প্রচণ্ড শীতে টাঙ্গাইলে ডায়রিয়ার প্রকোপ
জাফর আহমেদ, টাঙ্গাইল
প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১১:১০ পিএম
টাঙ্গাইলে এক সপ্তাহের উত্তরের বাতাসে তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। এতে প্রচণ্ড শীতে জবুথুবু হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। শিশু ও বৃদ্ধরা ডায়ারিয়া আক্রান্ত হচ্ছে। শহর থেকে গ্রামপর্যন্ত ছড়িয়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। আক্রান্তরা কেউ কেউ বাড়িতেই প্রাথমিক চিকিৎসা নিচ্ছেন। আবার অনেকেই জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এছাড়াও অনেকেই ঠাণ্ডা, জ্বর ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। বাড়তি রোগীর চাপে সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের।
মঙ্গলবার সরেজমিন টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, ডায়ারিয়া ওয়ার্ডে ১২ আসনের বিপরীতে দুপুর পর্যন্ত ভর্তি রয়েছেন ৯৩ জন। এদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যা বেশি। এক আসনে গাদাগাদি করে দুইজন চিকিৎসা নিচ্ছেন। আবার অনেকেই মেঝেতে অবস্থান করে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
নাগরপুর থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রুমিয়া খাতুন বলেন, আমার দেড় বছরের নাতি তিন দিন ধরে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। সোমবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। তবে সিট না পেয়ে বারান্দার মেঝে অবস্থান করছি। এই ঠাণ্ডায় দিনের চেয়ের রাতে বেশি কষ্ট হয়। এছাড়াও বেশির ভাগ ওষুধ বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়।
সদর উপজেলার করটিয়া থেকে আসা মেঘনা আক্তার বলেন, আমার মেয়েকে দুই দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। ওয়ার্ডে পা ফেলার মতো কোনো জায়গা নাই। মেঝেতে থেকে আমাদের আরও কষ্ট হচ্ছে। এছাড়াও ওয়ালের পাশের ড্রেন থেকে দুর্গন্ধ আসছে। সব ওষুধ হাসপাতাল থেকে দিলে ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা সরকারি খরচে হাসপাতালে থেকে করতে পারলে আমাদের মতো সাধারণ রোগীদের অনেক উপকার হতো।
রফিক মিয়া বলেন, আমার তিন বছরের ছেলে সাত দিন ধরে ঠাণ্ডা জ্বরে আক্রান্ত। পাঁচ দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আগের চেয়ে অনেকটা সুস্থ হয়েছে।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের উপপরিচালক খন্দকার সাদিকুর রহমান বলেন, হাসপাতালটি ২৫০ শয্যার হলেও সব সময় পাঁচ শতাধিক রোগী ভর্তি থাকে। গত ১৬ দিনে ডায়ারিয়া ওয়ার্ডে ৬৭৮ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। অনেক ওষুধ আমাদের সাপ্লাই নাই। সেগুলো বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতাল প্রতিনিয়ত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা হয়। ডায়রিয়ার হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে বার বার সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে। এছাড়াও মুখে মাস্ক ব্যবহার করার পরামর্শ দেন তিনি।