Logo
Logo
×

সারাদেশ

জামালগঞ্জে ইউএনওর সঙ্গে দ্বন্দ্ব

জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রণালয়ে চিঠি

Icon

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২৪, ১১:০১ পিএম

জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রণালয়ে চিঠি

সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা প্রকাশ্য দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন। ইউএনও মাসুদ রানা যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বিরোধ বাধে। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে ইউএনওর প্রোগ্রামে যোগ না দিয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইকবাল আল আজাদের নেতৃত্বে সব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পৃথকভাবে শহিদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেন। এতে ইউএনওর সঙ্গে তাদের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে। এ ঘটনার একদিন পরই ইউএনও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ পাঠান। এতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। তারাও ইউনওর বিরুদ্ধে পালটা কর্মসূচি পালনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

ইউএনও মাসুদ রানা স্বাক্ষরিত স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও ছয় ইউপি চেয়ারম্যানের একাধিক জাতীয় দিবস বয়কট করা রাষ্ট্রবিরোধিতার শামিল। কোনো কারণ ছাড়াই ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মদিবস ও জাতীয় শিশু দিবস এবং ২৫ মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবসের মতো রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় দিবসগুলোতে তারা উপস্থিত হননি।

চিঠিতে আরও বলা হয়, প্রতিটি দিবসে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাওয়াত দেওয়া হলেও তারা কেউ উপস্থিত না হওয়ার কারণে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হলো। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা হলেন-উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইকবাল আল আজাদ, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বীণা রানী তালুকদার, ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম জিলানী আফিন্দী রাজু, ফেনারবাঁক ইউপি চেয়ারম্যান কাজল চন্দ্র তালুকদার, সাচনা বাজার ইউপি চেয়ারম্যান মাসুক মিয়া, জামালগঞ্জ সদর ইউপি চেয়ারম্যান কামাল মিয়া, বেহেলী ইউপি চেয়ারম্যান সুব্রত সামন্ত সরকার, ভীমখালী ইউপি চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান তালুকদার ও জামালগঞ্জ উত্তর ইউপি চেয়ারম্যান হানিফ মিয়া।

এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইকবাল আল আজাদ যুগান্তরকে বলেন, ইউএনও মাসুদ রানা নিজের দোষ অন্যের ঘাড়ে চাপাতে চাইছেন। আমরা প্রত্যেকটি জাতীয় দিবস যথাযথ মর্যাদায় পালন করেছি। তিনি প্রতিটি জাতীয় কর্মসূচি দায়সারাভাবে পালন করতে চান। এ নিয়ে তার সঙ্গে আমাদের মতবিরোধ। তার অনৈতিক কর্মকাণ্ড ধামাচাপা দিতে তিনি আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন।

তিনি বলেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও ৬টি ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে এলাকার উন্নয়নমূলক কাজে কোনো সমন্বয় না করেই তার ইচ্ছামতে কাজ করে যাচ্ছেন। হাওড়ে ফসল রক্ষা বাঁধ, বেহেলী বাজার, উজ্জ্বলপুর রাস্তা, আশ্রয় প্রকল্পসহ বিভিন্ন কাজে অনিয়ম দুর্নীতিসহ নানা সমস্যা রয়েছে। তার এমন কর্মকাণ্ড নিয়ে উপজেলার জনপ্রতিনিধিরা মিলে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসককে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা বিষয়টি স্থানীয় সংসদ-সদস্য রনজিত সরকারকেও অবহিত করেছি। এছাড়া স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো অভিযোগের ব্যাপারে আমরা জনপ্রতিনিধিরা শনিবার বৈঠকে পরবর্তী কর্মসূচি গ্রহণ করব। সেখান থেকে ইউএনও অপারণের দাবিতে আন্দোলনের ডাক আসতে পারে। 

অভিযোগের ব্যাপারে ইউএনও মাসুদ রানা শুক্রবার বিকালে যুগান্তরকে বলেন, প্রশাসনিক কোনো কর্মকাণ্ড নিয়ে মতবিরোধ থাকতে পারে, এজন্য রাষ্ট্রীয় প্রোগ্রাম উপেক্ষা করা কোনোভাবেই সমীচীন নয়। কোনো কোনো ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ব্যক্তিগত সুবিধা নিতে ব্যর্থ হয়ে তাদের অ্যাসোসিয়েশনকে আমার বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে চাইছেন। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য নয়। নিজেদের বাঁচাতে তারা এসব বলছেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে আমাকে জামালগঞ্জ থেকে বদলি করা হয়েছে। আমার রিপ্লেসমেন্ট এলে আমি নতুন কর্মস্থলে চলে যাব।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম