সিলেটে নতুন হোল্ডিং ট্যাক্স বাতিল হচ্ছে না। তবে ট্যাক্স নিয়ে কোনো আপত্তি থাকলে ভুক্তভোগীরা নির্ধারিত ‘ফরম ডি’ পূরণ করে সিটি করপোরেশনে জানাতে পারবেন।
পরে রিভিউ বোর্ডে তাদের আপত্তির বিষয়টি শুনানির মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হবে। এমনটি জানিয়েছেন সিটি করপোরেশনের রাজস্ব শাখার সংশ্লিষ্টরা।
সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর বলেন, ভুক্তভোগীদের আপত্তি জানানোর নির্ধারিত সময়সীমা ছিল ১৪ মে পর্যন্ত। এটা বাড়িয়ে ২৮ মে করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে ভবন মালিকদের আপত্তিসংক্রান্ত আবেদন জমা দিতে হবে।
এরপর রিভিউ বোর্ডে শুনানির মাধ্যমে তাদের হোল্ডিং ট্যাক্স সিলেটের প্রেক্ষাপটে অবশ্যই যৌক্তিক একটা জায়গায় নিয়ে আসা হবে।
এর আগে পঞ্চবার্ষিক কর পুনর্মূল্যায়নের পর গত ৩০ এপ্রিল থেকে সিটি করপোরেশন নতুন নির্ধারিত বার্ষিক গৃহকর (হোল্ডিং ট্যাক্স) অনুযায়ী ভবন মালিকদের কর পরিশোধের নোটিশ দেওয়া শুরু করে। এরপর নগরের প্রায় পৌনে এক লাখ ভবন মালিকের হোল্ডিং ট্যাক্স ৫ থেকে ৫০০ গুণ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
এ নিয়ে নগরজুড়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এর পর থেকে প্রতিদিন নগরের বিভিন্ন সংগঠন হোল্ডিং ট্যাক্স বাতিলের দাবিতে আন্দোলন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী গত রোববার দুপুরে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে রিভিউয়ের মাধ্যমে হোল্ডিং ট্যাক্স সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসার ঘোষণা দেন। তবে আন্দোলনরত ব্যক্তিরা নতুন গৃহকর পুরোপুরি বাতিল করে পুনরায় নির্ধারণের দাবি জানিয়ে আসছেন।
এদিকে নতুন হোল্ডিং ট্যাক্সের সিদ্ধান্ত বাতিল না করার বিষয়টি ‘সিটি করপোরেশনের একগুঁয়েমি’ বলে গণমাধ্যমের কাছে মন্তব্য করেছেন সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম। তিনি নতুন হোল্ডিং ট্যাক্স বাতিলের দাবিতে গড়ে ওঠা ‘সিলেটের নাগরিকবৃন্দ’ নামের সংগঠনের আহ্বায়ক।
এমাদ উল্লাহ বলেন, এক লাফে কয়েকশ গুণ হোল্ডিং ট্যাক্স বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি নজিরবিহীন ঘটনা। জনস্বার্থের পরিপন্থি এ সিদ্ধান্ত অবশ্যই বাতিল করা উচিত। আমরা রিভিউ চাচ্ছি না, রিঅ্যাসেসমেন্ট চাচ্ছি। কিন্তু সিটি করপোরেশন মাইকিং করে প্রচারণা চালাচ্ছে, ২৮ মের মধ্যে আপিল না করলে হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে আর কোনো আপত্তি গ্রহণ করা হবে না। এভাবে আতঙ্ক সৃষ্টির বিষয়টি খুবই উদ্বেগের। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। আমাদের স্পষ্ট কথা, হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণে রিঅ্যাসেসমেন্ট করতে হবে। আর রিঅ্যাসেসমেন্ট হতে হবে ভবন মালিকদের আগের কর পরিশোধের ভিত্তিতে।