বালির স্তূপে প্রতিবন্ধী শিশুকে কুড়িয়ে পেলেন শিলা-রাব্বি দম্পতি
রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ মে ২০২৪, ১০:৩৮ পিএম
জন্মগত বিরল রোগে আক্রান্ত ৭ মাস বয়সি প্রতিবন্ধী শিশু বালির স্তূপে পড়ে কাঁদছিলেন। হয়তো কোনো পাষণ্ড ফেলে গেছেন প্রতিবন্ধী শিশু বলে। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের নলপাথর এলাকায় ঢাকা বাইপাস সড়কের হাজারও যানবাহন, যাত্রী সাধারণের সেই পথ ধরে যাতায়াত থাকলেও নজরে পড়েনি কারো।
যদিও কাঞ্চনের বাসিন্দা শিলা-রাব্বি দম্পতির মানবিক দৃষ্টি কাড়তে পেরেছে শিশুটি। তারা কুড়িয়ে নিয়ে বাসায় লালনপালনের চেষ্টা করেন। তবে অসুস্থ হওয়ায় দ্বারস্থ হন রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার। চলছে শিশুটির চিকিৎসা ও আশ্রয়ণের কাজ।
কাঞ্চন পৌরসভার চাঁন টেক্সটাইল এলাকার বাসিন্দা গৃহিণী শিলা জানান, উপজেলার ভুলতা গাউছিয়া মার্কেট থেকে বাইকযোগে তার স্বামী রাব্বি মিয়াসহ বাসায় ফিরছিলেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ঢাকা বাইপাস সড়কের নলপাথর এলাকায় বালির গদির পাশে বালির স্তূপে একটি শিশুর কান্নার শব্দ পান। তারা বাইক থামিয়ে কাছে গিয়ে দেখতে পান একটি শিশু। তবে শারীরিক প্রতিবন্ধী। কাউকে আশপাশে না পেয়ে তারা নিজ বাসায় নিয়ে আসেন। যত্ন করে লালনের চেষ্টা করেন; কিন্তু শিশুটি অসুস্থ থাকায়, পরিচয় না পাওয়ায় প্রথমে ৯৯৯ নম্বরে কল দেন। সেখান থেকে জিডি করা ও ৩৩৩ তে কল দেওয়ার পরামর্শ দিলেও তাতে কাজ হয়নি।
এরপর শিলা তার ফেসবুকে শিশু পাওয়ার বিষয়ে স্ট্যাটাস দেন। সেখানেও কাউকে না পেয়ে ২ দিন পর ২৫ মে সকালে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান মাহমুদ রাসেলের কাছে নিয়ে যান তারা।
এ সময় শিলা বলেন, শিশুটি অসুস্থ বলেই হয়তো তার মা বাবা এভাবে পাষণ্ডের মতো ফেলে গেছে; যা হৃদয়বিদারক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান মাহমুদ রাসেল বলেন, শিলা ও রাব্বি দম্পতি শিশুটিকে পেয়ে তাদের বাসায় গত ২ দিন লালন পালন করেছেন। সমাজে কিছু মানুষ যেমন অমানবিক হয়ে বাচ্চা ফেলে যায়, তেমনি মানবিক লোকও থাকেন। যাদের আল্লাহ এভাবে রক্ষা করেন। আমরা দেখলাম বাচ্চাটি অসুস্থ৷ তাই প্রথমে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আপাতত চিকিৎসাধীন। পরে সমাজসেবা কর্মকর্তার মাধ্যমে ছোটমণি নিবাসে দেওয়ার চেষ্টা করব।
এ বিষয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আইভী ফেরদৌস শোভা বলেন, শিশুটি দেখলাম। প্রাথমিক চিকিৎসা দিচ্ছি। তবে শিশুটি জন্মগতভাবে হাইডোকাফালাক্সে আক্রান্ত। প্রয়োজনে তাকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হবে।
সমাজসেবা কর্মকর্তা ইশরাত জাহান ভুঁইয়া বলেন, কোথাও শিশুদের সমস্যা দেখলে ১০৯৮ নাম্বারে জরুরি সেবার জন্য কল দিতে হয়। আমরা শিশুটির আশ্রয়ণের ব্যবস্থা করব।