Logo
Logo
×

সারাদেশ

রায়পুরের মিনি কক্সবাজারে পর্যটক-দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়

Icon

তাবারক হোসেন আজাদ, রায়পুর (লক্ষ্মীপুর)

প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৩৩ পিএম

রায়পুরের মিনি কক্সবাজারে পর্যটক-দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়

বৃহত্তর নোয়াখালীর ভ্রমণ পিয়াসু পর্যটকের কাছে এখন অনন্য একটি নাম মিনি কক্সবাজার। লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার অতি নিকটে উত্তর চরবংশীর মেঘনার তীরবর্তী আলতাফ মাস্টার ঘাট এলাকাই মূলত মিনি কক্সবাজার নামে পরিচিত।

এবারের ঈদুল ফিতরের ছুটিতে মিনি কক্সবাজার এলাকাটিতে পর্যটক ও দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষণীয়। তার পাশাপাশি জিনের মসজিদ, দালালবাজার খোয়াসাগর দিঘির পাড় ও জমিদার বাড়িটিও পর্যটকদের ভিড়ে মুখরিত পরিবেশ। পাশাপাশি সম্প্রতি উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গড়ে ওঠা রায়পুর-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে স্মার্ট চরপাতা গ্রামের সিংহের পুল এলাকায় শেখ রাসেল শিশু পার্কটিও শিশুদের পদচারনায় মুখরিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ প্রশাসন- সাংবাদিক, ব্যবসায়ীসহ নানান শ্রেণি-পেশার মানুষ মেঘনার পাড়ে আলতাফ মাস্টার ঘাটে দর্শনার্থী হিসেবে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করছেন।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, প্রকৃতির সুন্দরতম নৈসর্গিক এই স্থানটি সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দুটোই দেখা যায়। এছাড়া মেঘনার নদীর পাড়ে অবস্থিত মিনি কক্সবাজার এলাকাটিতে প্রতি মুহূর্তে আছড়ে পড়ছে মেঘনা নদীর মনোলোভা ঢেউ। দর্শনীয় এই স্থান নৈসর্গিক সৌন্দর্যের এক মোহময় লীলাভূমি হিসেবে ব্যাপক পরিচয় লাভ করেছে ইতিমধ্যে।

এখানে প্রতিনিয়ত জেলেরা নৌকা করে মেঘনার ইলিশসহ দেশীয় নানান প্রজাপতির মাছ ধরছে এমন দৃশ্য প্রায় দেখা যায়। এছাড়া মিনি কক্সবাজার এলাকাটিতে দাঁড়িয়ে পশ্চিমে যতদূর চোখ যায় তত দূর নীল আকাশ। এছাড়া রয়েছে পর্যটক ও দর্শনার্থীদের জন্য বসার জায়গা, ঘোড়া গাড়ি, খাবারসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা রয়েছে। পাশাপাশি ফাঁড়ি পুলিশ ও কোস্টগার্ডের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে।

কিভাবে আসবেন মিনি কক্সবাজারে:

লক্ষ্মীপুর হয়ে রায়পুর খুব কাছাকাছি হওয়ায় এক ঘণ্টার মধ্যেই আপনি মিনি কক্সবাজারে আসতে পারবেন। সারাদিন ঘুরে সন্ধ্যায় আবার ঢাকায় ফিরে যেতে পারবেন। আলতাফ মাস্টারের মাছ ঘাট থেকে নদীর ওপারে দক্ষিণে মজুচৌধুরী ঘাট নৌবন্দর এবং পশ্চিমে হায়দরগঞ্জ ও চাঁদপুরের চরবৈরভী ও হাইমচর লঞ্চ টার্মিনাল। লক্ষ্মীপুরের উত্তর তেমহনী থেকে সরাসরি বেড়িবাঁধ পাকা রাস্তা রয়েছে এখানে আসার। এ রুটে অটোরিকশা ও সিএনজি বাস চালু আছে বহুদিন ধরে। ছুটির দিন শুক্রবার রাস্তা ফাঁকা থাকায় দ্রুত পৌঁছানো সম্ভব।

আলতাফ মাস্টার ঘাটে গেলে মনে হবে, আপনার সামনে এক টুকরো কক্সবাজার। সারি সারি বাহারি রঙের ছোট ছোট আম গাছের তলায় পাকা বসার সাজানো। দূরে তাকালে সমুদ্রের বেলাভূমির মতো দৃশ্যের দেখা মিলবে।

এছাড়া মেঘনার উত্তাল ঢেউ আপনার দিকে বারবার এগিয়ে আসবে এমনটাই আপনার মনে হবে। দেখতে পাবেন বড় বড় নৌকা, ছুটে চলা স্পিডবোট- এসব দৃশ্য মুহূর্তেই আপনাকে মুগ্ধ করে তুলবে। ঘাটের কাছাকাছি দুই পাশে রয়েছে খাবার হোটেলের সারি। সেগুলোর সাইনবোর্ডে ঘাটের পরিচিতি ‘মিনি কক্সবাজার।

আপনি চাইলেই আলতাফ মাস্টার ঘাটে গিয়ে স্পিডবোটে মেঘনা নদীর বুকে ঘুরে বেড়াতে পারেন। একটি মাঝারি সাইজের ট্রলার প্রতি ঘণ্টার জন্য ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া নিতে পারে। সেখানকার সূর্যাস্তের দৃশ্য আপনার সারাজীবন মনে থাকবে।

দেশের যেকোনো স্থান থেকে আলতাফ মাস্টারের ঘাটে যাওয়ার সবচেয়ে সুবিধাজনক উপায় হচ্ছে- রায়পুর বাস টার্মিনালে আসার পথে পাটোয়ারী রাস্তার মাথা ও বাসাবাড়ী বাজার দিয়ে সরাসরি আলতাফ মাষটার ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া সিএনজিতে চেপে বসা। আধঘণ্টায় আপনি পৌঁছে যাবেন মাস্টার ঘাটে। ফেরার সময় একই বাসে আবার বিভিন্ন স্থানে চলে আসবেন।

আলতাফ মাস্টারের ঘাটে কিছু খাবারের হোটেল আছে। ইলিশ ১২০ থেকে ২০০ টাকা। বড় সাইজের ইলিশ খেতে চাইলে আগেই অর্ডার দিতে হবে। এ ছাড়াও বোয়াল ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, চিংড়ি ১০০ থেকে ১২০ টাকা।

এখানে যারা আসবেন তাদের একটি বিষয় জানা দরকার, সাঁতার না জানলে গোসল করার সময় মেঘনার বেশি গভীরে যাবেন না। আপনার একটু অসচেতনতায় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম