পাবনা মেডিকেল কলেজে (পামেক) হল ত্যাগে বাধ্য করতে এক ছাত্রলীগ নেতার ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে কলেজের ছাত্রদের জন্য প্রস্তাবিত বঙ্গবন্ধু হলের গ্রাউন্ড ফ্লোরের একটি কক্ষে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
হল কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ২০২৩-২৪ সেশনের নতুন শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট কাটাতে কিছু আসন ফাঁকা করতে গত ৮ মে শিক্ষার্থীদের একটি নোটিশ দেয় হল কর্তৃপক্ষ।
এতে পাবনার স্থানীয় শিক্ষার্থীদের সাময়িকভাবে হল ছেড়ে নিজ বাসা থেকে কলেজে যাতায়াত করতে বলা হয়। একই সঙ্গে হল সুপারদের জন্য বরাদ্দকৃত রুমগুলোতে অবস্থান করা শিক্ষার্থীদের কক্ষ ছেড়ে নির্দেশিত অন্য কক্ষে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়।
হল সুপারদের জন্য নির্ধারিত তিনটি রুমের একটিতে থাকেন ৫ম বর্ষের ছাত্র কলেজ শাখা ছাত্রলীগের ২ নম্বর সাংগঠনিক সম্পাদক রাহুল কুমার দাশ। অন্য দুটি রুমে ছাত্রলীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের দুজন অনুসারী থাকেন।
রাহুল কুমার দাশের অভিযোগ, গত ৯ মে রাত দেড়টার দিকে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক অভিতোষ চক্রবর্তী ও ৩ নম্বর সাংগঠনিক সম্পাদক নাহিন্নবীর নেতৃত্বে ৩০-৪০ জনের একটি দল রাহুল কুমার দাশকে রুম থেকে বের করে দিতে চায়। পরে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা এগিয়ে আসলে রাহুল তাদের মারধর করে।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাহুল কুমার দাশ বলেন, ‘পরীক্ষা থাকায় আমি সেদিন কক্ষ পরিবর্তন করতে পারিনি। বিষয়টি হল কর্তৃপক্ষের ব্যাপার। অথচ কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুদ আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক আল আমিন আল তামিমের নির্দেশে অভিতোষ ও তাহার নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয়েছে। ছাত্রলীগের নেতা হয়ে আমার যদি নিরাপত্তা না থাকে, তবে এদের কাছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা কীভাবে নিরাপদ?’
তিনি আরও বলেন, ‘শুক্রবার কলেজ বন্ধ থাকায় লিখিত অভিযোগ দিতে পারিনি। কলেজ খুললে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিব। তবে হল সুপার ও প্রিন্সিপাল স্যারকে খুদে বার্তায় বিষয়টি জানিয়েছি। আমি এর বিচার চাই, একই সঙ্গে হল ও ক্যাম্পাসে সব শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা চাই।’
পাবনা মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক অভিতোষ চক্রবর্তীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে মোবাইলে কোনো কথা বলব না। আপনার যদি কিছু বলার বা জানার থাকে, তাহলে সরাসরি কলেজে এসে কথা বলেন। আসার সময় আপনার পরিচয়পত্র সঙ্গে নিয়ে আসবেন। আপনি কীসের সাংবাদিক সেই পরিচয়টা তো আগে নিশ্চিত হতে হবে।’
এ ব্যাপারে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুদ আহমেদ বলেন, এটা একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। হামলা, ভাঙচুর বা মারধরের মতো কিছু ঘটেনি। এ ঘটনায় আমাদের সংশ্লিষ্টতাও নেই।
কলেজের হল সুপার বিপ্লব কুমার সাহা বলেন, ‘আমাদের আসন সংকট আছে। এটা সম্পূর্ণ কলেজ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত ও দায়িত্ব। সেখানে ছাত্রলীগের নেতারা কোনো শিক্ষার্থীকে হল থেকে বের করে দেওয়া মারধর করা আইন বিরুদ্ধ কাজ। আমার খুব শিগগির তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’
পাবনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. উবায়দুল্লাহ ইবনে আলী বলেন, কাউকে হল বা রুম থেকে বের করে দিতে কোনো শিক্ষার্থী বা ছাত্র নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।