Logo
Logo
×

সারাদেশ

পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা চলছেই

Icon

আহমেদ মুসা, চট্টগ্রাম

প্রকাশ: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০১:১২ এএম

পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা চলছেই

দেশের বৃহৎ ভোগ্যপণ্যের বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের দামে অস্থিরতা কাটেনি। কোনো কারণ ছাড়াই বাড়ানো হচ্ছে দাম। খুচরা বাজারে দেশি এবং ভারতীয় পেঁয়াজের দাম কেজিতে প্রায় ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। কয়েক দিন আগেও দেশি পেঁয়াজ ৯০ টাকা  কেজি দরে বিক্রি হয়। সেই পেঁয়াজ শুক্রবার ১১০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। অপর দিকে, ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ১২০ টাকা  থেকে বেড়ে ১৩০ টাকায় পৌঁছেছে।

পেঁয়াজের পাশাপাশি বেড়েছে চালের দামও। পেঁয়াজ, চাল ও ডিমের দাম হঠাৎ এত বেড়ে যাওয়ায় অসন্তোষ বেড়েছে ক্রেতাদের মধ্যে। তবে কিছুটা কমতির দিকে শীতকালীন সবজির দাম।

সংশ্লিষ্টরা জানান, তিন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির পরও দেশের বৃহৎ ভোগ্যপণ্যের বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে দাম সহনীয় পর্যায়ে আসছে না। এখনো আগের মতোই অতিরিক্ত দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজের পাশাপাশি বেড়েছে আলুর দামও। পাইকারি বাজারে ভারতীয় ভালোমানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১০০ টাকার বেশি দামে। খুচরা বাজারে আরও ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা অতিরিক্ত দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে দেশি মুড়িকাটা  পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত। পাইকারি বাজারে এই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৮৫ টাকার বেশি দামে।

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানান, ডিসেম্বরের প্রথম থেকে পেঁয়াজের বাজার অস্থির।  ভারত সরকার পেঁয়াজ আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর চট্টগ্রামের আমতানিকারকরা অন্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু করেন। সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে চীন, পাকিস্তান ও মিয়ানমার থেকে। তবে এখন মিয়ানমার থেকে তেমন পেঁয়াজ আসছে না। এখন আসছে চীন ও পাকিস্তান থেকে। তবে এখন ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বেশি। ভালোমানের ভারতীয় পেঁয়াজ পাইকারি বাজারে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকার বেশি। আর চীন থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা থেকে ৮০ টাকা। পাকিস্তান থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রায় একই দামে। কিন্তু খুচরা বাজারে কেজিতে আরও অতিরিক্ত ১২ টাকা থেকে ১৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে ভারতের পাইকারি ও খুচরা বাজারে গড়ে ৩০ শতাংশ কমেছে পেঁয়াজের দাম। তাই রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে পারে  দেশটির সরকার। গত মাসে এক সরকারি কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে এমন তথ্য দিয়েছে ইকোনমিক টাইমস।

গত ৮ ডিসেম্বর ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তখন বলা হয়েছিল, রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত থাকবে। এতে বাংলাদেশে পণ্যটির দাম প্রতি কেজি ২০০ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এরপর দেশীয় উৎপাদনের পেঁয়াজ বাজারে এলে দাম কিছুটা কমে আসে। কিন্তু যেভাবে  বেড়েছিল, সেভাবে কমেনি।

শুক্রবার খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা যায়, ভারতীয় পেঁয়াজ কম থাকলেও দেশি, পাকিস্তান ও চীনা পেঁয়াজ গুদামে ভর্তি। ক্রেতা সংখ্যা আগের চেয়ে অনেকটা কমে গেছে। অনেকে গুদাম থেকে পেঁয়াজের বস্তা ফুটপাতেও থরে থরে সাজিয়ে রাখছেন। আগে ক্রেতাদের কোলাহল থাকলেও এখন আগের মতো ক্রেতা নেই বললেই চলে। পেঁয়াজ বিক্রি অর্ধেকে নেমে এসেছে। অন্যান্য দিন শ্রমিকদের কর্মব্যস্ততা থাকলে কয়েক দিন ধরে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজকেন্দ্রিক ব্যবসা অনেকটা কমে গেছে। ভারত থেকে আমদানি করা কিছু পেঁয়াজ রয়েছে।

এদিকে বাজারে নতুন রসুনের সরবরাহ বাড়ায় দাম কিছুটা কমেছে। আমদানি করা রসুন প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগেও ছিল ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা। তবে পুরোনো দেশি রসুন কেজি ২৪০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে দেশি নতুন রসুন কেজি ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। ডিমের বাজারে আবার নতুন করে অস্থিরতা শুরু হয়েছে। ফার্মের ডিম ডজনে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বেড়েছে চালের দামও। চলছে আমনের ভরা মৌসুম। এর পরও লাফিয়ে বাড়ছে চালের দাম। চালের পাইকারি বাজারখ্যাত চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ ও পাহাড়াতলী বাজারে প্রতি বস্তা চালের দাম বেড়েছে ২০০ টাকা থেকে সাড়ে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। কেজিপ্রতি ৬০ টাকার নিচে কোনো চালই পাওয়া যাচ্ছে না। মিলাররা সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাইকারদের। বর্তমানে চালের দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই বলেও জানান তারা।

বাজারদর : বাজারে সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় কিছুটা কমেছে  দাম। বেগুন মানভেদে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, টমেটো ৫০ টাকা, শিম মানভেদে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতিটি ৫০ টাকা, লম্বা লাউ আকারভেদে প্রতিটি ৭০ থেকে ১০০ টাকা। কাঁচামরিচ ৬০ থেকে ৭০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, করলা ৯০ থেকে ১০০ টাকা ও আলু  কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগি প্রতি  কেজি ১৮০ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৯০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৯০ টাকা ও সোনালি মুরগি ৩০০ থেকে ৩১০ টাকায় বিক্রি হয়।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম