বন্ধ হলো ভেড়ামারা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র
ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ জানুয়ারি ২০২৪, ১০:২২ পিএম
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় ৬০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৩নং ইউনিটও অবশেষে বন্ধ করে দিল সরকার। মেয়াদোত্তীর্ণ আর ব্যয়বহুল প্ল্যান্টের ৩টি ইউনিটের মধ্যে ১ ও ২নং ইউনিটটি গত ৪ বছর আগেই পুরোপুরি বন্ধ করা হয়েছিল। প্ল্যান্ট বন্ধ এবং ৩নং ইউনিটটি উৎপাদনে না থাকলেও ‘গত ৪ বছরে ৪০ কোটি টাকা ব্যয়’ শিরোনামে গত ১৭ জানুয়ারি দৈনিক যুগান্তরে সংবাদ প্রকাশিত হলে ওই দিনই বিকালে ৩নং ইউনিটটিও পুরোপুরি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
সূত্র জানায়, ১৯৭৬ সালে প্রথম উৎপাদনে আসে ভেড়ামারার ঐতিহ্যবাহী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। সেই সময় ২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি ইউনিট থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো। চাহিদার প্রতি লক্ষ্য রেখে ১৯৮০ সালে আরও একটি বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট এখানে নির্মাণ করা হয়। তখন থেকেই এটি ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন প্ল্যান্ট হিসেবে পরিচিত। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ছাড়াও উত্তরাঞ্চলে বিদ্যুতের সীমাহীন লোডশেডিং ও লো-ভোল্টেজ কাটিয়ে উঠার ক্ষেত্রে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছিল।
কিন্তু অধিক বয়সি মেয়াদোত্তীর্ণ, জরাজীর্ণ আর মান্ধাতা আমলের খুব ব্যয়বহুল এ প্ল্যান্টটি গত চার বছর আগেই বন্ধ করে দেয় সরকার। সচল কিন্তু উৎপাদনে নেই ৩নং ইউনিটটি। অধিক সমস্যায় এ ইউনিটটি বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে- এমন ভাবনাতেই এখনো প্রস্তুত রাখা হয়েছিল ৩নং ইউনিটটি। ঘণ্টায় সাড়ে ৬ হাজার লিটার তেল গ্রাস করে নেওয়া এ ইউনিটটি ঘণ্টায় ১৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষমতা ছিল। ইউনিটটি ৯১ দিন চালানোর সক্ষমতা নিয়ে ৩৩ লাখ লিটার তেল মজুত করে রাখা হয়েছিল। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ থাকলেও কেন্দ্রটি রক্ষণাবেক্ষণ, পরিচালনা এবং অন্যান্য ব্যয় পরিচালনা করতে প্রতি বছরই মোটা অংকের টাকা খরচ হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যে টাকা এখন ব্যয় করা হচ্ছে, সেই টাকা দিয়েই একটি নতুন প্ল্যান্ট পরিচালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণ সম্ভব। সূত্র জানায়, ২০২০ সালে ১৩ কোটি, ২০২১ সালে ১২ কোটি, ২০২২ সালে সাড়ে ৮ কোটি, ২০২৩ সালে সাড়ে ৬ কোটি টাকাসহ মোট ৪০ কোটি টাকা ইতোমধ্যে ব্যয় হয়ে গেছে।
ভেড়ামারা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উপ-ব্যবস্থাপক (নির্বাহী প্রকৌশলী) মো. আসাদুজ্জামান জানান, জরাজীর্ণ এ প্ল্যান্টটি চার বছর আগেই ১ ও ২নং ইউনিটটি পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছিল সরকার। সচল ছিল ৩নং ইউনিটটি (উৎপাদনে নেই); যা আগামী ২৫ সালে বন্ধের তালিকায় ছিল; কিন্তু হঠাৎ করেই ৩নং ইউনিটটিও দ্রুত বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ৭০ জন কর্মকর্তা এ প্ল্যান্টে কর্মরত থাকলেও তাদের বদলি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।