ঢাকা-বরিশাল নৌরুটের বিলাসবহুল লঞ্চের আগাম টিকিট বিক্রি শেষ পর্যায়ে হলেও যাত্রীদের কাছ থেকে আশানুরূপ সাড়া পাচ্ছেন না লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে ঈদ মৌসুমে বরিশাল লঞ্চের কেবিনের টিকিট ছিল সোনার হরিণ।
সেতু উদ্বোধনের আগে আগাম টিকিট কিনতে ঈদের ২৫ দিন আগে থেকেই টিকিট কাউন্টারে থাকত উপচে পড়া ভিড়। কিন্তু এ বছর ১৫ রমজান থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করলেও সেই চিরচেনা দৃশ্য মলিন হচ্ছে। ঈদের বাকি সপ্তাহখানেক থাকলেও কাউন্টারগুলোয় টিকিট বিক্রি হয়েছে খুবই কম। তাই লঞ্চের টিকিট বিক্রির সংখ্যা অবিরতভাবে হ্রাস পাওয়ায় যাত্রী সংকটের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে পদ্মা সেতু উদ্বোধনে দুর্ভোগ কমে যাওয়ায় সড়কপথের চিত্র পালটে গেছে। লঞ্চের চেয়ে তিনভাগের একভাগ সময়ে যাতায়াত সম্ভব হওয়ায় বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। ফিরতি টিকিটও বিক্রি শেষ পর্যায়ে। সেতু উদ্বোধনের পর সড়কপথে কয়েক গুণ যাত্রীচাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অসংখ্য বাস।
একটি লঞ্চ কোম্পানির কাউন্টারের কর্মকর্তা জানান, এ বছর ১৫ রমজান থেকে আগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করলেও সাড়া পাচ্ছি না। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও যাত্রীরা টিকিট পেতেন না। এখন প্রতিবছর যাত্রী সংখ্যা কমছে।
ক্রিসেন্ট শিপিং লাইন্স বরিশাল কাউন্টারের ইনচার্জ আফজাল জানান, সোমবার সকাল থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ৬০টি টিকিট বিক্রি করেছি। একই সময়ের মধ্যে গত বছর এর দ্বিগুণ টিকিট বিক্রি করেছি। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের কারণে যাত্রীসংখ্যা হ্রাস পেয়েছে।
গ্রিনলাইন পরিবহণের বরিশাল কাউন্টার ম্যানেজার মো. বাদশা বলেন, সড়কপথে যাত্রীসংখ্যা বাড়ছে। চাহিদার চেয়ে বেশি যাত্রী পেলে তাদের বহনে অতিরিক্ত বাস প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সড়কে দুর্ভোগ কমে যাওয়ায় যাত্রী বাড়ছে বলে জানান তিনি।
বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ-এর নদীবন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান, সর্বোচ্চ যাত্রীসেবা নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো একসঙ্গে কাজ করছে। পাশাপাশি নৌবন্দর এলাকায় যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার জিহাদুল কবির বলেন, নগরীর দুটি বাস টার্মিনাল ও নৌবন্দরে তিনটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প বসানো হয়েছে। ঈদে যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নগরীতে স্থাপন করা হয়েছে সিসি ক্যামেরা। পাশাপাশি মাঠে থাকবে অতিরিক্ত পুলিশ। আমরা নির্বিঘ্নে ঈদযাত্রা নিশ্চিতে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি।