
প্রিন্ট: ০৩ মার্চ ২০২৫, ১২:১৩ পিএম
বাসের বেপরোয়া গতির কারণে অকালে ঝরল ৫ প্রাণ

খোন্দকার রুহুল আমিন, টেকেরহাট (মাদারীপুর)
প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৪, ০৮:৫১ পিএম

আরও পড়ুন
চাচিসহ আত্মীয়দের সঙ্গে নিয়ে রাজধানী থেকে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসছিলেন তিন বোন। মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা কেড়ে নিল একই পরিবারের ৪ জনের প্রাণ। বাসের ধাক্কায় মারা গেছেন এক মাইক্রোবাস চালক। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৪ জন।
ওই বাসের এক যাত্রী জানান, বাসের বেপরোয়া গতির কারণেই অকালে ঝরে গেল একই পরিবারের ৪ জনসহ ৫ জনের প্রাণ।
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার ডোমরাকান্দি নামক স্থানে একটি যাত্রীবাহী বাস ও একটি মাইক্রোবাস মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় সড়কের দুই পাড়ে তীব্র যানজট সৃষ্টি হলে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নিহতরা হলেন- মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার গোপালপুরের কাজী আব্দুল হামিদের মেয়ে নাসিমা বেগম (৬২), সালমা বেগম (৫৮) ও আসমা বেগম (৫৬)। এই তিনবোনের চাচি হুয়ামুন কবিরের স্ত্রী কমল বেগম (৭৫), মাইক্রোবাস চালক আলমগীর (৪৫)।
আহতরা হলেন- হুমায়ুন কাজী, খায়রুল আলম কাজী ও নাজমা বেগম। বাকি একজন বাসের যাত্রী।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার সকালে বরিশাল থেকে রাজধানী ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে গ্লোবাল পরিবহণের একটি যাত্রীবাহী বাস। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের ডোমরাকান্দি এলাকায় আসলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মাইক্রোবাসটি দুমড়েমুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মাইক্রোবাসের চালক ও একই পরিবারের ৪ জনের মৃত্যু হয়। আহত হয় আরও ৪ জন। তাদের উদ্ধার করে রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় পাঠানো হয়েছে ঢাকা মেডিকেলে। বেপরোয়া গতির কারণেই এ দুর্ঘটনা বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
নিহতের স্বজনরা জানান, রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডি থেকে চাচি ও আত্মীয়দের সঙ্গে নিয়ে মাদারীপুরের কালকিনির গোপালপুরে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসছিলেন তিন বোন নাসিমা, সালমা ও আসমা বেগম। মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় তাদের মারা যাবার এ শোক কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না স্বজনরা।
বাসের যাত্রী ও পোশাক শ্রমিক নদী আক্তার রুবি জানান, বরিশাল থেকে ছেড়ে আসার পর থেকেই অনেক গতি ছিল বাসটিতে। চালককে নিষেধ করলেও তিনি তা শোনেননি। আসার পথে কালকিনির ভুরঘাটায় এক ভ্যানচালকেও ধাক্কা দিয়ে সড়কে ফেলে দেন। সেই ভ্যানচালকও আহত হন। মূলত বাসচালকের কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
নিহতের ভাতিজা কাজল কাজী জানান, এভাবে তিন ফুফু ও এক চাচি মারা যাবে বুঝতে পারছি না। এ শোক মেনে নেওয়া কঠিন। ঘাতক বাসটি জব্দের পাশাপাশি চালককে আইনের আওতায় আনা হোক। বাসের বেশি গতির কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
মাদারীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক সফিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা, রাজৈরের তাঁতিকান্দা ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়। এই দুর্ঘটনায় ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।