স্ত্রীর নিয়োগ রেজুলেশনে স্বাক্ষর না দেওয়ায় সভাপতিকে মারধর অধ্যক্ষের
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৪, ১০:৫৯ পিএম
মাদ্রাসা অধ্যক্ষের স্ত্রীর নিয়োগ রেজুলেশনে স্বাক্ষর না দেওয়ায় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে মারধর করে কক্ষে আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া যায়।
পরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল দেওয়ার পর সভাপতিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শনিবার দুপুর ১২টার দিকে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গিমাডাঙ্গা গজালিয়া মহিলা ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটেছে।
ওই রাতেই অধ্যক্ষ ও সাবেক ইউপি সদস্যসহ ৫ জনের নামে টুঙ্গিপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শেখ তৈয়াবুর রহমান।
অভিযুক্তরা হলেন- গিমাডাঙ্গা গজালিয়া মহিলা ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবুজাফর মোহাম্মাদ সালেহ (৬০), সাবেক ইউপি সদস্য মনির শিকদার (৪৫), গজালিয়া গ্রামের বাদশা শিকদারের ছেলে আরিফ সিকদার (২৮), মৃত মুসলিম শেখের ছেলে হাবিবুর রহমান (৫৫) ও জাকির শেখ (৪৫)।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মাদ্রাসায় উপাধ্যক্ষ পদটি দীর্ঘদিন ধরে শূন্য ছিল। বর্তমান অধ্যক্ষ আবুজাফর মোহাম্মাদ সালেহ তার স্ত্রী রওশন আরা পারভীনকে উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগের জন্য দীর্ঘদিন ধরে পাঁয়তারা করে আসছিলেন।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ওই মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। গত ২০ জানুয়ারি অধ্যক্ষ আবু জাফরের স্ত্রীসহ তিনজন ডামি প্রার্থী পাশের একটি মাদ্রাসায় লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। ওই পরীক্ষায় শুধুমাত্র অধ্যক্ষের স্ত্রীকেই উত্তীর্ণ করা হয়। তখন অসৎ উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে সভাপতি শেখ তৈয়াবুর রহমান অধ্যক্ষের তৈরিকৃত রেজুলেশনে স্বাক্ষর দেননি। তাই সভাপতিকে মিটিংয়ের কথা বলে মাদ্রাসায় ডেকে নিয়ে স্বাক্ষর করতে বলেন অধ্যক্ষ। তখন তিনি স্বাক্ষর করতে না চাইলে বহিরাগতদের দিয়ে তাকে মারধর করায় অধ্যক্ষ আবু জাফর সালেহ।
তৈয়াবুর রহমান বলেন, শনিবার অধ্যক্ষ আবু জাফর শিক্ষক নিয়োগের চাহিদাপত্র সংক্রান্ত আলোচনার জন্য আমাকে মাদ্রাসায় ডাকেন। কিছু সময় পরে অধ্যক্ষ তার স্ত্রীর নিয়োগ রেজুলেশনে স্বাক্ষর করতে বলেন। আমি স্বাক্ষর না করলে মাদ্রাসা থেকে বের হতে দেবে না বলেও হুমকি দেন। পরে সেখানে আগে থেকে উপস্থিত থাকা বহিরাগতরা অধ্যক্ষের নির্দেশে আমাকে মারধর করে একটি কক্ষে আটকে রাখেন। এ ঘটনার পর ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করেন। তাই আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ বলেন, সভাপতি তৈয়াবুর রহমানকে মাদ্রাসায় আসার পরে স্বাক্ষর করতে বলেছি; কিন্তু স্বাক্ষর পরে করবে বলে তিনি জানান। তখন অন্য শিক্ষকদের বলেছি- দেখ তার টাকা-পয়সা নেওয়ার কোনো ইচ্ছা আছে কিনা। কারণ বিপদ তো আমার। পুনরায় নিয়োগ দিলেই এক লাখ খরচ হয়ে যাবে। যেখানে ডিজি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি স্বাক্ষর করেছেন সেখানে সভাপতি কেন স্বাক্ষর করবেন না! সবাই মিলে অনুরোধ করার পরেও সভাপতি স্বাক্ষর না দেওয়ায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। তখন একটু হাতাহাতির ঘটনা ঘটতে পারে; কিন্তু আমি বিষয়টি থামানোর চেষ্টা করেছি।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. গোলাম কবির বলেন, বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তদন্ত করে দেখবেন। তদন্তে কেউ দোষী প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।