সীমান্তের ৩ গ্রাম জনমানবশূন্য
নাইক্ষ্যংছড়ি (বান্দরবান) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:০২ পিএম
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তবর্তী বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি তুমব্রু রাইট ক্যাম্প ও ডেকুবুনিয়া ক্যাম্প এলাকায় বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মি ও মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর সঙ্গে ব্যাপক গুলি বিনিময় ও বোমাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। শনিবার দিবাগত রাত ৩টা থেকে এ রিপোর্ট পাঠানো পর্যন্ত বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তে থেমে থেমে গুলি ও বোমাবর্ষণ চলছে।
সূত্র জানায়, বেশ কয়েকটি গুলি ও মর্টারশেল এসে পড়েছে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে তুমব্রু কোনারপাড়া, মাঝেরপাড়া ও বাজারপাড়ায়। এতে আতঙ্কে ঘর ছেড়েছেন ৩ গ্রামের হাজার মানুষ। গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন দুইজন। এ সময় কোনারপাড়ার কয়েকটি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আহতরা হলেন- কোনারপাড়ার বাসিন্দা প্রবীন্দ্র ধর (৫০) ও রহমা বেগম (৪০)। আহতদের কুতুপালং শরণার্থী শিবিরের হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে বিদ্রোহী গ্রুপের ব্যাপক গোলাগুলির কারণে টিকতে না পেরে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) প্রায় ৫৮ জন সদস্য বাংলাদেশের তুমব্রু বিজিবি ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন।
এছাড়া আরও অসংখ্য বিজিপি সদস্য বাংলাদেশে ঢোকার জন্য অবস্থান নিয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
ঘুমধুম ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানিয়েছেন, মিয়ানমার বিজিপির কিছু সদস্য তুমব্রু সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশ আশ্রয় নিয়েছেন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সীমান্তবর্তী স্কুলগুলো আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড বিজিবি নিরাপত্তা বাড়িয়েছে সীমান্তে। নিরাপত্তা চৌকিগুলোতে সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বিজিবি।
জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন জানিয়েছেন, সীমান্তে যাতে অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য প্রশাসন থেকে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সীমান্তের দিকে নজর রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে সে দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ চলছে। এ সংঘর্ষের জের ধরে গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তেও উত্তেজনা চলছে।
এদিকে বর্তমানে সীমান্তজুড়ে উত্তেজনা বিরাজমান। সীমান্তজুড়ে চলছে আতঙ্ক। মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত হেলিকপ্টার থেকে গোলাবর্ষণ চলছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য দীল মোহাম্মদ জানান, ৩ গ্রামের হাজারও মানুষ গত রাত থেকে বসতবাড়ি ছেড়ে নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছেন। গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি ওই অবস্থায় রেখে ঘরবাড়ি ছেড়েছেন। মালামাল নেওয়ারও সুযোগ হয়নি বলে তিনি জানিয়েছেন।