বড়লেখার নয় প্রাথমিকে শিক্ষক সংকটে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত
বড়লেখা (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০১:০০ এএম
বড়লেখা উপজেলার নয়টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকটে দেড় হাজার শিক্ষার্থীর পাঠদান কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে। শিক্ষক সংকট নিরসনের আবেদন করা হলেও তা আজও আলোর মুখ দেখেনি। দ্রুত অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও শিক্ষক সংকট দূর করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান নিশ্চিতের দাবি অভিভাবকসহ সচেতন মহলের।
সরকারি নথি অনুযায়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের লক্ষ্য হচ্ছে শিশুর দৈহিক, মানসিক, সামাজিক, আধ্যাত্মিক, নৈতিক, মানবিক ও নান্দনিক বিকাশ সাধন এবং তাদের উন্নত জীবনের স্বপ্ন দর্শনে উদ্বুদ্ধ করা। কিন্তু এই নয়টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে তা যেন অকার্যকর।
চলতি বছর থেকে সব বিদ্যালয়কে এক শিফটে রূপান্তরের সরকারি পরিকল্পনা এবং প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে ধারাবাহিক মূল্যায়ন প্রক্রিয়া চালু হয়েছে যা অত্যন্ত জটিল প্রক্রিয়া উল্লেখ করে শিক্ষকরা জানান, অবকাঠামোগত সমস্যায় থাকা এবং চার শিক্ষক বিশিষ্ট বিদ্যালয়গুলোতে এই প্রক্রিয়া (এক শিফটে বিদ্যালয় পরিচালনা) বাস্তবায়ন প্রায় অসম্ভব।
চাহিদা থেকে কম শিক্ষক নিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা এবং যথাযথ পাঠদান খুবই কষ্টকর বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষকরা। এতে শিক্ষার্থীর লেখাপড়ার ব্যাঘাত ঘটছে। শিক্ষার মান দিনদিন নিম্নগামী হচ্ছে। ৬ কিংবা ৭ পদ বিশিষ্ট বিদ্যালয়ের সঙ্গে এই চার পদের বিদ্যালয়গুলোর পড়ালেখার মানের বিশাল ফারাক। শুধু তাই নয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ ও শিক্ষক সংখ্যা এবং দূরত্ব বিবেচনায় ডাবল শিফটের পরিবর্তে এক শিফট চালুর যে নির্দেশনা সরকার দিয়েছে তাও এখানে বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।
জানা গেছে, উপজেলার নয়টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন থেকে চারজন শিক্ষক দিয়ে পাঠদান চলছে। বিষয়টি সমাধানের জন্য প্রায় এক বছর আগে ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষকরা ও তৎকালীন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, এমপির সুপারিশসহ একটি আবেদন উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মীর আব্দুল্লাহ আল মামুনের কাছে জমা দিতে গেলে তিনি তা গ্রহণ না করে দ্রুত শিক্ষক সংকট সমাধানের আশ্বাস দেন।
বড়লেখা উপজেলায় মোট ১৫১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। তার মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে শিক্ষক সংকট নয়টি বিদ্যালয়ে। সেগুলো হলো উত্তর বাগীরপার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ধর্মদেহী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চান্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর মাইজগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুফিনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভাগাডহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দ্বিতীয়ারদেহী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শ্রীরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও রংপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খোরশেদ আলম জানান, সংকট নিরসনে সরকার কাজ করছে। যেসব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট রয়েছে অগ্রাধিকারভিত্তিতে সেগুলোতে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মীর আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, যেসব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট রয়েছে তার একটি তালিকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। নয়টি বিদ্যালয়ের একটিতে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাকিগুলোর সংকট নিরসনের প্রক্রিয়া চলছে।