খুলনার রংমিস্ত্রিই হচ্ছেন ভারতে আটক কসাই জিহাদ
নূর ইসলাম রকি, খুলনা
প্রকাশ: ২৪ মে ২০২৪, ১০:০৮ পিএম
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ-সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যায় জিহাদ হাওলাদার ওরফে কসাই জিহাদকে আটক করেছে ভারতীয় পুলিশ। প্রাথমিকভাবে সংসদ-সদস্যের শরীর থেকে মাংস আলাদা করার কাজে জিহাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। যার কারণে কলকাতা পুলিশ জিহাদকে নিয়ে আনারের লাশ উদ্ধারের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে।
আটক জিহাদ হাওলাদার খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। এলাকায় জিহাদ রংমিস্ত্রি হিসাবে পরিচিত। তার বাবা জয়নাল আবেদীন হাওলাদারও পেশায় রংমিস্ত্রি ছিলেন। তবে বয়সের ভারে তিনি এখন আর কাজ করতে পারেন না। জিহাদরা চার ভাই এবং এক বোন। তার ভাইয়েরা স্কুল ও মাদ্রাসায় চাকরি করেন। শুক্রবার সকালে সংসদ-সদস্য হত্যা মামলায় জিহাদ আটকের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর উৎসুক এলাকাবাসী তাদের বাসায় আসতে শুরু করেন।
বারাকপুর ইউনিয়নের একাধিক মানুষ যুগান্তরকে জানান, এলাকায় সে রংমিস্ত্রি হিসাবে পরিচিত ছিল। স্থানীয় একজন জনপ্রতিনিধির সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে হত্যা প্রচেষ্টা মামলার আসামি হন। এছাড়াও মারামারি, ডাকাতিসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
তবে দিঘলিয়া থানা পুলিশের দাবি, জিহাদের নামে এখন অবধি তিনটি মামলা পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ২০২০ সালের হত্যা প্রচেষ্টা ও মারামারি মামলা এবং ২০২৩ সালে একটি অস্ত্র মামলা রয়েছে। জিহাদ বছরখানেক ধরেই এলাকা থেকে নিরুদ্দেশ রয়েছে। আরও জানা যায়, জিহাদ অবৈধভাবে ভারতে ছিল। সেখানে সে কসাই কাজের সঙ্গে জড়িত ছিল। তবে সে বাড়ির সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করতেন না। সর্বশেষ ৯ মাস আগে মুঠোফোনে তার স্ত্রীর কাছে ফোন করে ছেলের খবর নিয়েছেন। এমনকি বাড়িতে কোনো টাকা-পয়সাও পাঠাতেন না জিহাদ। এদিকে জিহাদের এমন কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ হয়েছেন তার পিতা জয়নাল আবেদীন হাওলাদার। তিনি ছেলের এমন কর্মকাণ্ডের বিচার চেয়েছেন।
জিহাদ হাওলাদারের বাবা জয়নাল আবেদীন হাওলাদার যুগান্তরকে বলেন, আমার সঙ্গে বহুদিন ধরে তার কথা হয়নি। ঢাকায় একটি ঝামেলার পর জেলে ছিল। তার কারণে আমার পরিবার শেষ হয়ে গেছে। তার এই কর্মকাণ্ডে আমরা ক্ষুব্ধ। তার মৃত্যু হয়ে যাক। এমন ছেলে আমার দরকার নেই।
জিহাদ হাওলাদারের স্ত্রী মুন্নী বেগম যুগান্তরকে জানান, ২০১৯ সালে প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমে জিহাদের সঙ্গে বিয়ে হয়। সে সময় জিহাদ রংমিস্ত্রির কাজ করত। ২০২১ সালের ২৬ অক্টোবর একটা ছেলে হয়। সর্বশেষ সাড়ে ৯ মাস আগে জিহাদের সঙ্গে কথা হয় তার। এখানে তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা ছিল।
ঢাকার একটি মামলায় বাড়িতে কয়েকবার ডিবি পুলিশ এসেছিল। শুনেছি ঢাকায় একটি ডাকাতি মামলা ছিল। প্রায় ১ বছর জিহাদ এখান থেকে চলে গেছে। কোনোদিন কোনো টাকা-পয়সাও পাঠায় না। শুক্রবার বিভিন্ন মিডিয়ায় জিহাদের ছবি দেখে আমরা আটকের খবর পাই। তিনি দাবি করেন, জিহাদ এমন কাজ করতে পারে না। তাকে ফাঁসানো হয়েছে অথবা চাপ দিয়ে এমন কাজ করাতে বাধ্য করা হতে পারে।