ঈদে পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত রাঙামাটি
সুশীল প্রসাদ চাকমা, রাঙামাটি
প্রকাশ: ০৭ এপ্রিল ২০২৪, ১০:১২ পিএম
এবারের ঈদে প্রচুর পর্যটকের সমাগম ঘটবে রাঙামাটিতে। ঈদের ছুটির অবকাশযাপনে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটক আসছেন রাঙামাটি। ইতোমধ্যে সরকারি পর্যটন মোটেলসহ শহরের আবাসিক হোটেল মোটেলে ৭০ শতাংশ কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে।
এছাড়া প্রচুর পর্যটক যাচ্ছেন জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার পর্যটনখ্যাত সাজেক ভ্যালির রুইলুই কংলাকপাহাড়েও। পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত রয়েছেন উল্লেখ করে এসব তথ্য জানিয়েছেন পর্যটনসংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, প্রতিবছর ঈদ অবকাশে পর্যটন শহর রাঙামাটি ও সাজেক ভ্যালি ঘুরতে যান প্রচুর পর্যটক। ঘুরতে আসা এসব প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটককে আকৃষ্ট করে রাঙামাটির মনোরম ঝুলন্ত সেতু, স্বচ্ছ জলরাশি কাপ্তাই হ্রদে নৌ-ভ্রমণ, অবারিত মেঘছোঁয়া সবুজ পাহাড় আর পাহাড়ি ঝরনাধারা।
ঘোরার জন্য শহরের আনাচে-কানাচে রয়েছে পর্যটন মোটেল ও হলিডে কমপ্লেক্স, জেলা পুলিশের পলওয়েল পার্ক, ডিসি বাংলো, ডিসি পার্ক, সুখী নীলগঞ্জ, বঙ্গবন্ধু মুর্যাল, রাজবন বিহার, চাকমা রাজার বাড়ি, শহিদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফ স্মৃতি মাজার, সুবলং ঝরনা স্পট, বড়গাঙ, লাভপয়েন্ট, বার্গীলেকসহ বহু দর্শনীয় ও উপভোগ্য স্পট, স্থাপনা ও স্থান।
জেলার কাপ্তাই উপজেলা সদরের আশেপাশে গড়ে তোলা হয়েছে অনেকগুলো মনোরম পর্যটন স্পট। রয়েছে ওয়াগ্গাছড়া চা বাগান। কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়ায় রয়েছে ঠান্ডাছড়ি চা বাগান আর বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উপগ্রহ ভূ-কেন্দ্র।
এছাড়া সৌন্দর্যের অপরূপ প্রকৃতির লীলাভূমি মেঘের রাজ্য সাজেক ভ্যালির রুইলুইপাড়া, পাংখোয়াপাড়া ও কংলাকপাড়া পাহাড়ে রয়েছে শতাধিক কটেজ ও রিসোর্টসহ বহু বিনোদন কেন্দ্র। সাজেক পাহাড়ের উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৮০০ ফুট।
এদিকে সরকারি পর্যটন মোটেল ও হলিডে কমপ্লেক্সসহ রাঙামাটি শহরে রয়েছে শতাধিক আবাসিক হোটেল ও ইকো রিসোর্ট। এবার ঈদের ছুটি ঘিরে ইতোমধ্যে এসব হোটেল মোটেলে ৭০ শতাংশ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তারা আজকালের মধ্যে বুকিং শতভাগ হয়ে যেতে পারে বলেও ধারণা করছেন। সাজেকের প্রায় সব কটেজ ও রিসোর্টেও শতভাগ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
রাঙামাটি পর্যটন মোটেল ও হলিডে কমপ্লেক্স ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, এবার ঈদে রাঙামাটিতে প্রচুর পর্যটকের সমাগম হবে বলে আমরা আশা করছি। আমাদের মোটেলে ইতোমধ্যে ৭০ ভাগ কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। এসব বুকিং ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত রয়েছে। আজকালের মধ্যে শতভাগ বুকিংয়ের সম্ভাবনা আছে। আমাদের পুরো কমপ্লেক্স সাজানো হয়েছে। আমরা পর্যটকদের বরণে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে আছি। প্রস্তুত পর্যটকদের স্বাগত জানাতে।
রাঙামাটি আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি ও বড়াদম মৌজার হেডম্যান দীপংকর দেওয়ান বলেন, ঈদে আমরা পর্যটকদের জন্য ৩০ শতাংশ ছাড় দিয়ে হোটেলে রুম বুকিং দিচ্ছি। ইতোমধ্যে আমাদের হোটেলে ৭০-৭৫ শতাংশ কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। আমরা রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা, রাঙামাটি সরকারি কলেজে অনার্স ভর্তি পরীক্ষাসহ সরকারি নিয়োগ পরীক্ষার সময়েও ছাড় দিয়ে থাকি। অন্যান্য জেলার চেয়ে রাঙামাটির আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভালো। প্রশাসনের সুনজর থাকলে রাঙামাটির পর্যটন শিল্প দ্রুত উন্নয়নের ধাপে এগিয়ে যাবে।
শহরের দোয়েল চত্বর এলাকার ইফশা আবাসিক হোটেল ব্যবস্থাপক রবিউল হোসেন রবি বলেন, আমাদের হোটেলে ৮০ শতাংশ কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। পরিবেশ পরিস্থিতি ও আবহাওয়ার অবস্থা ভালো থাকলে রাঙামাটিতে প্রচুর পর্যটকের আগমন আশা করছি। প্রতিবছর ঈদে রাঙামাটিতে পর্যটকদের ঢল নামে। এবারো তাই আশা করছি।
সাজেকের হাতংটং রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী অচিন্ত্য ত্রিপুরা জানান, সাজেকে প্রায় সব কটেজ ও রিসোর্টে শতভাগ কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। আমার রিসোর্টে ১২, ১৩ ও ১৪ এপ্রিল শতভাগ কক্ষ অগ্রিম বুকিং করা আছে। সাজেকে এবার ঈদে পর্যটকের ঢল নামার সম্ভাবনা রয়েছে।