আঙুলের নখ তুলে নির্যাতন
আবু তাহের নদভীকে প্রধান আসামি করে মামলা নির্যাতিত আলেমের
পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৩:৪৬ পিএম
আবু তাহের নদভী। ফাইল ছবি
চট্টগ্রামের পটিয়া আল জামেয়া আল ইসলামিয়া মাদ্রাসায় এক আলেমকে নির্যাতন করে আঙুলের নখ খুলে নেওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে মাদ্রাসার বর্তমান মহাপরিচালক মাওলানা আবু তাহের নদভীকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।
সোহরাব হোসেন আইমান নামে নির্যাতিত ওই আলেম বাদি হয়ে এ মামলা করেছেন বলে পটিয়া থানার ওসি জসীম উদ্দিন নিশ্চিত করেছেন।
গত রোববার রাত সাড়ে ৯টায় পটিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন রাস্তা থেকে সোহরাব হোসেন আইমান নামের ওই আলেমকে মাদ্রাসার ভেতরে নিয়ে নির্যাতন করে আবু তাহের নদভীর অনুসারীরা।
জানা গেছে, রোববার রাতে মাদ্রাসা সংলগ্ন একটি দোকান থেকে মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামজার অনুসারী সরোয়ার হোসেন আইমানকে মাদ্রাসার বর্তমান পরিচালক মাওলানা আবু তাহের নদভীর অনুসারী ১০-১২ জন ছাত্র জোর করে মাদ্রাসার ভেতরে নিয়ে যায়। এরপর তাকে মারধর করে এবং হাতের একটি আঙুল থেকে নখ উঠিয়ে নেয়।
পরে আহতাবস্থায় তাকে মাদ্রাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় তার পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে আবু তাহের নদভীকে ফোন দেওয়া হলে তিনি তা ধরেননি।
আরও পড়ুন: পটিয়ায় আলেমকে নির্যাতন করে খুলে নেওয়া হলো নখ
এর আগে ওবায়দুল্লাহ হামজার অনুসারী আরিফ নামের অপর এক ছাত্রকে পিটিয়ে তার দুটো কিডনি নষ্ট করা হয়। সে দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে মৃত্যুশয্যায় রয়েছে।
এসব ঘটনায় প্রতিবাদে সোমবার বিকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে পটিয়া মাদ্রাসা ঐতিহ্য সংরক্ষণ পরিষদ। তাতে দোষীদের গ্রেফতারে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া হয়।
মানববন্ধনে পটিয়া মাদ্রাসা ঐতিহ্য সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা বলেন, পটিয়া মাদ্রাসায় এখন ছাত্র নামধারী আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন আইএস মতাদর্শী একদল উগ্রপন্থীকে লালন-পালন করা হচ্ছে। এদেরকে ভাড়াটে হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সংযমের মাস রমজানের পবিত্রতাকে ভূলুণ্ঠিত করার মধ্য দিয়ে প্রমাণ করেছে দখলদাররা ধর্মীয় অনুভূতিশূন্য।
নেতৃবৃন্দ বলেন, কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের (ইত্তেহাদ) সংবিধান লঙ্ঘন করে নিয়ম বহির্ভূতভাবে শুরার নামে প্রহসনের মাধ্যমে হেফাজতের এক মাফিয়া চক্র আবু তাহের নদভীকে মুহতামিম ঘোষণা দিয়েছেন। এই আবু তাহের নদভী ঢাকা-কক্সবাজার ও যশোরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ধর্মের দোহাই দিয়ে এবং সুদমুক্ত সঞ্চয়ের ওয়াজ করে একটি প্রতিষ্ঠানের গ্রাহক বানিয়ে গরিব গ্রাহকদের সঞ্চিত শত কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন। এসব অভিযোগে আদালতে প্রায় দুই ডজন মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
পরিষদের সদস্য সচিব মাওলানা ইয়াসিন আমিনীর সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মাওলানা উজাইল্লাহ, মাওলানা সগির আহমদ চৌধুরী, কারী শফিউল আলম, মাওলানা আবুল কালাম, একরাম হোসেন, হাফেজ মাওলানা জিয়াউর রহমান মাওলানা আনাস, মাওলানা জসিমুদ্দীন, মাওলানা নুরুল আজীম, মাওলানা তরিকুল ইসলাম, মাওলানা ওসমান, মাওলানা মামুনুর রশীদ, আবদুল কাদের, হুমায়ুন কবীর ও মাওলানা মাহমুদুল ইসলাম প্রমুখ।
আরও পড়ুন: পটিয়া মাদ্রাসায় নিয়মবহির্ভূত শুরার মাধ্যমে মুহতামিম নিয়োগ অবৈধ