যমুনা ও কালিগঙ্গা নদীতে ড্রেজারে বালু উত্তোলন
দৌলতপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০২:২৫ এএম
দৌলতপুরে যমুনা ও কালিগঙ্গা নদীতে থামছে না অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন। মাটি ব্যবসায়ীরা নদী থেকে প্রতিনিয়ত বালু উত্তোলন করে চলেছেন। স্থানীয় প্রশাসন মাসদেড়েক পরপর অভিযান চালিয়ে ড্রেজারের পাইপ বিনষ্ট করে দিলেও পুনরায় বিরতিহীনভাবে চলতে থাকে বালু ব্যবসায়ীদের এ অবৈধ কর্মযজ্ঞ। এতে সরকারি রাস্তা, বসতবাড়ি ও আবাদি জমি নদীভাঙনের হুমকিতে রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাঘুটিয়া ইউনিয়নের রাহাতপুর গ্রামে ইট সলিংয়ের রাস্তার পাশে রয়েছে রাহাতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বসতবাড়ি ও আবাদি জমি। ভাঙন রোধের জন্য জিওব্যাগ ফেলা হলেও নদীতে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করায় ভাঙনের আশঙ্কায় দিন পার করছেন স্থানীয়রা। একই ইউনিয়নের কাটাখালী, পাচুরিয়া বাসাইল এবং চরকাটারী ইউনিয়নের বোর্ডঘর বাজার এলাকায় যমুনা নদীতে অন্তত ১০টি ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করতে দেখা যায় মাটি ব্যবসায়ীদের। এছাড়া যমুনার শাখা নদী কালিগঙ্গার আবুডাঙ্গা, আমতলী, পারমাস্তুল ও চরমাস্তুল গ্রামে আরও সাতটি ড্রেজার দিয়ে করা হচ্ছে বালু উত্তোলন। এসব দেখার যেন কেউ নেই। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিলেও বন্ধ হচ্ছে না ড্রেজার মেশিন। বালু ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী হওয়ায় প্রতিবাদ করার সাহস পান না ভুক্তভোগীরা। জানা যায়, উপজেলার বাঘুটিয়া কাচাই শেখ (বিকেএস) উচ্চবিদ্যালয়ের অফিস সহকারী মঞ্জু মাস্টার দীর্ঘদিন ধরে এ অবৈধ মাটি ব্যবসায়ের সঙ্গে জড়িত। এ ব্যবসা করে তিনি হয়েছেন অঢেল টাকার মালিক। এছাড়া জিয়নপুর, খলসী ও বাঘুটিয়ার রুশনাই, নাসির, হারুন, মানিকসহ আরও অনেকে রয়েছেন এ চক্রের সদস্য।
স্থানীয়রা আরও জানান, প্রশাসন দায়সারা অভিযান চালিয়ে ড্রেজারের পাইপ ভেঙে দেয়। পরে ব্যবসায়ীরা স্বল্প খরচে সে পাইপ মেরামত করে পুনরায় শুরু করেন বালু উত্তোলন। এমনিতেই যমুনা ও শাখা নদী কালিগঙ্গা খুবই ভাঙনপ্রবণ। প্রত্যেক বছরই বর্ষার শুরুতে আবাদি জমি, বসতভিটা, সরকারি রাস্তা ও স্থাপনা নদীভাঙনের কবলে পড়ে বিলীন হচ্ছে। ড্রেজার মেশিনে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করলে আরও বেশি নদীভাঙনের সৃষ্টি হবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। কাটাখালী গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষক জানান, তার কয়েক বিঘা জমি যমুনা নদীতে ভেঙে গেছে। এখানে অনেকদিন ধরে ড্রেজার চলছে। অনেকে ড্রেজার মালিকদের সঙ্গে দেখা করে চলে যান। ড্রেজার বন্ধ হয় না।’
বাঘুটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. আমজাদ হোসেন বলেন, ড্রেজার মেশিনে বালু কাটায় বর্ষার শুরুতেই নদীভাঙনের প্রবণতা বেড়ে গেছে। আগের ইউএনওকে বারবার বলেও ড্রেজার বন্ধ হয়নি। ড্রেজার মালিকরা অনেক প্রভাবশালী। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন অবৈধ। এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।