চুরির অভিযোগে পানিতে চুবিয়ে মারধর
ক্ষোভে কিশোরের আত্মহত্যা
নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩০ মার্চ ২০২৪, ১১:১৩ পিএম
ময়মনসিংহের নান্দাইলে বৈদ্যুতিক মোটর চুরির অভিযোগে এক কিশোরকে ডোবার নোংরা পানিতে চুবিয়ে মারধর করা হয়। পরে ক্ষোভে অপমানে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে ওই কিশোর। বৃহস্পতিবার নান্দাইল উপজেলার কালিয়ান গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওই কিশোরের নাম হোসাইন মিয়া (১২)। সে ওই গ্রামের দরিদ্র রিকশাচালক শামিম মিয়ার ছেলে।
জানা যায়, বুধবার রাতে প্রতিবেশী সবুজ মিয়া ও ইমন মিয়া হোসাইনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর সিডস্টোর বাজারে গিয়ে একটি বৈদ্যুতিক মোটর বিক্রি করে। মোটরটি হোসেনপুর উপজেলার তারাপাশা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য তোফাজ্জল হোসেনের। খবর পেয়ে তোফাজ্জলের লোকজন বাজার থেকে মোটরটি উদ্ধার করে। পরদিন বৃহস্পতিবার ভোরে তোফাজ্জলের স্ত্রী সুফিয়া খাতুন বাড়ি থেকে হোসাইনকে ধরে নিয়ে কাদা পানিতে চুবিয়ে মোটরের সঙ্গে চুরি হওয়া একটি পাইপ কোথায় জানতে চায়। পরে লোকজনের অনুরোধে হোসাইনকে ছেড়ে দিলেও দুপুরে তোফাজ্জলের ভাই আলী হোসেনের ছেলে নাইম মিয়া গিয়ে হোসাইনকে আবারও বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে মারধর করে। বিকালে ছাড়া পেয়ে বাড়িতে এসে হোসাইন দরজা বন্ধ করে ঘরের আঁড়ার সঙ্গে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে।
হোসাইনের দাদি রোকেয়া বেগম জানান, হোসাইন চুরি করেনি। তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে সবুজ ও ইমন মোটর বিক্রি করেছে। সে শুধু তাদের সঙ্গে ছিল।
স্থানীয় বাচ্চু মিয়া ও হজরত আলী জানান, চুরির অপবাদে মারধর করায় ক্ষোভে হোসাইন আত্মহত্যা করেছে। অভিযুক্ত তোফাজ্জলের ভাই আলী হোসেন বলেন, মোটর চুরির কারণে হোসাইনকে মারধর করা হয়নি। শুধু জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সে কেন আত্মহত্যা করেছে তা আমরা জানি না।
স্থানীয় জাহাঙ্গীরপুর ইউপি চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মন্ডল বলেন, একটি প্লাস্টিকের পাইপের জন্য ছেলেটিকে মারধর করা হয়েছিল। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। এর সঠিক বিচার হওয়া দরকার।
নান্দাইল মডেল থানার উপ-পরিদর্শক আবদুল কাদের বলেন, লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।