Logo
Logo
×

সারাদেশ

প্রতি মুহূর্তেই চেষ্টা করব গ্যাস সরবরাহ যাতে নিশ্চিত হয়: পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান

Icon

গাজীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১ জুন ২০২৪, ১০:৫৪ পিএম

প্রতি মুহূর্তেই চেষ্টা করব গ্যাস সরবরাহ যাতে নিশ্চিত হয়: পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান

বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেছেন, অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে ভাত বা খাবার রান্না করে যারা পরিবারের সদস্যদের খাওয়াচ্ছেন, নীতি-নৈতিকতার কারণেই আপনাদের এ কাজ থেকে বিরত থাকা উচিত। তিনি গ্রাহকদের বৈধ গ্যাস ব্যবহারের আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশীয় উৎস থেকে গ্যাস সরবরাহ বলেন বা এলএনজি এনে গ্যাস সরবরাহ বলেন প্রতি মুহূর্তে চ্যালেঞ্জ নিয়ে আমাদের গ্যাস সরবরাহ করতে হচ্ছে। কিন্তু আমরা আমাদের সমস্যার কথা বলব না, বরং আজ আপনাদের সমস্যাগুলোর কথাই শুনেছি, নোট করে নিয়েছি, উত্তরও দিয়েছি। প্রতি মুহূর্তে আমরা চেষ্টা করবো গ্রাহকরা যাতে ভালো থাকে, গ্রাহকদের গ্যাস সরবরাহ যাতে নিশ্চিত হয়। তাদের বিজনেস যাতে দাঁড়ায়, তারা যেন কর্মসৃজন করে দেশের মানুষের জন্য উন্নতি করতে পারে। 

পেট্রোবাংলার শুদ্ধাচার কর্মপরিকল্পনা ২০২৩-২৪ অনুযায়ী অংশীজনের অংশগ্রহণে শনিবার গাজীপুরে গণশুনানি ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মহানগরের শিমুলতলী রোডের বিলাসপুর বটতলা এলাকায় অবস্থিত ‘জয়দেবপুর কনভেনশন সেন্টারে’ বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এ মতবিনিময় ও গণশুনানি চলে। যমুনা গ্রুপ, হামিম, আম্বার, আফতাব, ডিবিএল, মোশারফ কম্পোজিট, মন্ডলসহ দেশের প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন শিল্প গ্রুপের মালিক বা প্রতিনিধি এবং সিএনজি ও আবাসিক গ্রাহকরা এতে অংশগ্রহণ করেন। 

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান বলেন, শিল্প মালিক ইনভেস্ট করেছেন কিন্তু গ্যাস পাচ্ছেন না বা অন্য গ্রাহকরা পাচ্ছেন না। আপনারা যে সমস্যার মধ্যে আছেন আমাদের কাজই হচ্ছে তার সমাধান করা। আমরা আপনাদের নিশ্চিত করছি-পেট্রোবাংলার পক্ষ থেকে আমরা আপনাদের সমস্যা সমাধানের জন্যই কাজ করছি। এর জন্য ‘বৃহত্তর পরিকল্পনা-২০৪১’ হাতে নেওয়া হয়েছে। সেখানে দেশীয় উৎস থেকে বেশি গ্যাস উৎপাদনের কথা বলা হয়েছে, সমুদ্র থেকে এলএনজির মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ করার কথাও বলা হয়েছে। এটি নিয়ে আমরা প্রতি মুহূর্তে কাজ করছি। 

