২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে এক গৃহবধূকে (৪০) দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত একমাত্র পলাতক আসামি মো. মিন্টু ওরফে হেলালকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিভিন্ন স্থান পরিবর্তন করে ও ছদ্মনামে মিন্টু ওরফে হেলাল গত ৫ বছর আত্মগোপনে ছিলেন।

শনিবার রাতে ঢাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। মিন্টু ওরফে হেলাল সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবলি ইউনিয়নের মধ্য ব্যাগ্যা গ্রামের মৃত আরব আলীর ছেলে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর সংসদ নির্বাচনের দিন রাতে স্বামী-সন্তানদের বেঁধে রেখে ওই গৃহবধূকে মারধর করে দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। ঘটনাটি তখন দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। নির্যাতনের শিকার নারী চার সন্তানের জননী। ঘটনার পরদিন ৩১ ডিসেম্বর ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে চর জব্বর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। 

পরে মামলার তদন্ত শেষে সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিন মেম্বারসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গত ৫ ফেব্রুয়ারি নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২–এর বিচারক (জেলা জজ) ফাতেমা ফেরদৌস এ মামলায় ১৬ আসামির মধ্যে ১০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও একমাত্র পলাতক আসামি মিন্টুসহ ছয় আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা করেন আদালত।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-মৃত খুরশিদ আলমের ছেলে মো. রুহুল আমিন, মৃত আবদুল হাসেমের ছেলে মো. হাসান আলী বুলু, মৃত ইসমাইলের ছেলে মো. সোহেল, মৃত আবদুল মান্নানের ছেলে স্বপন, আবুল কাশেমের ছেলে ইব্রাহীম খলিল, মৃত ছিডু মিয়ার ছেলে আবুল হোসেন আবু, ফকির আহাম্মদের ছেলে মো. সালাউদ্দিন, মো. মোতাহের হোসেনের ছেলে মো. জসীম উদ্দিন, মো. রফিকের ছেলে মো. মুরাদ ও মৃত চাঁন মিয়ার ছেলে মো. জামাল হেঞ্জু।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ইসমাইল হোসেনের ছেলে মো. হানিফ, আবদুল হামিদের ছেলে মো. চৌধুরী, মৃত আহম্মদ উল্যার ছেলে মো. বাদশা আলম, তোফায়েল আহম্মদের ছেলে মোশারফ, মৃত আরব আলীর ছেলে মো. মিন্টু ওরফে হেলাল ও আবুল কালামের ছেলে মো. সোহেল।

চর জব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিভিন্ন স্থান পরিবর্তন করে ও ছদ্মনামে মিন্টু ওরফে হেলাল গত ৫ বছর আত্মগোপনে ছিলেন। পুলিশ সদস্যরা তথ্য-উপাত্ত ও নজরদারির মাধ্যমে রাজধানীর বাসাবো এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হবে।