‘বরফ, মালাই বরফ’, ৫৫ বছর ধরে হেঁকে যাচ্ছেন জমির
বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৩৬ পিএম
রাজশাহীর বাঘায় ৫৫ বছর ধরে গ্রামে গ্রামে আইসক্রিম (বরফ) বিক্রি করেন জমির উদ্দিন (৮২)। তিনি বাঘা পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের গাওপাড়া গ্রামের মৃত কানু কারিগরের ছেলে।
জানা যায়, আগে মাথায় করে গ্রামে ঘুরে আইসক্রিম বিক্রি করতেন। সময় পরিবর্তনের সঙ্গে ও বয়সের ভারে ভ্যানের সঙ্গে টিনের আবরণ দিয়ে ঢাকা কাঠের বাক্স নিয়ে আইসক্রিম বিক্রি করেন। মাঝে মধ্যে হাঁক দিচ্ছেন ‘বরফ, মালাই বরফ’। এ কথা শুনে তার কাছে ছুটে আসছে শিশু ও নানা বয়সিরা। ৫৫ বছর ধরে জমির উদ্দিন গ্রামে গ্রামে আইসক্রিম বিক্রি করছেন।
আড়ানী পৌর বাজারের গোবিন্দ শীলের সেলুনের দোকানের সামনে রাস্তায় জমির উদ্দিনের সঙ্গে কথা হয়। এ সময় তিনি জানান, দেশ স্বাধীন হওয়ার বছর থেকে আইসক্রিম বিক্রি শুরু করেন। এখন পর্যন্ত এ পেশাতেই রয়েছেন।
প্রতিদিন সকালে কারখানা থেকে বাক্সে করে আইসক্রিম কিনে আনেন। তারপর গ্রামে ঘুরে বিক্রি করেন। শুরুর দিকে ৫ পয়সায় একটি আইসক্রিম বিক্রি করেছেন। পর্যায়ক্রমে ১০ পয়সা, ২৫ পয়সা, ৫০ পয়সা, ১ টাকা করে আইসক্রিম বিক্রি করেছেন। এখন ৫ টাকা ও ১০ টাকায় আইসক্রিম বিক্রি করেন।
এক সময় ডিম, চাল, গম, আলু, পেঁয়াজ ও মৌসুমি ফসলের বিনিময়ে আইসক্রিম বিক্রি করেছেন। জমির উদ্দিন আইসক্রিম বিক্রি করে দুই ছেলে ও চার মেয়েকে বড় করে বিয়ে দিয়েছেন। তারা সবাই এখন আদালাভাবে সংসার করেন। এ ব্যবসায় তার স্ত্রী রশিদা বেগম সার্বিক সহযোগিতা করেন। তার বাড়ি উপজেলা সদরের বাঘা পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের গাওপাড়া হলেও তিনি আড়ানী পৌর এলাকায় আইসক্রিম বিক্রি করেন। আর ৫৫ বছর ধরে হেঁকে যাচ্ছেন- ‘বরফ, মালাই বরফ।’
তিনি আরও জানান, দুধ, চিনি, নারিকেল ও বিস্কুট দিয়ে আইসক্রিম তৈরি করেন। এগুলোর চাহিদা বেশি। বয়সের কারণে ওজন বহন করতে সমস্যা হয়। তাই আইসক্রিম কারখানা থেকে ভ্যানের সঙ্গে টিনের আবরণ দিয়ে ঢাকা কাঠের বাক্স নিয়ে আইসক্রিম বিক্রি করেন।
এ বিষয়ে আড়ানী পৌর এলাকার শিরিন সুলতানা বলেন, জমির উদ্দিন চাচাকে দীর্ঘদিন ধরে আইসক্রিম বিক্রি করতে দেখছি। আগে স্কুলগেটের সামনে তার কাছ থেকে আইসক্রিম কিনে খেয়েছি। তার পেশার প্রতি ভালোবাসা রয়েছে বলে এত দিন ধরে তিনি একই পেশায় আছেন।