তিনি গ্রাহকদের সমস্যার বিষয়ে জবাব দিতে গিয়ে বলেন, কাস্টমারদের গ্যাস দিতে গিয়ে আমাদের যে সমস্যাগুলো হচ্ছে, সেটি আপনাদের সবার কথায় ফুটে উঠেছে। আমরা চেষ্টা করব আপনাদের এ সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান করতে। আপনারা যারা শিল্প করছেন, সিএনজি করছেন, আপনাদের ইনভেস্টমেন্টে রিটার্নটা একেবারে স্পষ্ট। এতে আপনারা জানেন, কোথায় লাভ হবে, কোথায় লস হবে। কিন্তু পেট্রোবাংলা এমন এক বিজনেস করছে, যার প্রতিটা পদে পদে হলো অনিশ্চয়তা। আমি দেশীয় উৎস থেকে গ্যাস উৎপাদন করব নাকি ৫টা-১০টা ক‚প খনন করব। ২শ, আড়াইশ কোটি টাকা খরচ করে গ্যাস কূপ খনন করার পর দেখা গেল সেটি পুরোপুরি ফেল করেছে। আবার কখনো দেখা যাবে খুব ভালো সাকসেসফুল হয়েছে। আবার এলএনজি নিয়ে আসছি সেই এলএনজির বিজনেসটা আরও কঠিন। আপনারা শিল্পমালিকরা যে সমস্যা ভোগ করছেন, আপনাদের চেয়ে ১০ গুণ কঠিন হচ্ছে আমার এলএনজির সমস্যা। উত্তাল সমুদ্রে ভাসমান একটি টার্মিনাল, তাতে একটি জাহাজ এনে আবার এলএনজি দিচ্ছি। এমনভাবে আমাকে হিসাব করতে হচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দ্বীপ থেকে কবে রওয়ানা হলে কখন আসবে। যদি এক ঘণ্টা দেরি করে তবে, ওই এক ঘণ্টায় আমার গ্যাসের ফ্লো কমে যাবে। আবার যদি একদিন আগে চলে আসে তবে, তার লসের জন্য আমাকে জরিমানা দিতে হবে। দেশীয় উৎস থেকে গ্যাস দেওয়া, এলএনজি আনা, প্রতি মুহূর্তকে চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়ে গ্যাস বিজনেসটা করতে হচ্ছে। 

তিনি বলেন, আমার এই গ্যাস বিজনেসটা দাঁড়াবে, যদি আমার সম্মানিত গ্রাহকরা যারা আছেন তারা যথাযথ বিচারিকভাবে গ্যাসটা নেন, এটির মূল্য যথাযথভাবে পরিশোধ করেন, বকেয়া যেন না হয়। আশা করি আপনারা বকেয়া রাখবেন না, তারপরও যদি কেউ বকেয়া রাখেন তবে আমরা কঠিনভাবে আইন প্রয়োগ করতে বাধ্য হব। আমরা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেব, লাইন কেটে দিতে বাধ্য হব। একবার লাইন কেটে দেওয়ার পর যাতে আর লাইন না পায়, প্রয়োজন হলে আইন সংশোধন করে সে ব্যবস্থাও আমরা করব। তিনি বলেন, গ্রাহকরা যদি পরিমিত গ্যাস ব্যবহার করে এবং নিয়মিত বিল পরিশোধ করে তাহলে প্রতি বছর ৩ হাজার ১৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহের যে পরিকল্পনা নিয়েছি তা ২০২৪-২৫ সাল এবং ২০২৬ সালের মাঝামাঝি বা শেষ পর্যায়ে গিয়েও চলবে। পর্যায়ক্রমে আরও বাড়বে। তিনি অবৈধ গ্যাস ব্যবহার থেকে বিরত থেকে পেট্রোবাংলার পাশে থাকার আহ্বান জানান। 

পেট্রোবাংলার আয়োজনে অনুষ্ঠিত ওই মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন পেট্রোবাংলার নৈতিকতা কমিটির সভাপতি ও পরিচালক (প্রশাসন) এ.কে.এম মিজানুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মাইনস) প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান খান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক, টিজিটিডিপিএলসি প্রকৌশলী মো. হারুনুর রশিদ মোল্লাহ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পেট্রোবাংলার মহাব্যবস্থাপক বিশ্বজিৎ সাহা।
 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম