শরীয়তপুরের ডামুড্যায় নিখোঁজের একদিন পর হাত-পা, মুখ ও চোখ বাঁধা অবস্থায় কলেজপড়ুয়া এক কিশোরীকে একটি ব্রিজের নিচ থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ ও স্থানীয়রা। 

উদ্ধারের পর ভুক্তভোগী জানান, প্রেমের সম্পর্ক ছিন্ন করায় প্রেমিক সিয়াম ও তার সঙ্গীরা তাকে ধর্ষণ করে ব্রিজের নিচে ফেলে গেছে। হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পুলিশ ও স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করলেও পুলিশ জানিয়েছে লিখিত অভিযোগ পেলে নেওয়া হবে ব্যবস্থা।

শনিবার শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ওই কিশোরীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

অভিযুক্ত প্রেমিক সিয়াম পেদা (১৯) উপজেলার শিধলকুড়া ইউনিয়নের ছোট শিধলকুড়া গ্রামের খোদা বক্স পেদার ছেলে। সে গোসাইরহাটের সরকারি শামসুর রহমান কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গোসাইরহাটের সরকারি শামসুর রহমান কলেজের শিক্ষার্থী সিয়াম পেদার সঙ্গে আড়াই বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল ওই ছাত্রীর। ২০ দিন আগে একটি বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির জেরে সম্পর্কের ইতি ঘটে। এরপর বৃহস্পতিবার ওই ছাত্রী কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে ডামুড্যার ফরাজি টেক নামক স্থান থেকে সিয়াম পেদা ও তার চারজন সঙ্গী তাকে হাত-মুখ বেঁধে অজ্ঞান করে পরিত্যক্ত একটি ঘরে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এদিকে ওই কিশোরী বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন তাকে বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করতে থাকেন। পরিবারের লোকজন তাকে কোথাও না পেয়ে নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি পুলিশকে জানায়। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে ডামুড্যা থানা থেকে বাড়ি ফেরার পথে ভুক্তভোগীর বাবা জানতে পারেন শিধলকুড়া কাঠের ব্রিজের ওপর হাত-পা, চোখ-মুখ বাঁধা অবস্থায় এক কিশোরীকে পাওয়া গেছে। এরপর ভুক্তভোগীর বাবা ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই কিশোরীকে শনাক্ত করেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কম্পেলেক্সে চিকিৎসার জন্য পাঠায়। গণধর্ষণের কারণে উন্নত চিকিৎসার জন্য কিশোরীকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠান উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসকরা। এরপর ভুক্তভোগীকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

জানতে চাইলে ওই কলেজছাত্রী বলে, সিয়াম সঙ্গে আমার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করায় কলেজ থেকে ফেরার পথে সিয়াম ও তার সঙ্গে থাকা চারজন আমার হাত-মুখ বেঁধে অজ্ঞান করে একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে যায়। এরপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে তারা। আমার হাত-পা, মুখ-চোখ বেঁধে ব্রিজের ওপর ফেলে রেখে যায়।

ভুক্তভোগীর বাবা বলেন, পুলিশ আমার মেয়েকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে চিকিৎসার জন্য।

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মিতু আক্তার বলেন, ধর্ষণের শিকার এক কিশোরীকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসে পরিবার। আমরা ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য আলামত সংগ্রহ করি। কিশোরীকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে জানার জন্য সিয়াম পেদার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

ডামুড্যা থানার ওসি এমারত হোসেন বলেন, হাত-পা বাঁধা অবস্থায় এক কিশোরীকে শিধলকুড়া ব্রিজের পাশ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। কিশোরীকে উদ্ধার করার আগে তার পরিবারের পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল থানায়। তবে অভিযোগটি নথিভুক্ত করার আগেই আমরা জানতে পেরেছি কিশোরীকে ব্রিজের পাশে পাওয়া গেছে। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ। এঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।