা ও সুবিচার চেয়ে প্রধানমন্ত্রী ও স্থানীয় প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয়দের অভিযোগের তীর স্থানীয় বাহাদুরশাদী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য ফারুক মির্জার দিকে। তাকে মাদক ব্যবসায়ী ও চোর ছিনতাইকারীদের গডফাদার আখ্যায়িত করলেও তিনি জানান, আসামিদের আটক করে আইনের হাতে তুলে দিতে আমার সহযোগিতা ছিল এবং থাকবে।
কালীগঞ্জ থানার ওসি মাহাতাবউদ্দিন জানান, অভিযোগকারী একজন দুশ্চরিত্র নারী। তবু অভিযোগ পেয়ে শাওন ও সজীবকে গ্রেফতার করা হবে। বাকি আসামিদের ধরতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।