‘শুধু শুধু কষ্ট করে ভোট কেন্দ্রে আসবেন না, বাড়িতে ঘুমাবেন’
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১০ মে ২০২৪, ১০:২৯ পিএম
ফাইল ছবি
উপজেলা নির্বাচনে নিজের পছন্দের তিন প্রার্থীকে ভোট না দিলে ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে নিষেধ করে হুমকি দিয়েছেন নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জা।
বৃহস্পতিবার বিকালে তার সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মোহাম্মদ গোলাম শরীফ চৌধুরী ওরফে পিপুলের সমর্থনে চরপার্বতী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে আয়োজিত কর্মিসভায় তিনি একথা বলেন।
আরও পড়ুন: স্পিকারের কাছে নালিশ: মুজিবুল হকের উদ্দেশে যা বললেন ব্যারিস্টার সুমন
তার বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। কাদের মির্জা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই।
নির্বাচনি আচরণবিধি অনুযায়ী প্রতীক বরাদ্দের আগে কোনো প্রার্থীর পক্ষে আনুষ্ঠানিক প্রচার সভা কিংবা কর্মিসভা করার সুযোগ নেই। এছাড়া প্রচারকালে ভোট না দিলে ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে নিষেধ করাও বেআইনি। এ নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইসমাঈল শুক্রবার দুপুরে যুগান্তরকে বলেন, বিষয়টি তার নজরে আসেনি। তিনি আজই খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিতে সংশি্লষ্ট নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে বলবেন।
১ মিনিট ১৬ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, আবদুল কাদের মির্জা উপস্থিত ভোটারদের উদ্দেশে বলেন, আমার কথা সোজাসুজি। বাঁকা কথা আমি বলি না। পরে ভেজাল হয়ে যাবে। কী বলছি বুঝেছেন? এমনি ভালো আছেন। ... ভোট যদি আমাদের তিনজনকে দেন, তাহলে কেন্দ্রে আসবেন। না হয় পরে ঝামেলা হলে আমি দায়িত্ব নিতে পারব না। ... শুধু শুধু কষ্ট করে কেন্দ্রে আসবেন না। বাড়িতে ঘুমাবেন। তাহলে বাকি ৫ বছর নিরাপদে থাকতে পারবেন।
হুমকি দিয়ে এমন বক্তব্য দেওয়ার বিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও ফোন ধরেননি কাদের মির্জা।
তার এমন বক্তব্যের নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী মিজানুর রহমান বাদল। তিনি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, এখন প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময়সীমাও শেষ হয়নি। এমন অবস্থায় কাদের মির্জা ক্ষমতার অপব্যবহার করে তার মনোনীত প্রার্থীদের পক্ষে নির্বাচনি প্রচার চালাচ্ছেন। তার প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার জন্য ভোটারদের নানা হুমকি দিচ্ছেন। আমি এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করব।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন ২৯ মে। এতে চেয়ারম্যান পদে তিন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন মিজানুর রহমান, উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক মোহাম্মদ গোলাম শরীফ চৌধুরী ও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ওমর আলী।
এর মধ্যে মোহাম্মদ গোলাম শরীফ চেৌধুরী আবদুল কাদের মির্জার সমর্থিত প্রার্থী। তিনি গোলাম শরীফ ছাড়াও ভাইস চেয়ারম্যান পদে জসিম উদ্দিন ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে পারভীন আক্তারকে সমর্থন দিচ্ছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। তিনজনকে জেতানোর জন্য নিজেই প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশ করছেন।