প্রার্থীকে ‘কুলাঙ্গার’ বলায় মেয়র-চেয়ারম্যানকে শোকজ
আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭ মে ২০২৪, ০৬:৪৩ পিএম
নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল ও উপজেলার মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিনকে শোকজ করা হয়েছে। তাদের দুজনকে আগামী ৮ মে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির কাছে সশরীরে উপস্থিত হয়ে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম এ কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেন।
মঙ্গলবার রিটার্নিং অফিসার স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, আখাউড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী মুরাদ হোসেন ভূঁইয়ার সমর্থনে আনারস প্রতীকের পক্ষ নিয়ে সোমবার বিকালে মোগড়া ইউনিয়ন কার্যালয়ে পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন আচরণবিধি ভঙ্গ করে নির্বাচনি প্রচারণার বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে প্রতিদ্বন্দ্বী ঘোড়া প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মনির হোসেনকে ‘কুলাঙ্গার’ বলে আখ্যায়িত করেছেন পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তাদের দুজনকেই কারণ দর্শাতে বলা হয়।
রিটার্নিং অফিসার স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, সোশ্যাল মিডিয়া ও মিডিয়া সেল ব্রাহ্মণবাড়িয়া হতে প্রাপ্ত তথ্যমতে আখাউড়া পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল ও মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন দুজনেই নির্বাচনি বিধিনিষেধ উপেক্ষা করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই বৈঠকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল বলেন, ‘এবার আর কোনো নয়ছয় নয়। আমরা দেখবো কোন ওয়ার্ডে কোন গ্রামে কে জামায়াত-বিএনপি ও এন্টি আওয়ামী লীগ। আমরা তাদেরকে চিহ্নিত করব। আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে জামায়াত-বিএনপি করবে, দলের দুঃসময়ে থাকবে না সেটা তো মানা হবে না।’
উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী মনির হোসেনকে কুলাঙ্গার হিসেবে আখ্যায়িত করে তাকজিল খলিফা বলেন, ‘আমরা মনিরের মতো কুলাঙ্গার না। তিনি আখাউড়ার কোনো কোনো নেতাকে নাকি লাঞ্ছিত করেছেন! আমি বলব এসবের প্রতিশোধের জন্য প্রস্তুত থাকুন।’
আওয়ামী লীগ সঙ্গে থাকায় মুরাদ হোসেনের জয়ের ব্যাপারে তিনি আশাবাদও ব্যক্ত করেন।
তিনি ছাড়াও বৈঠকে বক্তব্য রাখেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, সাবেক আহবায়ক মো. জয়নাল আবেদীন, সাবেক সভাপতি ও প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর মুরাদের সমর্থনে সরে দাঁড়ানো শেখ বোরহান উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. মনির হোসেন বাবুল ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন প্রমুখ।
এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী মনির হোসেন বলেন, আমি ১৮ বছর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ছিলাম। বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক। আমি তিনবার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলাম। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা নির্বাচন উন্মুক্ত এবং অবাধ সুষ্ঠু করার ঘোষণা দেওয়ায় আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। মেয়রের এমন বক্তব্য দুঃখজনক, তিনি কিভাবে এমন বক্তব্য দিতে পারেন।
উল্লেখ্য, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপে আগামী ২১ মে ভোটগ্রহণ হবে। এ নির্বাচনে আখাউড়া উপজেলায় কাগজে কলমে তিনজন প্রার্থী থাকলেও শেখ বোরহান উদ্দিন সরে দাঁড়ানোয় দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহবায়ক ও মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মনির হোসেন ও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক মো. মুরাদ হোসেনের মধ্যে লড়াই হবে। মনির হোসেন ঘোড়া প্রতীক ও মুরাদ হোসেন আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়াই করছেন।