গফরগাঁওয়ে গ্রামপুলিশদের দিন কাটছে অভাব অনটনে
গফরগাঁও (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২৪, ১০:৫১ পিএম
অভাব অনটনে দিন কাটছে ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের ১৩৭ জন চকিদার-দফদারের (গ্রামপুলিশ)। গ্রামের নিরাপত্তা নিশ্চিতের অতন্দ্র প্রহরী তারা। বর্তমান বাজারের দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মিলছে না তাদের সংসার খরচের হিসাব। উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রামের এসব গ্রাম পুলিশরা চাকরি করেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের অধীনে।
প্রতি মাসে একজন দফদার ৭ হাজার ৫শ টাকা এবং মহল্লাদারের বেতন ৬ হাজার ৫ টাকা। তারা ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন নোটিশ জারি থেকে শুরু করে এলাকার মাদক, ইভটিজিং, বাল্যবিয়েসহ গ্রামের আইশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কাজ করে থাকেন। এসব চকিদার-দফদার থানা পুলিশের সোর্স হিসেবেও আসামি ধরার সময় অনেক ক্ষেত্রে পুলিশের সঙ্গে অংশ নেন অভিযানে। পুলিশের সঙ্গে অভিযানে মৃত্যু হলেও তাদের ভাগ্যে জোটে সরকারি সহায়তা। বিভিন্ন নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্ব পালন করেন গ্রামপুলিশরা। গ্রামের নিরাপত্তা দায়িত্বে সর্বদাই নিয়োজিত এসব প্রহরীর এত শ্রমের পরও বেতন খুব সামান্য। সরকারিভাবে কোনো প্রশিক্ষণও দেওয়া হয় না এদের। সরকারিভাবে শুধু শার্ট, প্যান্ট ও টুপি সরবরাহ করা হয়।
রাওনা ইউনিয়নের দফদার শ্রী সুনীল রবিদাস জানান, ৫শ টাকা মাসিক বেতনে গ্রামপুলিশ হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন ১৯৯১ সালে। ৩২ বছরের চাকরি জীবনে বর্তমানে বেতন পান ৭ হাজার ৫শ টাকা। চাকরি এখন শেষ পর্যায়ে। যশরা ইউনিয়নের বখুরা গ্রামের মহল্লাদার শ্রী চন্দন রবিদাস বলেন, গার্মেন্টে চাকরি করে একজন শ্রমিক প্রতি মাসে বেতন পান ১০/১৫ হাজার টাকা। অথচ আমাদের বেতন মাত্র ৬ হাজার ৫শ টাকা। চরআলগী ইউনিয়নের দফদার হেলাল উদ্দিন ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, প্রতি বছর সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ে কিন্তু সরকার আমাদের কোন বেতন ভাতা বাড়ায় না। বর্তমান বাজারে দ্রব্যমূল্যের যে ঊর্ধ্বগতি মাসে ৭ হাজার ৫শ টাকা বেতনে আমাদের পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে।
গফরগাঁও উপজেলা নির্বাহী অফিসার শফিকুল ইসলাম জানান, উপজেলা পর্যায় থেকে গ্রাম পুলিশ সদস্যদের যেসব সুযোগ সুবিধা দেওয়ার প্রয়োজন আমরা তাদের দিচ্ছি। বেতন ভাতা বৃদ্ধির বিষয়টা ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের ব্যাপার।