![আ.লীগের ইফতারির বর্জ্যে সয়লাব রাজশাহীর সড়ক](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2024/03/18/image-786213-1710778498.jpg)
রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের একাংশের ইফতার মাহফিল থেকে যত্রতত্র পলিথিন, খালি প্যাকেট ও উচ্ছিষ্ট খাবার ছড়িয়ে ছিটিয়ে সড়ক নোংরা করার অভিযোগ উঠেছে দেশের পরিচ্ছন্ন নগরীতে। রোববার সন্ধ্যায় রাজশাহী মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র অলকার মোড়ে এমন নোংরা কর্মকাণ্ড করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
তারা জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে ইফতার মাহফিলে যোগ দিতে নগরীর অলকার মোড়ে জেলা আওয়ামী লীগের তৃতীয় কার্যালয়ে আসেন।
জানা গেছে, এ ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন সমবায় ও পল্লী উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী আব্দুল ওয়াদুদ দারা। অলকার মোড়ের গোটা সড়কজুড়ে ইফতারির প্যাকেট, পলিথিন ও উচ্ছিন্ন খাবার ছড়িয়ে এলাকাটি নোংরা করার ঘটনাটি রোববার রাতে নেট মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়। ইফতারির এমন যথেচ্ছ ব্যবস্থাপনা দেখে অনেক সচেতন নগরবাসী এর কঠোর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে নানান মন্তব্য করেছেন সামাজিক মাধ্যমে।
তবে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা পরস্পরের ওপর দোষ চাপিয়ে পার পেতে চাইলেও নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি। যদিও গভীর রাতে এলাকাটির সড়ক থেকে ইফতারির সব বর্জ্য সরিয়ে ফেলেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা। এমন ঘটনায় স্বয়ং ক্ষুব্ধ হয়েছেন রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
দলীয় নেতাকর্মীদের সূত্রে জানা গেছে, নগরীর অলকার মোড়ে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের একাংশের একটি ঝাপ ফেলা ছোট কার্যালয় রয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় ইফতারির আয়োজন করা হয় জেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে।
দলীয় নেতাদের মধ্যে প্রতিমন্ত্রী দারা ছাড়াও রাজশাহী-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, সাবেক এমপি আয়েন উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন, জাকিরুল ইসলাম সান্টু প্রমুখ মধ্যমসারির কয়েকজন নেতা এ ইফতার মাহফিলে অংশ নেন।
সড়কজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বর্জ্যের নোংরা ছবি তাৎক্ষণিকভাবে ছড়িয়ে পড়ে নেটমাধ্যমে। শত শত শেয়ার হতে থাকে সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে। পরিচ্ছন্ন নগরীর একটি সড়কজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়া বর্জ্যের ছবি দেখে নগরবাসীর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া আসতে থাকে।
অনেকেই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ডকে ইচ্ছাকৃত বলে দাবি করেন। মন্তব্যকারীদের কেউ কেউ ইফতার মাহফিলে উপস্থিত থাকা জেলা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের দায়িত্বশীলতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। কেউ কেউ বলেছেন, রাজশাহীর মেয়র লিটনকে বিব্রত করতেই প্রতিমন্ত্রী দারা এমন কাণ্ডজ্ঞানহীন কাজ করেছেন।
রাজশাহী মহানগর যুবলীগের যুগ্ম-সম্পাদক তৌরিদ আল মাসুদ রনি মন্তব্যে লেখেন, অনেকে অনেক কিছুর মূল্য বোঝে না। এদের শহরে কোনো প্রোগ্রাম করতে দেওয়া উচিৎ নয়।
মাকসুদ উল্লাহ নামের একজন লেখেন, এমন কাণ্ড দেখে আমরা হতবাক।
মো. হাসান রেজা লিখেছেন, কতটা নোংরা মানসিকতা হলে এ ধরনের নোংরা কাজ করতে পারে কেউ। সুমন হাসান লেখেন, সিটির ভেতরে এদেরকে প্রোগ্রাম করতে দেওয়া যাবে না। তারা ভালো কিছুর মূল্যই বুঝে না। নাসরিন সুলতানা লিখেছেন, এরা খুব খারাপ কাজ করেছে। শাহীন হোসেন শাহী লেখেন, একটা পরিচ্ছন্ন নগরী তৈরি করতে কত শ্রম দিতে হয় সেটার মূল্য তারা বুঝে না।
আব্দুল হামিদ লিখেছেন, এর দায় দলের নেতাদের। তারা কর্মীদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে পারেনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অনিল কুমার সরকার বলেন, তারা যে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেছেন সেটা আমাকে জানানো হয়নি। কারা ছিলেন আমি তাও বলতে পারব না।
অন্যদিকে ইফতার মাহফিলে অংশ নেওয়া রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ বলেন, ইফতারির পর আমরা সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন শাখাকে বলেছিলাম বর্জ্য পরিষ্কার করতে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তারা করেনি। এখন এটাকে ইস্যু করা হচ্ছে।