তানোর উপজেলা ডিজিটাল ডাকঘর থেকে সঞ্চয়ী গ্রাহকদের কোটি টাকা গায়েবের ঘটনায় পোস্টমাস্টার মোকছেদ আলীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিপুল পরিমাণ টাকা গায়েবে রাজশাহীর ডাক পরিদর্শক মজিবুর রহমান সোমবার তানোর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। এ ঘটনায় রাজশাহীর ডেপুটি পোস্টমাস্টার জেনারেল মনিরুজ্জামানকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি করেছে ডাক কর্তৃপক্ষ।
পোস্টমাস্টার মোকছেদ আলী কোটি টাকা গায়েব করেছেন- এমন খবরে গ্রাহকরা সোমবার তানোর ডাকঘর ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন। খবর পেয়ে ডাক কর্তৃপক্ষের রাজশাহীর কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। সব টাকা ফেরত দেওয়ার অঙ্গীকার করলে ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা শান্ত হন।
কামারগাঁও বারোঘরিয়া এলাকার বাসিন্দা জয়নাল আবেদিন বলেন, ২০২১ সালে পোস্ট অফিসের ডাকঘর সঞ্চয়পত্রে ছয় লাখ টাকা আমানত রেখেছি। ২০২২ সালে একই হিসাবে চার লাখ টাকা এফডিআর করি। পোস্টমাস্টার প্রথমে ছয় লাখ টাকা রেজিস্টারে ও পাশ বইয়ে এন্ট্রি করেন। কিন্তু পরের চার লাখ টাকা শুধু পাশ বইয়ে তোলা হয়। সম্প্রতি আমানতের বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে বিষয়টি জানতে পারি। এভাবে বহু গ্রাহকের আমানত পাশ বইয়ে এন্ট্রি দেওয়া হলেও ডাকঘরের জমা রেজিস্টার বইয়ে তোলা হয়নি। এভাবে শতাধিক গ্রাহকের বিপুল পরিমাণ টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছেন পোস্টমাস্টার মোকছেদ আলী। মোকছেদের বাড়ি রাজশাহীর পবা উপজেলার উত্তর নওদাপাড়ায়।
উত্তরাঞ্চল পোস্টাল জোনের ডেপুটি পোস্টমাস্টার জেনারেল (ডিপিএমজি) মনিরুজ্জামান জানান, অনেক গ্রাহকের টাকা জমা না হওয়ার তথ্য তারা উদঘাটন করেছেন। প্রায় ৫০ লাখ টাকা গায়েবের অভিযোগ নিশ্চিত হওয়া গেছে। তদন্তকালে টাকার পরিমাণ বাড়তে পারে। তিনি আরও জানান, অভিযুক্ত পোস্টমাস্টার মোকছেদ আলীকে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। সোমবার তিনি অফিসেও উপস্থিত ছিলেন না। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
ডাক পরিদর্শক মজিবুর রহমান বলেন, ঠিক কত টাকা গায়েব হয়েছে তা নিরূপণে আরও কয়েক দিন লাগবে। তবে আমরা গ্রাহকদের আশ্বস্ত করেছি তারা আমানতের টাকা ফেরত পাবেন।
জানা গেছে, তানোর উপজেলা পোস্ট অফিসে ২২০ জন গ্রাহক ডাকঘর সঞ্চয়পত্রসহ সরকারের বিভিন্ন স্কিমে বিভিন্ন মেয়াদি আমানত হিসাবে কয়েক কোটি টাকা জমা রেখেছেন। অনেক গ্রাহক এখন পর্যন্ত জানেন না তাদের টাকা জমা আছে কিনা।