মেঘনায় ট্রলারডুবি: একে একে মিলল পুলিশ সদস্যসহ ৯ লাশ

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২৪, ০৫:৫৭ পিএম

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মেঘনা নদীতে ট্রলারডুবির ঘটনায় সর্বশেষ নিখোঁজ পুলিশসহ তিনজনের লাশ উদ্ধার করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের সদস্যরা। সোমবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে পলতাকান্দা এলাকা ও আশুগঞ্জের লালপুর এলাকা থেকে ভাসমান অবস্থায় তিনটি মরদেহ উদ্ধার করে ভৈরব নৌ-থানায় নিয়ে আসে। এ নিয়ে মোট ৯ জনের লাশ উদ্ধার হলো।
সোমবার উদ্ধার করা হয়েছে ভৈরব হাইওয়ে থানার পুলিশ কনস্টেবল সোহেল রানা (৩৪), তার শিশু পুত্র রাইসুল (৫) ও কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি উপজেলার মানিকখালি গ্রামের বেলন দের (৪৫) লাশ। এর মধ্যে পুলিশ সোহেল রানা ও তার পুত্র রাইসুলকে সকাল ৯টায় পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বেলন দের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা থানায় এলে তার মরদেহ বুঝিয়ে দেওয়া হবে বলে নৌ-পুলিশ জানায়।
এর আগে উদ্ধারকারী দল গত তিন দিনে আরও ৬টি মরদেহ নদী থেকে উদ্ধার করে স্বজনদের লাশ বুঝিয়ে দিয়েছে।
প্রথম দিন উদ্ধারকৃত সুর্বনা বেগম ছাড়া নিখোঁজ ৮ জনের মধ্য সবার মরদেহ উদ্ধার হওয়ায় কর্তৃপক্ষ সোমবার সকালে উদ্ধার কাজ সমাপ্ত ঘোষণা করেছে।
রোববার দুপুরে দুর্ঘটনা কবলিত ভ্রমণতরী ট্রলারটিও নদীর তলদেশ থেকে উদ্ধার করে আশুগঞ্জের সোনারামপুর চরে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় গত শনিবার রাতে পুলিশ কনস্টেবল সোহেল রানার বাবা বাদী হয়ে দুইজনকে অজ্ঞাত আসামি করে আশুগঞ্জ থানায় একটি মামলা করলেও এখনো কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ।
গত ২২ মার্চ শুক্রবার ভৈরবের মেঘনা নদীতে ১৫-২০ জন যাত্রী নিয়ে একটি ট্রলার বিপরীতগামী একটি বাল্কহেডের ধাক্কায় ডুবে যায়। এ সময় ১০-১২ জন যাত্রী সাঁতরিয়ে পাড়ে উঠলেও ৯ জন নিখোঁজ হন। তার মধ্য শুক্রবার সুর্বনা বেগম নামের এক নারী ভৈরব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তারপর ৮ জন নিখোঁজ হয়।
এছাড়া শনিবার পুলিশের স্ত্রী মৌসুমী বেগম (২৬) ও ভৈরবের আমলাপাড়া এলাকার আরাধ্যা দে (১১) এবং রোববার নরসিংদী জেলার বেলাব থানার দড়িকান্দি এলাকার দারু মিয়া মেয়ে শিক্ষার্থী আনিকা আক্তার (১৮), ভৈরব পৌর শহরের আমলাপাড়ার এলাকার টুটন দের স্ত্রী রুপা দে (৩০), পুলিশ সদস্য সোহেল রানার মেয়ে মাহমুদা সুলতানার (৭) লাশ উদ্ধার করা হয়।
ভৈরব নৌ-থানার ইনচার্জ মো. মনিরুজ্জামান জানান, সোমবার সকালে তিনটি মরদেহ মেঘনা নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। দুইজনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছি এবং বেলন দের মরদেহ স্বজনরা থানায় আসলে হস্তান্তর করা হবে। ঘটনার পর যারা নিখোঁজ ছিল আজ পর্যন্ত সবার মরদেহ উদ্ধার শেষ হলো। রোববার দুর্ঘটনা কবলিত ট্রলারটি নদীর তলদেশ থেকে উদ্ধার করে আশুগঞ্জের চরে রাখা হয়েছে। তাই আজ উদ্ধার কাজ সমাপ্ত ঘোষণা করা হলো।
ভৈরব ফায়ার স্টেশনের ইনচার্জ আজিজুল হক জানান, সবার মরদেহসহ ট্রলারটি উদ্ধার হওয়ায় উদ্ধার কাজের আর কিছু নেই। তাই সোমবার সকালে উদ্ধার কাজ সমাপ্ত ঘোষণা করেছি।