Logo
Logo
×

সারাদেশ

সাভারে তেলের লরি উল্টে আগুন, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন, সাভার

প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৪৪ পিএম

সাভারে তেলের লরি উল্টে আগুন, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪

সাকিবের পোড়া দেহের দিকে দৃষ্টি দিলেই চোখ ঝলসে আসে। শতভাগ পোড়া দেহ নিয়ে মঙ্গলবার সকালে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয় তাকে। প্রায় ১৬ ঘণ্টা মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি না ফেরার দেশে চলে যান।

মঙ্গলবার সাভারে তেলবাহী লরি উল্টে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের কবলে পড়ে অগ্নিদগ্ধ হন তিনি। এ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা চারজন হলো।

নিহত সাকিব (২৪) বরগুনার সদর উপজেলার আবেদ আলীর ছেলে। তিনি অগ্নিদগ্ধের কবলে পড়া তরমুজের ট্রাকচালকের সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। 

মঙ্গলবার ভোর সকালে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের জোড়পুল এলাকা তেলবাহী লরি উল্টে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের কবলে পড়ে চারটি গাড়ি। অগ্নিদগ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় নজরুল ইসলাম (৪৫)। আর হাসপাতালে নেওয়ার পথে যশোর চৌগাছার আব্দুল আজিজের ছেলে ইকবাল হোসেন (২৮) ও মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান হেলাল (৩০)। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ভোরে একটি তেলবাহী চলন্ত লরি মহাসড়কে হঠাৎ উল্টে যায়। গাড়ি উল্টে যাওয়ার ফলে গাড়িতে থাকা তেল মহাসড়কে স্রোতের মতো পড়তে থাকে। এদিকে গাড়িতে আগুনের সূত্রপাত হলে গাড়িসহ বেশ জায়গা নিয়ে ভয়াবহ আগুনের তীব্রতা হয়। এর মধ্যে দ্রুতগতিতে আসা প্রাইভেটকার, সিমেন্টবাহী ট্রাক, তরমুজবাহী ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান আগুনে পুড়ে ভস্ম হয়ে যায়। এ সময় গাড়িতে থাকা দুইজন পুড়ে অঙ্গার হয়ে যান। 

ফায়ার সার্ভিস জোন-৪ এর উপসহকারী পরিচালক মো. আলাউদ্দিন বলেন, ঘটনাস্থলে আসতে আসতেই তেলবাহী লরি থেকে আরও চারটি গাড়িতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় সাভার ও হেমায়েতপুর ফায়ার সার্ভিসের ছয় ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করি। প্রায় দেড় ঘণ্টা চেষ্টার পর পৌনে ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হলেও পাঁচটি গাড়ি পুড়ে ভস্ম হয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, লরির তেল মহাসড়কে পড়ে যাওয়ার ফলে আগুনের তীব্রতা ভয়াবহ রূপ নেয়। যার ফলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে আমাদের বেশ বেগ পেতে হয়েছে। এ ঘটনায় অগ্নিদগ্ধে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

হাসপাতালে গুরুতর আহত অবস্থায় ৫৪ শতাংশ দগ্ধ নিয়ে প্রিমিয়ার সিমেন্ট বহনকারী গাড়ির লেবার মিলন মোল্লা (২২), ২০ শতাংশ দগ্ধ নিয়ে স্কুলছাত্রী মিম (১০), ১০ শতাংশ নিয়ে প্রিমিয়ার সিমেন্ট বহনকারী গাড়ির চালক আল আমিন (২৮), ৮ শতাংশ দগ্ধ নিয়ে ফল ব্যবসায়ী নিরঞ্জন (৪৫) ও ৫ শতাংশ দগ্ধ নিয়ে প্রাইভেটকার চালক আব্দুস সালাম চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। দগ্ধদের আরও একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। 

চিকিৎসাধীন অবস্থায় আব্দুস সালাম বলেন, হেমায়েতপুরের সিএনজি পাম্প থেকে গ্যাস নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেই। জোড়পুল এলাকায় পৌঁছালে সামনে থাকা তেলবাহী লরি হঠাৎ উল্টে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গাড়িটিতে আগুন ধরে যায়। এ সময় আমার প্রাইভেটকারটি পিছনের দিকে নিতে গেলেও অন্য গাড়ির জন্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। ততক্ষণে লরিতে থাকা তেল মহাসড়কে ছড়িয়ে পড়লে সড়কের বেশকিছু জায়গাজুড়ে আগুন লেগে যায়। পরে দ্রুত গাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় আমার মাথার একপাশে ও পায়ে অগ্নিদগ্ধ হয়।

তিনি বলেন, একইভাবে আমার গাড়ির আশপাশে থাকা অন্যান্য গাড়িগুলোতে আগুন লেগে যায়।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম