প্রচণ্ড গরমের কারণে রাতে ধান কাটছেন কৃষকরা
শরীয়তপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১১:০১ পিএম
তীব্র দাবদাহে শরীয়তপুরে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। দিনের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় অতিরিক্ত গরমের কারণে দিনের বেলা ধান কাটতে পারছেন না তারা, তাই বাধ্য হয়ে রাতে ধান কাটছেন শরীয়তপুরের কৃষকরা। শুক্রবার শরীয়তপুরে সর্বোচ্চ ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও স্থানীয় কৃষকরা জানান, তীব্র দাবদাহে শরীয়তপুরে কৃষি শ্রমিকের সংকট চরমে পৌঁছেছে। কয়েক দিন ধরে আগাম জাতের ধান পাক ধরায় কৃষকরা কাটা শুরু করেছেন। গরমের কারণে শ্রমিকের অভাবে তারা ধান ঘরে তুলতে পারছেন না।
ভেদরগঞ্জ এলাকার ধান চাষি মিজানুর রহমান জানান, তীব্র দাবদাহের প্রভাব পড়েছে শরীয়তপুরেও। এর মধ্যে আবার জেলার অধিকাংশ জমিতে বোরোধান পাকতে শুরু করেছে। তবে অতিরিক্ত গরমে দিনের বেলা ‘হিট স্ট্রোক’সহ বিভিন্ন অসুস্থতার ভয়ে ধান কাটতে পারছেন না চাষিরা। তাই রাতের বেলায় চাঁদের আলোয় ধান কাটতে দেখা গেছে তাদের। অতিরিক্ত গরমে শ্রমিক না পেয়ে নিজেরাই নিজেদের জমির ধান কাটছেন। যতদিন চাঁদের আলো থাকবে, ততদিন এ ধান কাটবেন বলে জানান তারা।
শরীয়তপুর সদর উপজেলার সোনামুখি এলাকার চাষি শাহ আলম চৌকিদার ও আলম ফকির বলেন, ভোরে মাঠে গিয়ে ধানের জমিতে কাজ শুরু করতেই সূর্য উঠে যায়। বেশি সময় মাঠে থাকা অসম্ভব। অতিরিক্ত তাপের কারণে ধানগাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলন বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। জমিতে পানি জমিয়ে রাখলেও শুকিয়ে যাচ্ছে। তাই ৪ জন শ্রমিক নিয়ে রাতে ধান কাটি। রাত ৯টা থেকে শুরু করে ভোর ৫টা পর্যন্ত চলে এ ধান কাটা।
জেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলার ছয়টি উপজেলায় ২৫ হাজার ৫২৬ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৫ হাজার ৫৮৫, নড়িয়া উপজেলায় ৫ হাজার ৪২০, জাজিরা উপজেলায় ১ হাজার ১৫১, ভেদরগঞ্জ উপজেলার ৪ হাজার ৬৫০, ডামুড্যা উপজেলায় ৩ হাজার ৮২১ ও গোসাইরহাট উপজেলায় ৪ হাজার ৮৯৮ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্যান) মোহাম্মদ রিয়াজুর রহমান বলেন, প্রচণ্ড দাবদাহে আমাদের কৃষকদের দিনের বেলা ধান কাটা খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ অতিরিক্ত গরমে কাজ করলে তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে। তাই যারা এ গরমে মাঠে কাজ করবেন তাদের প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করার পাশাপাশি গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিতে হবে।