রাজশাহীতে ‘অম্লীয় মৃত্তিকা ব্যবস্থাপনা’ বিষয়ক সেমিনার
রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২৪, ১০:১৮ পিএম
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে কৃষক, কৃষি কর্মকর্তা, গণমাধ্যমকর্মী ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ‘অম্লীয় মৃত্তিকা ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হওয়া সেমিনারটি শেষ হয় দুপুর ১টায়।
রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের পক্ষ থেকে সেমিনারটি আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক জালাল উদ্দিন।
সেমিনারটিতে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আফম মনজুরুল হক এবং অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের ফিল্ড সার্ভিসেস উইংয়ের পরিচালক ড. বেগম সামিয়া সুলতানা ও এনালাইটিক্যাল সার্ভিসেস উইংয়ের পরিচালক ড. মো. আব্দুর রউফ। এছাড়াও সেমিনারে জেলা ও উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা, অম্লীয় মৃত্তিকা ব্যবস্থাপনা কাগে জড়িত বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও মাঠ পর্যায়ের কৃষকসহ গণমাধ্যমকর্মীরা।
সেমিনারের শুরুতে সবাইকে মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের কর্মকাণ্ড বিষয়ক একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করানো হয়। এরপর বাংলাদেশের মাটিতে অম্লত্ব বা ক্ষারের উপস্থিতি, কয়েক দশকের ব্যবধানে এর বৃদ্ধি এবং পতিত সমস্যা থেকে পরিত্রাণের উপায় নিয়ে আরেকটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করানো হয়।
তথ্যচিত্র প্রদর্শন শেষে কৃষক, কৃষি কর্মকর্তা, গণমাধ্যমকর্মী ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা তাদের মতামত ব্যক্ত করেন। বক্তারা বলেন, মাটির অম্লত্ব বা ক্ষারীয় অবস্থার ওপর নির্ভর করে ফসলের বৃদ্ধি ও ফলন। কিন্তু আবাদি জমিতে অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োগে মাটিতে বাড়ছে অম্লত্ব। এছাড়াও নদীর শুকিয়ে যাওয়া ও জমিতে প্রয়োজনীয় পানির অনুপস্থিতি তথা পানির লেয়ার কমে যাওয়ার কারণেও বাড়ছে বিপর্যয়। দেশের প্রায় ৪৬ শতাংশেরও বেশি জমিতে এই অম্লত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের মাটিতে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামসহ অন্যান্য ক্ষারীয় উপাদানের ঘাটতি রয়েছে যা মাটির অম্লতা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ বলে জানান বক্তারা।
তারা বলেন, মাটিতে অম্লত্ব দূরীকরণের উপায় হিসেবে কয়েকজন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা রাজশাহী বিভাগের কয়েকটি স্থানে কয়েকটি স্থানের মাটিতে গবেষণা চালিয়েছেন। অম্লত্ব দূরীকরণে মাটিতে ডলোচুন প্রয়োগের মাধ্যমে গবেষকরা পেয়েছেন সফলতা। তবে মাটির অম্লত্ব দূর করতে শুধু ডলোচুনই নয়, বরং মাটিতে নিয়মানুসারে সার-কীটনাশকের প্রয়োগ, জৈব ও কেঁচো সারের প্রচলন বৃদ্ধিসহ প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের মাঝে সচেতনতা তৈরির ব্যাপারে প্রাধান্য দেন তারা। ডলোচুন প্রয়োগের সঙ্গে সঙ্গে এসব বিষয় মানলে মাটির উর্বরতা ও ফলন দুটোই বৃদ্ধি পাবে বলেও জানান বক্তারা।