Logo
Logo
×

সারাদেশ

রেমালের তাণ্ডবে নষ্ট সাড়ে ১১ কোটি টাকার পান

Icon

নুরুল আহাদ অনিক, বরগুনা

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৪, ০৪:২৭ পিএম

রেমালের তাণ্ডবে নষ্ট সাড়ে ১১ কোটি টাকার পান

বরগুনায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে ধ্বংস হয়েছে শত শত পানের বরজ। এতে কর্মহীন হয়েছেন সাড়ে তিন হাজার চাষি। তবে এসব পান চাষিদের জন্য কোনো প্রকল্প না থাকায় সহযোগিতার সুযোগ নেই কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ বছর বরগুনার বিভিন্ন এলাকায় পান চাষ হয়েছে ৩৬৮ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে রেমালের প্রভাবে সম্পূর্ণ ক্ষতি হয়েছে ১৮৪ হেক্টর বরজ। এতে পান উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে ৭৩৬ মেট্রিকটন, যার আর্থিক ক্ষতি প্রায় সাড়ে ১১ কোটি টাকা। এতে বরগুনার প্রায় সাড়ে ৩ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। 

এছাড়া রেমালের প্রভাবে অন্যান্য ফসলের মধ্যে গ্রীষ্মকালীন শাকসবজি ১ হাজার ৭৯৬, আউশ বীজতলা ১ হাজার ৭৬, রোপা আউশ ১৩ হাজার ৬৬, মরিচ ২৬৫, হলুদ ২৬, কলা ৩৫, পেঁপে সাড়ে ৩৩ ও আম চাষে ক্ষতি হয়েছে সাড়ে ৭ হেক্টর জমি। মোট ৪ হাজার ৭৮৯ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে ৪৮ হাজার ৫৭২ মেট্রিকটন ফসল, যার আর্থিক মূল্য ১৭৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। তবে এসব চাষিদের ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে সহায়তা পেলেও পান চাষিদের জন্য নেই কোনো ধরনের প্রকল্প। এতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে পানের জন্য সরাসরি কোনো সহযোগিতাই পাবেন না এ অঞ্চলের পান চাষিরা।

সরেজমিনে বরগুনা সদর উপজেলার ৮ নম্বর সদর ইউনিয়নের হেউলিবুনিয়া নামক এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সোমবার থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত চলা রেমালের তাণ্ডবে অসংখ্য পানের বরজ সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাটকাঠি দিয়ে তৈরি অনেক বরজই তীব্র ঝড়ো হাওয়ায় ভেঙে গিয়ে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। 

দক্ষিণ হেউলিবুনিয়া এলাকার পান চাষি মো. টিপু সুলতান বলেন, আমাদের এলাকায় অসংখ্য বরজের ক্ষতি হয়েছে। আমার তিনটি বরজের মধ্যে দুইটিই একদম মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। আমার লেনদেন ভালো থাকায় তিনটি ব্যাংক থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে পানের বরজ করেছি। এতদিন ব্যাংকের ঋণ ঠিকভাবেই পরিশোধ করেছি, কিন্তু এখন কি হবে আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। বরজ দুটি ঠিক করতে প্রায় দুই লাখ টাকা খরচ হবে; এ টাকা আমি এখন কোথায় পাব। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. আবু সৈয়দ মো. জোবায়দুল আলম বলেন, বরগুনায় প্রায় ৪০০ হেক্টরের অধিক জমিতে পানের চাষ হয়। আমাদের মাঠ পর্যায়ের হিসাব অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে পান চাষিরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে পান চাষিদের প্রায় সাড়ে ১১ কোটি টাকার ক্ষতি হলেও আমাদের দপ্তরে পানের ওপরে কোনো প্রকল্প না থাকায় তাদের সরাসরি সাহায্য সহযোগিতা করার সুযোগ কম। তবে আমরা সরকারি প্রণোদনা পেলে ক্ষতিগ্রস্ত পান চাষিদের কৃষক হিসেবে সহায়তা করতে পারি। এছাড়া সরাসরি পান চাষি হিসেবে তাদের কোনো সহায়তার সুযোগ নেই।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম